পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
নূরুল ইসলাম : ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে লাল-সবুজ ট্রেনের নাম সোনার বাংলা এক্সপ্রেস। আগামী ২৫ জুন নতুন এ আন্তঃনগর ট্রেনের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ইন্দোনেশিয়া থেকে আনা বিলাসবহুল লাল-সবুজ কোচের বিরতিহীন এই ট্রেন ঢাকা থেকে যাত্রাপথে শুধু বিমানবন্দর স্টেশনে দাঁড়াবে। পাঁচ ঘণ্টা ৪০ মিনিটে ট্রেনটি ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম এবং চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা পৌঁছাবে। ১৬টি কোচের এই ট্রেনে স্নিগ্ধা (শীতাতপ চেয়ার), শোভন চেয়ার, এসি বাথ মিলিয়ে ৭৪৬টি আসন থাকবে। শনিবার উদ্বোধনের পরদিন রোববার থেকে ট্রেনটি বাণিজ্যিকভাবে চলাচল করবে। আর নতুন এই ট্রেনে ভ্রমণ করার টিকিট বিক্রি শুরু হবে আজ বুধবার থেকে। রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
ইন্দোনেশিয়া থেকে লাল-সবুজ নতুন কোচ আসার পর ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে নতুন একটি বিরতিহীন ট্রেন চালুর প্রস্তাব করা হয় রেলভবন থেকে। গত ১১ জুন আসন্ন ঈদ উপলক্ষে অধিক সংখ্যক যাত্রী পরিবহন নিয়ে রেল ভবনে অনুষ্ঠিত এক সভায় নতুন এই ট্রেন চালুর বিষয়ে প্রস্তাব করা হয়। তাতে নতুন ট্রেনের জন্য সম্ভাব্য ৭টি নাম প্রস্তাব করা হয়। এগুলো হলো, ২য় সুবর্ণ এক্সপ্রেস, স্বাধীনতা এক্সপ্রেস, বঙ্গবন্ধু এক্সপ্রেস, সাগর এক্সপ্রেস, বে-এক্সপ্রেস, রাজধানী এক্সপ্রেস ও ক্যাপিটাল এক্সপ্রেস। এর বাইরে প্রধানমন্ত্রীর প্রদেয় যে কোনো নাম রাখা যেতে পারে বলে প্রস্তবনায় বলা হয়। শেষ পর্যন্ত ৭টি নামের মধ্যে কোনোটি নির্বাচিত হয় নি। রেলওয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, নামটি প্রধানমন্ত্রীর দেয়া বলে আমি শুনেছি। রেলওয়ে সূত্র জানায়, সোনারবাংলা এক্সপ্রেস প্রতিদিন সকাল ৭টায় কমলাপুর রেল স্টেশন থেকে ছেড়ে চট্টগ্রাম পৌঁছাবে বেলা ১২টা ৪০ মিনিটে। একই ট্রেন চট্টগ্রাম স্টেশন থেকে ছাড়বে বিকাল ৫টায়। ঢাকা পৌঁছাবে রাত ১০টা ৪০ মিনিটে। অর্থাৎ গন্তব্যে পৌঁছাতে বিরতিহীন এই ট্রেন সময় নিবে ৫ ঘণ্টা ৪০ মিনিট। ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটের সুবর্ণ এক্সপ্রেস এর চেয়েও ১০ মিনিট কম সময়ে গন্তব্যে পৌঁছায়। নতুন ট্রেনের গন্তব্যে পৌঁছার সময় নিয়ে বেশ কয়েকদিন ধরে বিতর্ক চলছে। অনেকের মতে, রেল কর্তৃপক্ষ ইচ্ছা করেই নতুন ট্রেনের সময় বাড়িয়ে দিলো। কারণ নতুন কোচ ও নতুন ট্রাক মিলে এই ট্রেনের গতিবেগ অনায়াসে বাড়ানো যেতো। অন্তত সুবর্ণ’র চেয়ে সময় কমানোর দাবি ছিল খোদ রেলওয়ের কর্মকর্তাদেরই। এ বিষয়ে গত কয়েক দিন থেকে রেলওয়ের ফেসবুকে লেখালেখি চলছে। সরকারের একজন যুগ্ম সচিব গতকাল রেলওয়ের মহাপরিচালকের কাছে এক চিঠিতে নতুন ট্রেনের গন্তব্যে পৌঁছার সময়সীমা চার থেকে সাড়ে ৪ ঘন্টা করার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন। ওই চিঠিতে তিনি এর স্বপেক্ষ যুক্তি তুলে ধরে বলেছেন, ‘নতুন নতুন রেললাইন স্থাপন, নতুন কোচ ও লোকো সংগ্রহের মাধ্যমে নতুন ট্রেন পরিচালনা করে দ্রুত কানেকটিভিটি স্থাপন ও জনগণের কল্যাণসাধনÑএই ব্রত নিয়ে এসেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। ঢাকা-চট্টগ্রাম লাইনের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ এখন ডাবল লাইনের আওতায়। ব্রিজ কালভার্ট মেরামত, সংস্কার, পুরাতন রেললাইনের ব্যাপক উন্নয়ন, আধুনিক সিগন্যালিং ব্যবস্থার প্রবর্তন, ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথের ৩২০ কিলোমিটার পথ মাত্র ৪ ঘণ্টায় অতিক্রম করা এখন জনগণের স্বাভাবিক ও নৈতিক প্রত্যাশা। কয়েক মাস পূর্বে ডাবল লাইন সম্পূর্ণ হবার পর এই রুটের সেরা ট্রেন সুবর্ণ ৭০১ (চট্টগ্রাম-ঢাকা) ৫ ঘন্টা ৪০ মিনিট এবং সুবর্ণ ৭০২ ( ঢাকা-চট্টগ্রাম) ৫ ঘন্টা ৩০ মিনিট করা হয়েছে। তখন বলা হয়েছিল ইন্দোনেশিয়া থেকে নতুন লাল-সবুজ কোচ এলে তা ৪/৪.৩০ ঘণ্টায় নামিয়ে আনা হবে। মাহবুব কবির নামে রেলওয়ের সাবেক ওই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা লিখেছেন, ‘চিফ মেকানিক্যাল (পূর্ব) ইঞ্জিনিয়ার, প্রধান প্রকৌশলী (পূর্ব), চিফ সিগন্যাল অ্যান্ড টেলিকমিউনিকেশনের (পূর্ব) দপ্তর থেকে জানা গেছে, বর্তমানে কিছু স্টেশন বন্ধ থাকা সত্ত্বেও ইন্দোনেশিয়ান নতুন কোচ দিয়ে পরিচালিত ট্রেন নিঃসন্দেহে বর্তমানে ৫ ঘণ্টায় রান করার মতো উপযোগী। বন্ধ স্টেশন চালু হলে তা ৪ ঘণ্টায় নিয়ে আসা সম্ভব।’
চালু হওয়ার পর সোনার বাংলা এক্সপ্রেস হবে ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে চলাচলকারী দ্বিতীয় বিরতিহীন ট্রেন। এর আগে প্রথম বিরতিহীন আন্তঃনগর ট্রেন সুবর্ণ এক্সপ্রেস চলাচল শুরু করে ১৯৯৮ সালের ১৪ এপ্রিল। সুবর্ণ এক্সপ্রেস শুক্রবার ছাড়া সপ্তাহের বাকি ছয়দিন ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে বিমানবন্দর ছাড়া অন্য কোনও স্টেশনে থামে না। সুবর্ণ এক্সপ্রেস ছাড়াও তুর্ণা নিশিথা, মহানগর গোধুলী, মহানগর এক্সপ্রেস ট্রেন চলাচল করে। সোনার বাংলা এক্সপ্রেস চালু হলে এ পথে আন্তঃনগর ট্রেনের সংখ্যা দাঁড়াবে পাঁচটিতে। এর বাইরে ঢাকা-চট্টগ্রাম পথে দুটি মেইল ট্রেনও চলাচল করে। রেল সূত্র জানায়, সোনার বাংলা এক্সপ্রেসের ১৬টি বগির মধ্যে চারটি এসি চেয়ায়ের (স্নিগ্ধা) প্রতিটিতে ৫৫ করে ২২০ আসন, সাতটি শোভন চেয়ারের বগিতে ৪২০ আসন, দুটি এসি বাথে ৩৩ করে ৬৬ আসন এবং দুটি খাবার গাড়ির সঙ্গে সংযুক্ত ৪০টি আসন রয়েছে। এর বাইরে একটি পাওয়ার কার থাকছে ট্রেনটিতে। পূর্ব রেলের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সোনার বাংলা এক্সপ্রেসে খাবার সরবরাহের দায়িত্বে থাকবে পর্যটন করপোরেশন। ট্রেনের ভাড়ার সাথে খাবারের দাম সংযুক্ত করার পরিকল্পনাও রয়েছে বলে পূর্বাঞ্চলের রেলওয়ের একজন কর্মকর্তা জানান।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।