বাড়াবাড়ি ও ছাড়াছাড়ির কবলে শবে বরাত-৩
সুনানে ইবনে মাজায় বর্ণিত হয়েছে : হযরত আলী ইবনে আবু তালেব (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ
মহান আল্লাহপাকের প্রথম সৃষ্টি নূরে মুহাম্মাদ সা.। তাকে সৃষ্টি না করলে তিনি কোনো কিছুই সৃষ্টি করতেন না। আল্লাহতায়ালা তাকে সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বসেরা রাসূলরূপে দুনিয়ায় পাঠিয়েছেন। বলেছেন, তিনি (রাসূল সা.) রাহমাতুল্লিল আলামীন। তাঁর চেহারা মুবারক বা দৈহিক সৌন্দর্য যে সর্বোত্মম হবে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই।
হযরত আবু হুরাইরা রা. বর্ণিত একটি হাদিসে আছে, তিনি বলেছেন, রাসূলুল্লাহ সা.-এর মতো সুন্দর কোনো কিছুই আমার দৃষ্টিগোচর হয়নি। শুধু হযরত আবু হুরাইরাই নন, সাহাবীদের অনেকেই তার নূরানী ঔজ্বল্যমন্ডিত সৌন্দর্যের বিবরণ দিয়েছেন। কেউ বলেছেন, তার চেহারা সূর্যের মতো, কেউ বলেছেন চন্দ্রের মতো উজ্জ্বল। কেউ আবার বলেছেন, রাসূলুল্লাহ সা.-এর চেহারা মুবারক এতই উজ্জ্বল যে, সূর্যের উজ্জ্বলতাকেও হার মানায়। হযরত আবু বকর রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সা.-এর চেহারা মুবারক ছিল আলোকোজ্জ্বল বৃত্তাকার চন্দ্রের মতো। রাসূলুল্লাহ সা. স্বয়ং বলেছেন, আমি লাবণ্যময় এবং আমার ভাই ইউসুফ আ. উজ্জ্বল।
হযরত আলী রা. রাসূলুল্লাহ সা.-এর রূপ, লাবণ্য, সৌন্দর্য, সৌষ্ঠব ও চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের যে বর্ণনা দিয়েছেন তা বিশেষভাবে উল্লেখের দাবি রাখে।‘সীরাতে ইবনে হিশাম’ এ ইবনে হিশাম বলেছেন : ‘হযরত আলী ইবনে আবু তালিবের পুত্র মুহাম্মদের পুত্র ইব্রাহিম থেকে গুফরার আযাদকৃত দাস উমার রাসূলুল্লাহ সা.-এর দৈহিক ও চারিত্রিক বৈশেষ্ট্যের নি¤œরূপ বিবরণ দিয়েছেন :
আলী ইবনে আবু তালিব যখনই রাসূলুল্লাহ সা.-এর প্রশংসা করতেন তখনই বলতেন, ‘তিনি অধিক লম্বা ছিলেন না, আবার খুব বেঁটেও ছিলেন না। বরং তিনি উচ্চতায় সবার মধ্যে মধ্যম আকৃতির ছিলেন। তার চুল অত্যধিক কুঞ্চিত ছিল না আবার একেবারে অকুঞ্চিতও ছিল না, বরং তা কিঞ্চিত কোঁকড়ানো ছিল।
তিনি খুব বেশি স্থ’ূল বা মোটা দেহের অধিকারী ছিলেন না। তার মুখমন্ডল একেবারে গোলাকার ও ক্ষুদ্র ছিল না। চোখ দুটো ছিল কালো। ছিল লম্বা ভ্রু-যুগল। গ্রন্থির হাড়গুলো ও দুই স্কন্ধের মধ্যবর্তী হাড়টি ছিল উঁচু ও সুস্পষ্ট। বক্ষ থেকে নাভি পর্যন্ত বিস্তৃত অঞ্চল ছিল হালকা লোমে আবৃত।
হাত ও পায়ের পাতা ছিল পুষ্ট। চলার সময় পা দাবিয়ে দিতেন না, মনে হতো যেন কোনো নিম্নভ‚মিতে নামছেন। কোনো দিকে ফিরে তাকালে গোটা শরীর নিয়ে ফিরতেন। তার দুই স্কন্ধের মাঝখানে নবুওয়াতের সিল বা মোহর লক্ষণীয় ছিল। বস্তুত, তিনি শেষ নবী। শ্রেষ্ঠ দানশীল।
শ্রেষ্ঠতম সাহসী, অতুলনীয় সত্যবাদী, সবচেয়ে দায়িত্বজ্ঞানসম্পন্ন, সবচেয়ে অমায়িক ও মিশুক। প্রথম নজর তাকে দেখে সবাই ঘাবড়ে যেত।’ তার প্রশংসাকারী আলী রা. বলেছেন, ‘তার মতো মানুষ তার আগেও দেখিনি, পরেও দেখিনি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।