পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
এস কে সাত্তার. ঝিনাইগাতী (শেরপুর) ঃ ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে নকল প্রসাধনীতে ভরে গেছে ঝিনাইগাতী। উপজেলা সদরের ভেতর বাজার থেকে শুরু করে বড় বড় দোকানে পর্যন্ত সাজিয়ে রাখা হয়েছে নামী-দামি ব্র্যান্ডের কসমেটিকসহ নানা প্রসাধনী।
জানা যায়, লোভনীয় অফার আর সস্তায় পাওয়া যাচ্ছে এসব নকল প্রসাধনী, তাই হুমড়ি খেয়ে পড়ছে গ্রাহকরা। পক্ষান্তরে উপজেলা সদরের প্রসিদ্ধ দোকান আতিক স্টেশনারি অ্যান্ড কনফেকশনারি, বনফুল, পাঠান স্টোরসহ বড় বড় দোকানগুলো আসল এবং দামি জিনিস বিক্রি করতে গিয়ে লাভ তো দূরের কথা বোঝাতেই পারছেন না যে কোনটা আসল আর কোনটা নকল। ফলে আসল প্রসাধনী নিয়ে বসে থাকা ব্যবসায়ীদের পুঁজি ভেঙে ভেঙে খরচ করতে হচ্ছে বলে জানা যায়। উল্লেখ্য যে, ভেতর বাজারসহ দুই নম্বরী দোকানগুলোতে থরে থরে সাজিয়ে রাখা নানা প্রসাধনী কিনে রীতিমতো প্রতিনিয়ত প্রতারিত হচ্ছে এলাকার সহজ-সরল হাজার হাজার মানুষ। অথচ নেই কোনো প্রতিরোধ-প্রতিকার। শীত এবং বিশেষ দিনকেন্দ্রিক আনা এসব প্রসাধনসামগ্রীর বাজার দখল এবং দাপটে কারো বোঝার উপায় থাকে না যে, এগুলো নকল। সবই নামী-দামি ব্র্যান্ডের নকল কসমেটিকস আইটেম। কিন্তু কিনে নিয়ে বাসায় যাওয়ার পর চিসিং ফাঁক! সান্দার পট্টি, ভেতর বাজার থেকে কিছু কিছু ডিপার্টমেন্টাল স্টোর সবখানেই যেন বিস্তার নকল প্রসাধনসামগ্রীর, যা কি না দেখে কারো বোঝার উপায় নেই, এগুলো নকল। সবই নামী-দামি ব্র্যান্ডের কসমেটিকস আইমের হুবহু নকল। এসব কিনে নিয়ে বাড়ি গিয়ে অনেকেরই পড়ছে মাথায় হাত।
আবার বিদেশী নামী-দামি ব্র্যান্ডের কসমেটিকস মেলে কোনো কোনো ডিপার্টমেন্টাল স্টোরে। কিন্তু মেয়াদোত্তীর্ণ। সস্তায় এসব নকল প্রসাধনী কিনে সাধারণ মানুষ যেমন হচ্ছে প্রতারিত তেমনই হচ্ছে আর্থিকভাবে চরম ক্ষতিগ্রস্ত এবং এগুলো ব্যবহার করে বাড়ছে শরীরে চর্মরোগের নানাবিধ ঝুঁকি।
জানা যায়, এসব নামী-দামি ব্র্যান্ডের নকল প্রসাধনী ঢাকা অথবা অন্যত্র তৈরি করে তা অবাধে বাজারজাত করা হচ্ছে। শুধু যে ঢাকায় তা নয়, এসব নকল প্রসাধনসামগ্রী তৈরির কারখানা রয়েছে দেশের অন্যান্য স্থানে বলেও জানা যায়। পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে অবাধে চালিয়ে যাচ্ছে অবৈধ নকল প্রসাধনসামগ্রীর ব্যবসা। এরা পারফিউম, টেলকম পাওডার, সুগন্ধি কেশ তেল, বিউটি ক্রিম, স্যাম্পু, কন্ডিশনার, সেভিং ফোম, সেভিং লোশন বা ক্রিমসহ বিভিন্ন প্রসাধনী তৈরি করে বাজারজাত ও অবাধে বিক্রি করছে বলেও জানা যায়। জানা যায়, ঢাকার বিভিন্ন পারফিউমারি দোকান থেকে কেমিক্যাল সংগ্রহ করে এসব প্রসাধনী তৈরি করা হচ্ছে। স্যাম্পু তৈরিতে ব্যবহার হয় সাবান পানি, কেমিক্যাল এবং পারফিউম। বিভিন্ন সাবান কারখানা থেকে উচ্ছিষ্ট বা নি¤œমানের সাবান পানি সংগ্রহ করে পারফিউমের সাথে মিশিয়ে স্যাম্পু তৈরি করা হয়। পরে নামী-দামি ব্র্যান্ডের স্যাম্পুর খালি বোতল সংগ্রহ করে অথবা নামী-দামি ব্র্যান্ডের লেবেল লাগিয়ে বোতলজাত করে বাজারে ছাড়া হয়।
শুধু তাই নয়, অনেক ক্ষেত্রে নাকি নামী-দামি ব্র্যান্ডের মেয়দোত্তীর্ণ স্যাম্পু সংগ্রহ করে তাতে আরো সাবান পানি এবং কেমিক্যাল মিশিয়ে স্যাম্পু তৈরি করা হচ্ছে। যা দেখে কারো বোঝার উপায় নেই যে, এটি আসল, নাকি নকল। একইভাবে স্পিরিট ও সুগন্ধি কেমিক্যাল মিশিয়ে তৈরি হচ্ছে পারফিউম, যা পরে বিশেষ কায়দায় নামী-দামি ব্র্যান্ডের বোতলজাত করে বাজারে বিক্রি করা হচ্ছে। বিশেষ দিনকে সামনে রেখে নকল সুগন্ধি তেল, সেভিং লোসন তৈরিতেও একই পদ্ধতি ব্যবহার করা হচ্ছে বলেও জানা যায়। ভেজাল প্রসাধনসামগ্রী বিভিন্ন হাট-বাজার বা বিপণিবিতানের আশপাশে ফুটপাথে অবাধে বিক্রি হচ্ছে এসব নকল প্রসাধনী। তাছাড়া বিভিন্ন গ্রামাঞ্চলে গিয়ে ফেরিওয়ালারা ঘুরে ঘুরে বিক্রি করছে বাসা-বাড়িতে। মহিলারা এসব নকল প্রসাধনসামগ্রী বেশি দামে কিনে সবচে বেশি প্রতারিত হচ্ছে বলেও জানা যায়। জানা যায়, কোনো কোনো নামকরা মার্কেট ও বিপণিবিতানেও বিক্রি হচ্ছে এসব নকল প্রসাধনসামগ্রী। ফলে সাধারণ মানুষ যে শুধু প্রতারিত হচ্ছে তা নয়, হচ্ছে অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত এবং আক্রান্ত হচ্ছে নানা কঠিন ও জটিল চর্মরোগে।
নাম প্রকাশ না করার শর্ত বেঁধে দিয়ে একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার জানান, নকল প্রসাধনসামগ্রীতে যেসব কেমিক্যাল ব্যবহার করা হচ্ছে তা মাত্রাতিরিক্ত এবং কোনো রকম পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়াই। ফলে এসব ব্যবহারে এলার্জি, ক্ষত, কিলয়েড (চামড়া কালো হয়ে যাওয়া) একজিমা ইত্যাদি রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এমনকি দীর্ঘদিন নকল কসমেটিক ব্যবহারে স্কিন ক্যান্সারেরও প্রচ- ঝুঁকি রয়েছে বলে তিনি জানান।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।