Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অঘোষিত ধর্মঘটে সীমাহীন দুর্ভোগ

প্রকাশের সময় : ২২ জুন, ২০১৬, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১১:৪২ পিএম, ২১ জুন, ২০১৬

বিশেষ সংবাদদাতা : প্রায় ১০ ঘণ্টা পরিবহন ধর্মঘটে অচল ছিল দেশের পূর্ব ও দক্ষিণাঞ্চল। গত সোমবার অফিস দখলের প্রতিবাদে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন গতকাল অনির্র্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দেয়। তাতে রাজধানীর সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। একই সাথে ঢাকার বাইরে থেকেও কোনো বাস ঢাকার উদ্দেশে ছাড়েনি। তাতে সকাল থেকে হাজার হাজার যাত্রীকে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হয়। বিকাল সাড়ে চারটায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রীর আশ্বাসের প্রেক্ষিতে শ্রমিক নেতারা ধর্মঘট প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন।
জানা গেছে, রাজধানীর টিকাটুলি এলাকায় বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন  শ্রমিক ইউনিয়নের (রেজি: নং ৪৯৪) অফিস। এই অফিসটি নিয়ন্ত্রণ করে আসছেন অদুদ নয়ন ও করম আলীর নেতৃত্বাধীন শ্রমিক কমিটি। সোমবার দুপুরে ঢাকা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের ব্যানারে সফর আলীর সমর্থকরা ওই অফিস দখলে নিতে গেলে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। একপর্যায়ে সফর আলীরা অফিসটি দখল করে নিলে অদুদ নয়ন গ্রুপের শ্রমিকরা রাস্তায় ব্যারিকেড দিয়ে যান চলাচল বন্ধ করে দেয়। পরে পুলিশ গিয়ে সফর আলীর সমর্থকদের অফিস থেকে বের করে দিয়ে তালা লাগিয়ে দেয়। এরই প্রতিবাদে সোমবার দিবাগত মধ্যরাত তেকে অদুদ নয়নের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন (রেজি: ৪৯৪) পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দেয়। ভোর থেকে সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। বন্ধ হয়ে যায় ঢাকা-চট্টগ্রাম, ঢাকা-সিলেট, ঢাকা-খুলনাসহ পূর্ব ও দক্ষিণাঞ্চলের সব ধরনের সড়ক যোগাযোগ। সকাল থেকে সায়েদাবাদ টার্মিনালে হাজার হাজার যাত্রী সীমাহীন দুর্ভোগ নিয়ে যানবাহনের জন্য অপেক্ষা করতে থাকে। ঢাকার পার্শ্ববর্তী এলাকা থেকে রিকশা, ভ্যানে করে হাজার হাজার মানুষ ঢাকার দিকে আসে। মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারের উপর দিয়ে হাজার হাজার মানুষকে হেঁটে যেতে দেখা যায়। এ অবস্থায় সরকারের পক্ষ থেকে ধর্মঘট প্রত্যাহারের আহবান জানানো হলে শ্রমিক ইউািনয়নের নেতারা তাদের অফিস খুলে দেয়ার দাবি জানান। বিকালে ওয়ারি জোনের ডিসি নুরুল ইসলামের সাথে আলোচনার পর শ্রমিক নেতারা তাদের ধর্মঘট প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ওদুদ নয়ন বলেন, আমাদের দাবি ছিল আমাদের অফিস আমাদেরকে বুঝিয়ে দেওয়া এবং ইউনিয়ন হাইজ্যাকের যে চক্রান্ত চলছে তা বন্ধ করা। স্বরাষ্টমন্ত্রী এবং সড়ক পরিবহনমন্ত্রী উভয়ই আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আমাদের দাবি মেনে নেওয়া হবে। এই আশ্বাসের প্রেক্ষিতে আমরা ধর্মঘট প্রত্যাহার করেছি। ওদুদ নয়ন জানান, ১৯৯২ সাল থেকে টিকাটুলির ওই কার্যালয়টি তারা ব্যবহার করে আসছেন। এখন হুট করে নতুন গজিয়ে ওঠা একটি সংগঠন তার দখল নিয়েছে।  তিনি বলেন, ফেডারেশন থেকে আমাদের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করা হয়নি, কোনো রকম নির্দেশনাও আসেনি। হঠাৎ করে একটি সংগঠনের নামধারী সন্ত্রাসীরা আমাদের অফিস দখল করল, ভাঙচুর ও লুটপাট করল। জানা গেছে, দখলদার ঢাকা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের অন্তর্ভুক্ত সংগঠন, যার সভাপতি নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান। ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ওসমান আলী ঢাকা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের পক্ষে অবস্থান নেন। এদিকে, গতকালের  পরিবহগন ধর্মঘটের প্রতি মালিকপক্ষের নীরব সমর্থন ছিল। বিকালে সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালে ধর্মঘট প্রত্যাহারের ঘোষণা দেয়ার সময় সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক করম আলী এজন্য মালিকপক্ষকে ধন্যবাদ জানান। সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে করম আলী দখলদারদের ইঙ্গিত করে বলেন, আগামীতেও শকুনেরা হামলা করতে পারে। সেজন্য আমাদের সকলকে সজাগ থাকতে হবে। সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কালাম ও সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর হোসেন এ সময় সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন।  



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: অঘোষিত ধর্মঘটে সীমাহীন দুর্ভোগ
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ