Inqilab Logo

সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ত্যক্ত-বিরক্ত স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা গণ-ধোলাই দিল এএসআইকে

প্রকাশের সময় : ২৩ জুন, ২০১৬, ১২:০০ এএম

নারায়ণগঞ্জ থেকে স্টাফ রিপোর্টার : এক জুয়েলারী ব্যবসায়ীকে চোরাই স্বর্ণ ক্রেতা বানাতে গিয়ে গণপিটুনীর শিকার হলেন সদর মডেল থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক আশরাফ। এসময় পুলিশের এহেন কর্মকা-ের প্রতিবাদে স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা দোকান বন্ধ রেখে সড়ক অবরোধ করে রাখে। পরে সংবাদ পেয়ে গণপিটুনীর শিকার এএসআই ও তার সোর্স লিটনকে জনরোষের কবল থেকে উদ্ধার করে নিয়ে যায় ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল মালেক। গতকাল বুধবার সকালে শহরের কালীরবাজার স্বর্ণপট্টী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
কালীরবাজার জুয়েলারী ব্যবসায়ীরা জানান, বুধবার সদর থানার সহকারী দারোগা আশরাফ তার সোর্স লিটনকে পাঠায় একটি ছিঁড়া চেইন বিক্রি করতে। কালীরবাজার স্বর্ণপট্টিতে নওয়াব প্লাজার দ্বিতীয় তলায় পা-ব রায়ের মালিকানাধীন ‘মা তাঁরা’ ষ্টোরে গিয়ে লিটন সেই চেইন বিক্রি করতে চাইলে দোকানদার কিনতে অস্বীকৃতি জানায়। তখন এএসআই আশরাফ সাদা পোশাকে গিয়ে লিটনকে গ্রেফতার করতে চাইলে সকল ব্যবসায়ী একসাথে দোকান থেকে বের হয়ে আসে এবং দারোগা আশরাফ ও লিটনকে মার্কেটের দোতলায় অবরুদ্ধ করে রাখে। এরমধ্যে মার্কেটের সকল ব্যবসায়ী দোকান বন্ধ রেখে রাস্তায় পুলিশের শাস্তির দাবীতে মিছিল করতে থাকে। এমতাবস্থায় এএসআই আশরাফ তার কথিত ছিনতাইকারী লিটনকে নিয়ে বের হয়ে যেতে চাইলে উত্তেজিত জনতা আশরাফ ও লিটনকে গণপিটুনী দেয়। জনরোষ থেকে বাঁচতে আশরাফ লিটনকে নিয়ে পুনরায় দোতলায় আশ্রয় নেয়। এর কিছুক্ষণ পর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল মালেক অতিরিক্ত ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে চেষ্টা করেন। তিনি তার পুলিশ বাহিনী দিয়ে আশরাফ ও লিটনকে পুলিশ ভ্যানে উঠানোর সময়ও জনতা তাদের গণধোলাই দিতে থাকে। গণপিটুনী খেতে খেতেই তারা থানার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়। ব্যবসায়ীরা আরো অভিযোগ করে বলেন, পুলিশ প্রায়ই নিজেদের লোকদের আমাদের এখানে আগে চোরাই স্বর্ণ বিক্রি করতে পাঠায়। কোন দোকানদার সেই স্বর্ণ কিনলে তাকেসহ বিক্রেতাকে থানায় ধরে নিয়ে যায় এবং ৫০ হাজার/১ লাখ টাকা নিয়ে ছেড়ে দেয়। আমরা নিরীহ ব্যবসায়ীরা সদর থানার পুলিশের হাতে জিম্মি হয়ে গেছি। পুলিশের এ ধরনের অনৈতিক কার্যক্রমে ফুঁসে উঠেছে কালীরবাজারের স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা। দিনের পর দিন পুলিশের অত্যাচার সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছে বলে জানায় তারা। আর তাই আজ তারা সবাই রাস্তায় নেমে এসেছেন। তারা সকলে পুলিশের প্রতারণার জাল থেকে অসহায় ব্যবসায়ীদের উদ্ধারের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। প্রায় দুই ঘন্টা পর তারা রাস্তা অবরোধ তুলে নেয়। কিন্তু এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষী পুলিশ সদস্য আশরাফের উপযুক্ত বিচার না হলে তারা আবার রাজপথে নামার ঘোষণা দেয়। ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল মালেক বলেন, আমরা বিষয়টি তদন্ত করে দেখবো। পুলিশ জড়িত থাকলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে কালীরবাজার জুয়েলারী ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি অরুণ কুমার দত্ত ও সাধারণ সম্পাদক গোপাল কুমার রায় উল্টো পুলিশের পক্ষ নিয়ে বলেন, এটা ভুল বুঝাবুঝি হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ত্যক্ত-বিরক্ত স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা গণ-ধোলাই দিল এএসআইকে
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ