পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
নূরুল ইসলাম : ভারত থেকে আনা এলএইচবি কোচ নিয়ে সমালোচনা থামছেই না। এলএইচবি রঙ, ফিনিশিং, সরু আসন, অপরিসর নামাজের জায়গা ইত্যাদি নিয়ে সমালোচনা চলছেই। আগামী ২৫ জুন এই কোচ দিয়ে ঢাকা-রাজশাহী রুটের তিনটি ট্রেন চলবে। এগুলো হলো সিল্কসিটি, পদ্মা ও ধূমকেতু। এই রুটে নতুন ট্রেন চালু করার কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত তা হচ্ছে না। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে ২৫ জুন প্রধানমন্ত্রী একই সাথে ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটের নতুন ট্রেন সোনার বাংলা ও ভারত থেকে আনা এলএইচবি কোচের উদ্বোধন করবেন। বর্তমানে এলএইচবি কোচগুলো ঈশ্বরদিতে অবস্থান করছে। সেখানে ইলেকট্রিক ফিটিংসের কাজ চলছে। একই সাথে চলছে ধোয়া মোছার কাজও। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, কোচগুলোতে বৈদ্যুতিক কিছু ত্রুটি-বিচ্যুতি এখনও আছে। সেগুলো মেরামতের কাজ করছেন ভারতীয় এক টেকনিশিয়ান। তাকে সহযোগিতা করছেন রেলওয়ের কয়েকজন। বিশেষজ্ঞদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, জার্মানীর বিখ্যাত ব্রান্ডের নাম লিঙ্ক হোপম্যান বুশ। সংক্ষেপে এলএইচবি। ১৯৯৮ সালে জার্মানী এই বিশেষ প্রযুক্তির মাধ্যমে ট্রেনের কোচ তৈরী করে সারা বিশ্বে খ্যাতি অর্জন করে। সেই থেকে এটি নামকরা ব্রান্ডে পরিণত হয়। ২০০০ সালে ভারত প্যাসেঞ্জার কোচে এই প্রযুক্তি ব্যবহার শুরু করে। সে সময় ভারত ২৪টি এলএইচবি কোচ জার্মানী থেকে আমদানী করে ‘শতাব্দি এক্সপ্রেস’ নামে একটি দ্রুতগামী ট্রেন চালু করে। বর্তমানে ভারত জার্মানী থেকে এই প্রযুক্তি কিনে নিয়ে ব্যাপক হারে উৎপাদন করার নিমিত্তে বিশাল প্রজেক্ট হাতে নিয়েছে। এরই অংশ হিসেবে তারা পাঞ্জাবের কাপুরথালা ফ্যাক্টরীতে এলএইচবি কোচ তৈরী করে বিভিন্ন দেশে রফতানী করছে। এলএইচবি কোচের ট্রেন ১৬০ কিলোমিটার থেকে ২০০ কিলোমিটার গতিতে চলতে সক্ষম। ভারত এই কোচ দিয়ে বর্তমানে ১৬০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন পরিচালনা করছে। এই প্রযুক্তির কোচগুলো লম্বায় ২৩ দশমিক ৫৪ মিটার এবং প্রস্থ ৩ দশমিক ২৪ মিটার হওয়ায় অধিক যাত্রী পরিবহন করা যায়। এর তাপানুকুল (এসি) চেয়ার কার কোচের ওজন ৩৯ দশমিক ৫ টন। কোচগুলোর বডি স্টেইনলেস স্টিল এবং ভেতরে অ্যালুমিনিয়াম ব্যাবহার করায় অনেক হালকা। এলএইচবি কোচে এডভান্স নিউমেটিক ডিস্ক কমপ্রেসড এয়ার ব্রেক সিস্টেম বা পাতলা ফ্ল্যাট ও গোলাকার প্লেট সমন্বিত বাতাস প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়। এতে করে উর্ধ্বগতি সম্পন্ন ট্রেন সহজেই নিয়ন্ত্রণ করা যায়। সূত্র জানায়, এই সব সুযোগ-সুবিধার কথা বিবেচনা করেই ভারত থেকে ১২০টি এলএইচবি কোচ আমদানীর সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ রেলওয়ে। কিন্তু প্রথম দফায় ২০টি কোচ আসার পর এলএইচবি কোচের মান নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। সৈয়দপুর রেলওয়ে ওয়ার্কশপে ট্রায়াল রানের আগেই ধরা পড়ে নানা ত্রুটি-বিচ্যুতি। সেগুলো রাতদিন পরিশ্রম করে সংশোধনের চেষ্টা করেন ভারতীয় প্রকৌশলী ও টেকনিশিয়ানরা। আলাপকালে এলএইচবি কোচের মেরামতের কাজের সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন এমন কয়েকজন জানান, প্রথমত কোচগুলো স্টেইনলেস স্টীলের নয়। কোচগুলোর বডি মৃসণ না হওয়ায় রঙের ফিনিশিংও ভালো হয়নি। লোড ট্রায়ালের সময় এলএইচবি কোচ নিয়ে বিশেষ ট্রেন যখন ঢাকায় আসে তখন কোচগুলো যারা দেখেছেন তাদের কাছে থেকে আরও অনেক মন্তব্য শোনা গেছে। অনেকেই বলেছেন, কোচগুলোর বডি মসৃণ নয়। স্টেইনলেস স্টীল হলে বডি মসৃণ হওয়ার কথা। লাল-সবুজ কোচ বলা হলেও লাল রঙ মোটেও লাল নয়। কোচগুলোর ফ্যানে এখনও ‘ইন্ডিয়ান রেলওয়ে’ লেখা। নামাজের জন্য যে স্থানটি নির্ধারিত সেটি একেবারে ছোট। এসি চেয়ারের আসন সরু। আরাম করে বা পা ছড়িয়ে বসা মুশকিল। এলএইচবি’র উপরোল্লিখিত ইতিহাস ও গুণাগুণ তুলে ধরে রেলওয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, আমাদের কোটেশনে কি ছিল সেটাই দেখার বিষয়। তা না হলে এরকম অসঙ্গতি থাকার কথা নয়। ‘ইন্ডিয়ান রেলওয়ে’ লেখা ফ্যান প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ওরা তো আমাদের কাছে থেকে অর্ডার নিয়েই সবকিছু তৈরী করেছে। সেখানে ফ্যানের মধ্যে ‘ইন্ডিয়ান রেলওয়ে’ লেখা থাকবে কেন? আর বাংলাদেশে আসার পর সেগুলো মুছে ফেলা হলো না কেন? এসব বিষয়ে জানতে চাইলে রেলওয়ের দায়িত্বশীল একাধিক কর্মকর্তা কথা বলতে রাজি হননি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।