Inqilab Logo

শনিবার, ২৯ জুন ২০২৪, ১৫ আষাঢ় ১৪৩১, ২২ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

আজ বক্তাবলী দিবস

জামালউদ্দিন বারী | প্রকাশের সময় : ৩০ নভেম্বর, ২০১৯, ১২:০২ এএম

আজ ২৯ নভেম্বর। একাত্তরের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের হৃদয় বিদারক স্মৃতিবহ দিন। নয় মাসের স্বাধীনতাযুদ্ধের শেষ প্রান্তে এসে এদিন তৎকালীন ঢাকা জেলার নারায়ণগঞ্জ মহকুমার বক্তাবলী পরগনায় পাক হানাদার বাহিনী ভয়ঙ্কর গণহত্যা সঙ্ঘটিত করে।
ফতুল্লা থানার বক্তাবলী, গোগনগর, কাশিপুর ইউনিয়ন, নারায়ণগঞ্জ সদর থানার আলীরটেক ইউনিয়ন এবং মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান থানার খাসমহল বালুচর ইউনিয়নের অংশ বিশেষ নিয়ে বক্তাবলী পরগনা গঠিত। বুড়িগঙ্গা ও ধলেশ্বরী নদীবেষ্টিত বক্তাবলী পরগানা স্বাধীনতাযুদ্ধের সাড়ে ৮ মাসই ঢাকার সবচে নিকটবর্তী মুক্তাঞ্চল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত ছিল। মুক্তিযুদ্ধে ২ নম্বর সেক্টরের ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ শহরের মুক্তিযোদ্ধাদের গুরুত্বপূর্ণ প্রশিক্ষণকেন্দ্র এবং কৌশলগত এলাকা হিসেবে বক্তাবলী অসামান্য ভূমিকা পালন করেছিল।

২৯ নভেম্বরে শীতের কুয়াশাঢাকা ভোরে অনেকগুলো গানবোটে চেপে বক্তাবলী ও আলীরটেক ইউনিয়নকে তিনদিক থেকে ঘিরে ফেলে পাক হানাদার বাহিনী। এলোপাতাড়ি গুলি এবং নদী তীরে সারিবদ্ধ করে ব্রাশফায়ারে একদিনে বক্তাবলীর ১৩৯ জন নিরস্ত্র মানুষ নিহত হয়। প্রায় ১০টি গ্রামের অনেক বাড়িঘরে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়।
বক্তাবলী দিবস উপলক্ষে বক্তাবলীর বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে শোকর‌্যালি, কবর জিয়ারত, কোরানখানি এবং স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হবে। সকালে কানাইনগর ছোবহানিয়া উচ্চবিদ্যালয় প্রাঙ্গণে অবস্থিত বক্তাবলী শহীদ দিবসের স্মৃতি স্তম্ভে পুষ্পস্তব অপর্ণ ও দোয়া মুনাজাতের আয়োজন করেছে বিভিন্ন সংগঠন। কানাইনগর ছোবহানিয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজ, বক্তাবলী ইসলামিয়া সিনিয়র মাদরাসা, মুক্তারকান্দি উচ্চবিদ্যালয়সহ বক্তাবলীর বিভিন্ন শিক্ষা ও সামাজিক প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি বক্তাবলী ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে আজ সকালে শোকর‌্যালি এবং স্মৃতিস্তম্ভ প্রাঙ্গণে দোয়া মুনাজাত এবং শহীদ পরিবারের প্রতি সম্মাননা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।

গত কয়েক বছর ধরে বক্তাবলী দিবস উপলক্ষে বক্তাবলীর নতুন প্রজন্ম সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক প্রচারনায় মুখর করে তোলতে দেখা গেছে। মহান স্বাধীনতাযুদ্ধে শত শহীদের রক্ষে রঞ্জিত বক্তাবলী আজো নানাভাবে অবহেলিত ও পশ্চাৎপদ জনপদ হিসেবেই রয়ে গেছে। প্রতি বছরের মত এবারো বক্তাবলী দিবসের সমাবেশগুলোতে নানা দাবি তুলে ধরা হবে বলে বিভিন্ন সংগঠনের আয়োজকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। তবে বাস্তবতা হচ্ছে, বক্তাবলীর মানুষ এখনো কাঙ্খিত উন্নয়ন ও নাগরিক অধিকার থেকে বঞ্চিত।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বক্তাবলী দিবস

৩০ নভেম্বর, ২০১৯
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ