Inqilab Logo

শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

এবতেদায়ী শিক্ষকদের ১২শ’ টাকা বেতন মানসম্মত নয়, বাজেটের পরই সমাধান- মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী

প্রকাশের সময় : ২৩ জুন, ২০১৬, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১১:৫৭ পিএম, ২২ জুন, ২০১৬

বিশ্বব্যাপী জঙ্গি-সন্ত্রাসবাদ উত্থানের পরও আলেম সমাজের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় বাংলাদেশ স্থিতিশীল আছে -আলহাজ্ব এ এম এম বাহাউদ্দীন
স্টাফ রিপোর্টার : মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, এবতেদায়ী মাদরাসার শিক্ষকদের এক হাজার ২০০ টাকা বেতন কোনোভাবেই মানসম্মত নয়। এই বিষয়টি নিয়ে ইতোমধ্যে আলোচনা হয়েছে। তারা যেন সম্মানজনক বেতন-ভাতা পান সে বিষয়ে প্রস্তাব করা হয়েছে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মাদরাসা শিক্ষা ও শিক্ষকদের বিষয়ে আন্তরিক। আমরা আশা করি এই বাজেটের পরই এই সমস্যার সমাধান হবে।
বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের সভাপতি ও দৈনিক ইনকিলাব সম্পাদক বলেন, ইউরোপ, আমেরিকাসহ সারা দুনিয়াতে এখন জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাসবাদ মাথাব্যথার কারণ। বাংলাদেশের মতো এত ছোট একটি দেশে এত বিপুল পরিমাণ জনসংখ্যা থাকার পরও এই দেশ স্থিতিশীল রয়েছে। দু-একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া গোটা দেশই শান্তিপূর্ণ রয়েছে। এর অন্যতম প্রধান কারণ হলো আলেয়া ধারার আলেম সমাজ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। দেশকে স্থিতিশীল এবং সমাজের অবক্ষয় রোধে সরকারকে আলেম সমাজের সাথে সুসম্পর্ক স্থাপনের কথা বলেন তিনি।
গতকাল (বুধবার) মহাখালিস্থ গাউসুল আজম মসজিদ কমপ্লেক্সে আয়োজিত ইফতার ও দোয়া মাহফিলে তারা এসব কথা বলেন। মাদরাসা শিক্ষকদের সর্ববৃহৎ ও একমাত্র অরাজনৈতিক সংগঠন বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের গাজীপুর জেলা ও মহানগরী শাখার উদ্যোগে এই ইফতার ও দোয়া মাহফিলে আয়োজন করা হয়।
জমিয়াতুল মোদার্রেছীন গাজীপুর জেলার সভাপতি ও কেন্দ্রীয় কমিটির মহাসচিব অধ্যক্ষ মাওলানা শাব্বির আহমদ মোমতাজীর সভাপতিত্বে এবং গাজীপুর জেলার সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ মাওলানা মো. জহিরুল হকের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক এমপি। বিশেষ অতিথি ছিলেন গাজীপুর জেলা পরিষদের প্রশাসক আখতারুজ্জামান, সম্মানিত অতিথি ছিলেন জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের সভাপতি ও দৈনিক ইনকিলাব সম্পাদক আলহাজ্ব এ এম এম বাহাউদ্দীন।
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সমালোচনা করে বলেন, তারা ক্ষমতায় যাওয়ার আগে বলে, সৎ লোকের শাসন চাই, কোরআনের আইন চাই। কিন্তু দুই-তৃতীয়াংশের বেশি আসন পেয়ে ক্ষমতা গ্রহণ করার পরও কোরআনের আইন বাস্তবায়নের জন্য কোনো রকম প্রচেষ্টা পর্যন্ত করেনি। তারা ইসলামকে কেবল রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করে এবং ক্ষমতায় যাওয়ার সিঁড়ি হিসেবে গ্রহণ করেছে। তিনি বলেন, রাজনৈতিক স্বার্থে এবং ক্ষমতার জন্য ইসলামের ব্যবহার শুধু এখন হচ্ছে তা নয়, সাহাবীদের সময়, এমনকি ইমাম হোসেনকে হত্যা করে এজিদরাও বলেছিল ইসলামের স্বার্থে হত্যা করা হয়েছে। আমেরিকার সমালোচনা করে মন্ত্রী বলেন, আমেরিকা একদিকে জঙ্গিবাদকে উৎসাহ দিচ্ছে, অন্যদিকে মুসলিম রাষ্ট্রগুলোকে ও মুসলমানদের জঙ্গি হিসেবে চিহ্নিত করে ধ্বংস করছে। বর্তমানে সত্যিকারের ইসলাম ও আলেমদের যে ভাবমর্যাদা ক্ষুণœ হয়েছে তা পুনরুদ্ধারের জন্য তিনি জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের আলেমদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
গাজীপুর জেলা পরিষদের প্রশাসক আখতারুজ্জামান বলেন, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়ার মতো ইসলামী আদর্শে বিশ্বাসী এবং সিঙ্গাপুরের মতো উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত করতে চান, যেখানে জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদের কোনো স্থান নেই। এই উন্নয়নে দেশের আলেম সমাজকে তিনি সরকারের পাশে থাকার আহ্বান জানান।
বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের সভাপতি ও দৈনিক ইনকিলাব সম্পাদক বলেন, ইউরোপ, আমেরিকাসহ সারা দুনিয়াতে এখন জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ মাথাব্যথার কারণ। কিন্তু দু-একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া গোটা বাংলাদেশ এখনো শান্তিপূর্ণ রয়েছে। এর অন্যতম প্রধান কারণ হলো আলেম সমাজের ভূমিকা। এদেশের পীর-মাশায়েখ, আলেম-ওলামাগণ সমাজের নেতৃত্ব দিয়ে থাকেন। প্রধানমন্ত্রী আলেমদের সাথে সুসম্পর্ক রাখেন বলে উল্লেখ করে এ এম এম বাহাউদ্দীন বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সাথে আলেমদের অনেক সুসম্পর্ক রয়েছে। এজন্য সরকার অনেক শক্তিশালী। সরকারের কাছে এখনো সুযোগ আছে আলেম সমাজকে কাছে টানতে হবে, সুসম্পর্ক গড়ে তুলতে হবে। আমেরিকা ইরাক, আফগানিস্তান, পাকিস্তানে বিলিয়ন ডলার দিচ্ছে, কিন্তু কোনো কাজ হচ্ছে না, কারণ আলেমরা তাদের সাথে নেই। তিনি বলেন, বাংলাদেশের নিচের দিকে অনেক কিছু ইতোমধ্যে বদলে গেছে। ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য সব উপাদান তৈরি হয়ে গেছে। বাংলাদেশকে ইসলামী রাষ্ট্র ঘোষণা সময়ের ব্যাপার মাত্র। আগামী দিনের যে সমাজ প্রতিষ্ঠা হবে সেই সমাজে নেতৃত্ব দেয়ার জন্য এখনই আলেমদের কাছে রাখতে হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মাদরাসা শিক্ষকদের বেতনবৈষম্য দূরীকরণ, ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা, মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠানসহ অন্যান্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেছেন বলে উল্লেখ করেন জমিয়াত সভাপতি।  
শাব্বির আহমদ মোমতাজী বলেন, গাজীপুরের সকল মাদরাসা শিক্ষক জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের সভাপতি এ এম এম বাহাউদ্দীনের নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ আছেন। এবতেদায়ী মাদরাসা শিক্ষকদের দুর্দশার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, এসব শিক্ষক অনেক সমস্যায় জর্জরিত আছেন। গাজীপুরের সকল এবতেদায়ী শিক্ষকদের জন্য সুযোগ তৈরি এবং বিশেষ দৃষ্টি দেয়ার জন্য তিনি মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক এবং গাজীপুর জেলা পরিষদের প্রশাসক আখতারুজ্জামানকে অনুরোধ জানান। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রীকে তিনি বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের নেতৃত্ব দিচ্ছেন, আলেমদেরও সাথে নেন, ৩ লাখ শিক্ষক আপনার সাথে থাকবে।
এ সময় ইফতার ও দোয়া মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান এ কে এম ছায়েফউল্লাহ, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মাহমুদ হাসান, ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার রওশন খান, সহকারী রেজিস্ট্রার ফাহাদ মোমতাজী, অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুল হাকিম জেহাদী, অধ্যক্ষ মাওলানা মো. জয়নাল আবেদীন, অধ্যক্ষ মাওলানা কেরামত আলী, অধ্যক্ষ মাওলানা মনজুরুল হক, অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুর রশিদ দেওয়ান, অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুল মালেক, অধ্যক্ষ মাওলানা মোহাম্মদ আলী দেওয়ান, অধ্যক্ষ মাওলানা মো. আলী হোসেন, অধ্যক্ষ মাওলানা নূরুল আমীনসহ অন্যান্য নেতা।



 

Show all comments
  • জুয়েল ২৩ জুন, ২০১৬, ২:১৯ এএম says : 0
    সমাজের অবক্ষয় রোধে সরকারকে আলেম সমাজের ভুমিকা অপরিসীম।
    Total Reply(0) Reply
  • আজিজুর রহমান ২৩ জুন, ২০১৬, ২:২৬ এএম says : 0
    বাংলাদেশে ইসলাম ও মাদ্রাসা শিক্ষার জন্য আলহাজ্ব এ এম এম বাহাউদ্দীন সাহেবের অবদানের কারণে তার পিতার মত তাকেও এদেশের জনগন চিরকাল স্বরণ করবে।
    Total Reply(0) Reply
  • ইমরান ২৩ জুন, ২০১৬, ২:৫৪ এএম says : 1
    আলেমগণ ঐক্যবদ্ধ হলে খুব দ্রুত ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা সম্ভব।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: এবতেদায়ী শিক্ষকদের ১২শ’ টাকা বেতন মানসম্মত নয়
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ