পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
মানছে না গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়
আমলাতান্ত্রিক জটিলতার খপ্পড়ে পড়ে গেছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা। দীর্ঘ আট বছর ধরে চলছে রাজধানীর গুলশান-বনানী-বারিধারার লেক উন্নয়ন প্রকল্পে ফাইল রাজউকের চোয়ারম্যান ও পরিচালকের মধ্যে চিঠি চালাচালি। একনেকের সভায় প্রধানমন্ত্রীর দেয়া নির্দেশনা মানছে না গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়।
রাজউকের লেক উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক প্রকৗশলী আমিনুর রহমান সুমন প্রকল্পের কাজ শেষ না করে নতুন আর একটি প্রকল্পের পিডি বানিছে রাজউক চেয়ারম্যান। এদিকে প্রধানমন্ত্রী প্রকল্পটি সেনাবাহিনীকে দেয়ার প্রস্তাব করায় এভাবে চিঠি চালাচালি করছে মন্ত্রণালয়Ñ রাজউক বলে মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।
অন্যদিকে গুলশান-বনানী-বারিধারার লেক উন্নয়ন শীর্ষক প্রকল্প সংশোধনের প্রস্তাবের উপর পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত পর্যালোচনা সভার সিদ্ধান্ত অনুয়ায়ী প্রকল্পের সংশোধিত ডিপিপি পুনর্গঠনপূর্বক দ্রুত মন্ত্রণালয়ের মধ্যেমে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে গত ২২ আগস্ট গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম স্বাক্ষরিত অগ্রগতি প্রতিবেদন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো হয়। গত ১৪ নভেম্বর মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী প্রধান মো. বরকাতুর রহমান স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক বাস্তবাধনাধীন গুলশান-বনানী-বারিধারার লেক উন্নয়ন শীর্ষক প্রকল্পের গত ১১ আগস্ট তারিখে একনেক সভায় গৃহীত সিদ্ধান্ত এবং পরিকল্পনা কমিশনে অনুষ্ঠিত পর্যালোচনা সভা সিদ্ধান্তের প্রকল্প এলাকায় কড়াইল বস্তি উচ্ছেদ বসবাসরত মানুষের সংখ্যা, পুনর্বাসন পরিকল্পনা সংক্রান্ত বিষয়ে সম্ভব্যতা সমীক্ষা সম্পন্ন করা হয়েছে।
আবারো মন্ত্রণালয় থেকে একই চিঠি দেয়া হয়েছে। এতে বলা হয়, প্রকল্পর ভূমি অধিগ্রহণের, পুনর্বাসন, পরিবেশগত, সামাজিক, কারিগরী এবং অর্থনৈতিক বিশ্লেষণসহ বিস্তারিত সমীক্ষা চাওয়া হয়। এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একনেক সভায় প্রকল্পে এলাকায় বড়াইল বস্তি পড়েছে কি না তা জানতে চান। কিছু তখন সাবেক চেয়ারমান কিছুই বলতে পারেনি। সে কারণে বারবার চিঠি দেয়া হচ্ছে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় থেকে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ে।
রাজউকের চেয়ারম্যানকে গত ১৬ অক্টোবর ঢাকা জেলার জেলা প্রশাসক স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়, গুলশান-বনানী-বারিধারার লেক উন্নয়ন শীর্ষক প্রকল্প টাকা আগামী ৬০ দিনের মধ্যে পাঠাতে হবে। তা না হলে আপনার প্রকল্প বাতিল করা হবে। এর জবাবে রাজউক থেকে এখনো জবাব দেয়া হয়নি বলে জানা গেছে।
এর আগে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের (একনেক-১) ও ঢাকা জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় এবং রাজউকের চেয়ারম্যানকে চিঠি দিলেও এক বছরে তা সাড়া মেলেনি। অন্যদিকে প্রকল্পের জমি অধিগ্রহণের কাজ দেখিয়ে ৪১৪ কোটি টাকা লুটপাট করেছে রাজউক। তবে একটি কোম্পানির কারণে সরকারি প্রকল্পের কাজ বন্ধ বলে অভিযোগ করেছে জমির মালিকরা।
পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে একনেক শাখা-১ এর সিনিয়র সহকারী প্রধান নিশাত জাহান স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়, গত বছর নভেম্বর মাসে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় খেকে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়, গুলশান-বনানী-বারিধারা লেক উন্নয়ন (১ম সংশোধিত) শীর্ষ প্রকল্পের বিষয়ে একনেক সভায় সিদ্ধান্তগুলো হয়। এর মধ্যে গুলশান-বনানী-বারিধারা লেক উন্নয়ন (১ম সংশোধিত) শীর্ষ প্রকল্পটি অনুমোদ করা হলো না। কড়াইল বস্তি হতে কত পরিবারকে উচ্ছেদ করা হবে, তাদের কোথায় এবং কিভাবে পুনর্বাসন করা হবে ইত্যাদি বিষয়ে বিবেচনা পূর্বক বিস্তারিতভাবে স্টাডি করে যথাযথ পরিকল্পনাসহ পুনরায় প্রকল্পটি একনেক সভায় অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করতে হবে। কিন্তু চিঠি দেয়া ও প্রায় ৮ মাস পেরিয়ে গেলেও এর প্রস্তাব পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে পাঠাচ্ছে না গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়।
পরিকল্পনা কমিশনের সিনিয়র সহকারী প্রদান দেবোত্তম সান্যাল স্বাক্ষরিত চিঠিতে প্রকল্পের অগ্রগতি জানতে চাওয়া হয়। এই মন্ত্রণালয়ের সরকারি সচিব রোকসানা আখতার স্বাক্ষরিত চিঠিতে গুলশান-বনানী-বারিধারা লেক উন্নয়ন প্রকল্পে একনেক সভায় গৃহীত সিদ্ধান্তের বাস্তবায়ন অগ্রগতি জানতে চাওয়া হয়। কিন্তু প্রকল্পের অগ্রগতি আর পরিকল্পনা বিভাগে যায় না। যা মন্ত্রণালয় ও রাজউকের মধ্যে চিঠি চালাচালিতে থাকছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পরিকল্পনা কমিশনের এক সদস্য বলেন, গুলশান-বনানী-বারিধারা লেকের কাজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেনাবাহিনীকে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ তথ্য জানতে পেয়ে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ কর্মকর্তারা বারবার ভুল ফাইল পাঠাচ্ছে। কারণ এ প্রকল্পে সেনাবাহিনী বাস্তবায়নের দায়িত্ব নিলে সেখানে কর্মকর্তারা দুর্নীতি করার সুযোগ পাবে না এবং জি কে শামীম তৈরি হবে না।
প্রকল্প এলাকার বাসিন্দার রবিউল ইসলাম ইনকিলাবকে বলেন, এ প্রকল্পটি কড়াইল মৌজার জমি পড়েছে। কিন্তু কড়াইল বস্তি পড়েনি। সেখানে কড়াইল বস্তি বলে বারবার সরকারে উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন হতে দিচ্ছে না। তিনি বলেন, একটি বড় কোম্পানির মালিক সচিবকে দিয়ে প্রকল্পটি বন্ধ করতে চান সে কারণে এ কাজ হচ্ছে না।
জানা গেছে, ২০১০ সালে গুলশান-বনানী-বারিধারা লেক উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নেয় রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ-রাজউক। পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০২১ সালে এ প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা।
উন্মুক্ত প্রতিযোগিতা ছাড়াই বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) স্টাডি রিপোর্টের ভিত্তিতে প্রকল্পের বিশাল এ আকার বাড়ানোর উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এ অবস্থায় শুরুতেই জনমনে নানা প্রশ্ন ও সন্দেহ ঘুরপাক খাচ্ছে। পর্যবেক্ষক মহলের মতে, রাজউকের প্রকল্পের ইতিহাস হচ্ছে, ধাপে ধাপে সময় ও ব্যয় বৃদ্ধি। এ সুযোগে অনিয়ম-দুর্নীতি জেঁকে বসে। প্রকল্পের সেবা সুযোগ-সুবিধার চেয়ে অর্থ খরচ হয় অঢেল।
এ প্রসঙ্গে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. শহীদ উল্লা খন্দকার ইনকিলাবকে বলেন, গুলশান-বনানী-বারিধারার লেকর প্রকল্পের সংশোধনের প্রস্তাব আমরা একনেকে পাঠাবো। কি কারণে এক বছর ধরে লালফিতায় বন্দি তা খুঁজে বের করা হবে।
এ বিষয়ে রাজউকের চেয়ারম্যান সুলতান আহমদ ফোনে তিনি বলেন, মন্ত্রণালয় থেকে চিঠি পেয়েছি। এ নিয়ে কাজ চলছে। তবে কবে পাঠানো হবে তা বলতে পারব না। রাজউকের লেক উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক প্রকৗশলী আমিনুর রহমান সুমন ইনকিলাবকে বলেন, গুলশান-বনানী-বারিধারা লেকের চিঠি আমরা পাইনি। তবে মন্ত্রণালয়ে দিয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।