পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
মেডিকেল বোর্ডের রিপোর্টে বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের সত্যিকার অবস্থা দেশের মানুষ জানতে পারবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ৫ তারিখে রিপোর্ট চেয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট। আমরা সারা বাংলাদেশের মানুষ এই প্রত্যাশা করি পিজির (বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতাল) চিকিৎসকরা যারা মেডিকেল বোর্ডের দায়িত্বে আছেন তারা সত্য কথাটা বলবেন। আমরা অন্য কোনো কিছু চাই না। উই ওয়ান্ট দ্যা ট্রুথ। অমানবিকতা-প্রতিহিংসার একটা সীমা থাকে। সব সীমা ছাড়িয়ে গেছে।
গতকাল (শনিবার) জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘বাংলাদেশ ন্যাশনাল পিপলস পার্টির উদ্যোগে ‘বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ সকল রাজবন্দির মুক্তি ও সমসাময়িক রাজনীতি’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
খালেদা জিয়ার অসুস্থতার প্রসঙ্গ টেনে মির্জা ফখরুল বলেন, তার স্বাস্থ্যের অবস্থা এত ভয়ঙ্কর, এত ভয়াবহ যে এই মুহূর্তে তাকে বের করে উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা দরকার। শুক্রবার একজন ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলছিলাম। তিনি জানালেন, যে ড্যামেজ তাঁর হচ্ছে, সেটা আর ফিরে আসবে না। তার বাঁ হাত বাঁ সাইটটা প্যারালাইজড। কারও সাহায্য ছাড়া তিনি বিছানা থেকে উঠতে পারেন না। অথচ তাদের সরকারি কর্মকর্তা পিজি’র পরিচালক বলছেন, তিনি ভালো আছেন, আগের চেয়ে এখন ভালো। ধিক্কার দেই আমি জ্ঞানহীন এই মানুষদের। যারা সত্যকে গোপন করে, তাদের এখানে থাকার অধিকার নেই।
সরকারের মন্ত্রীদের হুমকি ‘একক জমিদারী’ মনোভাবের বর্হিপ্রকাশ হিসেবে উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, কয়েকদিন ধরে আওয়ামী লীগের মন্ত্রীরা হুমকি দেয়া শুরু করেছেন- এই ধরনের কর্মসূচি মেনে নেয়া হবে না, সমচিত জবাব দেয়া হবে। এই হুমকি-ধামকি দিয়েই তো সারাজীবন চললেন। এরা কাউকে সহ্য করতে চায় না। তাদের মানকিকতার মধ্যে আছে- একটা জমিদারী মনোভাব। আমি সব, আমি ছাড়া আর কেউ নেই।
বিএনপি ও তাদের জোটসঙ্গীরা সন্ত্রাসে বিশ্বাস করেনা মন্তব্য করে তিনি বলেন, আমরা কখনোই সন্ত্রাসে বিশ্বাস করি না। আমরা একটা লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি, আমাদের ২০দলীয় জোট ও ঐক্যফ্রন্ট কখনোই সন্ত্রাসে বিশ্বাস করেনা। আমরা গণতান্ত্রিক উপায়ে রাজনীতি করতে চাই, গণতান্ত্রিক উপায়ে সরকারের পরিবর্তন চাই। মির্জা ফখরুল বলেন, সন্ত্রাসী তো এই সরকার। তারা সেই পথে বাঁধার সৃষ্টি করছে। গত নির্বাচনে তারা বাঁধার সৃষ্টি করে জনগণের অধিকার ছিনিয়ে নিয়ে গেছে এবং এখন সন্ত্রাস করে, জোর করে মানুষকে দাবিয়ে রেখে তারা ক্ষমতায় টিকে থাকতে চায়।
তিনি বলেন, এখনো বলি, দেওয়ালের লিখনগুলো পড়ুন। আমার মনে হয়, যদি কোনো শাসক দেওয়ালের লিখন পড়তো, মানুষের চোখের ভাষা বুঝতো, মানুষের কথাগুলো বুঝার চেষ্টা করতো তাহলে তারা এভাবে এতো অমানুষ হতে পারতো না।
দেশে কোন সরকার আছে কিনা সে প্রশ্ন রেখে বিএনপি মহাসচিব বলেন, কোথাও কোনো জবাবদিহিতা নেই। যার যা খুশি করছে। ৭‘শ টাকার বালিশ ৭ হাজার টাকা কিনে, আড়াই হাজার টাকার পর্দা ২৭ লাখ টাকা দিয়ে কিনে। বিভিন্ন ডিপার্টমেন্টের কর্মকর্তারা যিনি কয়েদিন পরে অবসরে যাবেন তিনিও বিদেশ সফরে আমেরিকা, ইউকে যাচ্ছেন। কী জন্যে? খাল খনন দেখতে।
তিনি বলেন, আমরা কোথাও সভা করতে চাইলে অনুমতি পাবো না, সোহরাওয়ার্দিতে অনুমতি দেবে না। আর দেখেন আওয়ামী লীগের একেবারে এতটুকু সংগঠন মৎস্যজীবী, পেশাজীবীর সভা চলছে সব সোহরাওয়ার্দিতে। কোটি কোটি টাকা খরচ করে মাসব্যাপী সভা চলছে। আমরা যাতে যেতে না পারি সেটার ব্যবস্থা করেছে। এখন তো চলছে উৎসব। আগামীতে জন্মোৎসব হবে, তারপরে আরো কিছু হবে। গোটা পৃথিবী জুড়ে হচ্ছে বাংলাদেশের উৎসব। কার টাকায় করছেন? এসব পাবলিক মানি।
দাম নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে মকারি করা হচ্ছে অভিযোগ করে বিএনপির অন্যতম এই শীর্ষ নেতা বলেন, পেঁয়াজের দাম ২৪০ টাকা। লবণের দাম বাড়লো, লবন তো আছে যথেষ্ট। চালের দাম বেড়েছে। আমাদের খাদ্যমন্ত্রী বলেছেন যে, সরু চালের ওপর এখন চাপ বেশি পড়েছে। মানুষ এখন সরু চাল খায়। মকারি, পরিহাস বাংলাদেশের মানুষকে নিয়ে। তিনি বলেন, এই মিথ্যাচার, দাম্ভিকতা, অনাচার করে কোনো দিন জনগণের ভালোবাসা নিয়ে টিকে থাকা যায় না। এই সরকার একটা দখলদারী সরকার। পাক হানাদার বাহিনীর সাথে এদের ডিফারেন্সটা কোথায় আমি ঠিক বুঝতে পারি না। পাক হানাদার বাহিনী যে কাজগুলো করেছেন এরা একই কাজ করছে ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য, একই অবস্থা।
ভারতের পুশ ব্যাক প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ভারত যে নাগরিক পুঞ্জি করেছে যেখানে যাদের নাম নেই তাদেরকে বলা হচ্ছে অবৈধ অভিবাসী। তাদের দায়িত্বশীল মন্ত্রীরা বলছে যে, তারা অবৈধ বাংলাদেশী এবং তাদের বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হবে। এটা যখন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছে তারা বললেন যে, না না এটা ঠিক তাই নয়। ভারতের অভ্যন্তরীন ব্যাপার- এটা নিয়ে চিন্তা করার আমাদের কিছু নাই। এই দেখতে দেখতে দরজা কাছে একেবারে বর্ডারের কাছে এসে গেছে। পুশ ব্যাক যদি করা হয়ে থাকে তা হবে আমাদের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব বিপন্ন করার জন্যই করা।
বিএনপির এই নেতা বলেন, এই প্রেস ক্লাবের শীতাতাপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষে বক্তব্য রেখে হবে না। আমি আমাদের শরিক দলগুলোকে বলছি, গ্রামে গ্রামে যান, বাজারে বাজারে যান, মহল্লায় মহল্লায় যান, এই কাজগুলো করেন। কথাগুলো মানুষকে বলেন, মানুষকে সংগঠিত করার চেষ্টা করেন। এখন সময় হচ্ছে ঐক্যের। গোটা জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে সরকারের দুঃশাসনের বিরুদ্ধে, এই একনায়কের বিরুদ্ধে, এই ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে। আমাদের কাজ হচ্ছে- জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করে এই স্বৈরাচারের, এই দুরাচারের বিরুদ্ধে লড়াই করা।
সংগঠনের সভাপতি অ্যাডভোকেট ফরিদুজ্জামান ফরহাদের সভাপতিত্বে ও মহাসচিব মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফার সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, বিএনপির নিতাই রায় চৌধুরী, শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, লেবার পার্টির মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, বিকল্পধারার অধ্যাপক নুরুল আমিন ব্যাপারী, শাহ আহমেদ বাদল, জাগপার খোন্দকার লুৎফর রহমান, আসাদুর রহমান খান প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।#
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।