Inqilab Logo

শুক্রবার ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

খুলছে স্বপ্নের দুয়ার

প্রকাশের সময় : ২১ জুন, ২০১৬, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১১:৫০ পিএম, ২০ জুন, ২০১৬

শামসুল ইসলাম : বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের প্রায় কোটি শ্রমজীবী মানুষ কাজ করে রেমিটেন্স পাঠাচ্ছেন। প্রবাসীদের এই রেমিটেন্সে দেশের রিজার্ভের পারদ উপরে উঠছে। এর মধ্যে শুধু সউদী আরবেই প্রায় ২০ লাখ প্রবাসী কাজ করছেন। যারা কাজ করতে বিদেশ যান সেই শ্রমজীবীরা মানুষের কাছে সউদী আরব হলো স্বপ্নের দেশ। নানা কারণে সেই সউদী শ্রমবাজারের দুয়ার বাংলাদেশী শ্রমিকদের জন্য বন্ধ ছিল। সে দেশে কর্মরত হাজার হাজার শ্রমিককে দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে। শুধু তাই নয়, সউদী আরবে কর্মরত লাখ লাখ শ্রমিককে নানা ধরনের সমস্যায় পড়তে হয়েছে। বাংলাদেশের প্রতি বিরূপ মনোভাবের কারণেই এ অবস্থার সৃষ্টি হয়। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর সউদী সফরের পর পাল্টে গেছে দৃশ্যপট। সউদী সরকার নারী কর্মীর পাশাপাশি আরো ৫ লাখ পুরুষ কর্মী নেয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়ায় খুলে যাচ্ছে সেই স্বপ্নের দুয়ার। ইতোমধ্যেই নারী ও পুরুষ কর্মীদের ভিসা দেয়া শুরু করেছে সউদী সরকার।
সউদী শ্রমবাজার নিয়ে যে শংঙ্কা ছিল তা কেটে গেছে। জনশক্তি রফতানির সবচেয়ে বৃহৎ শ্রমবাজার সউদী আরব শিগগিরই উন্মুক্ত হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক সউদী আরব সফরের সুফলের অংশ হিসেবেই সউদীর শ্রমবাজারের দ্বারউন্মুক্ত হতে যাচ্ছে। সউদী আরবের মেগা প্রকল্পসমূহে প্রচুর বাংলাদেশী কর্মীর চাহিদা রয়েছে। দীর্ঘদিন যাবত সউদী আরবে অঘোষিতভাবে বাংলাদেশী কর্র্মী নিয়োগ বন্ধ রয়েছে। প্রতি মাসে হাতে গোনা কিছু বাংলাদেশী কর্মী সউদী আরবে যাচ্ছে। সউদী সরকার বাংলাদেশ থেকে ৫ লাখ পুরুষ কর্মী নিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। এ বিষয়টি বর্তমানে প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। শিগগিরই সউদী সরকার বাংলাদেশের জন্য শ্রমবাজার খুলে দিবে। এ ব্যাপারে পুরোপুরি আভাস পাওয়া গেছে। সউদীর শ্রমবাজার উন্মুক্ত হলে রেমিটেন্স প্রবাহে উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জিত হবে। রিয়াদস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত গোলাম মসিহ গত শনিবার ইনকিলাবের সাথে টেলিফোনে আলাপকালে এ অভিমত ব্যক্ত করেছেন। রাষ্ট্রদূত গোলাম মসিহ বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সউদী আরব সফর অত্যন্ত ফলপ্রসূ হয়েছে। সউদী বাদশাহ বাংলাদেশী প্রধানমন্ত্রীর সাথে অত্যন্ত আন্তরিকতার সাথে দ্বি-পাক্ষিক বৈঠক করেছেন। সউদী রাজকীয় আতিথেয়তায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। বর্তমানে সউদী আরবে প্রায় ২০ লাখ বাংলাদেশী কঠোর পরিশ্রম করে দেশের রেমিটেন্স খাতে বিরাট অবদান রাখছেন। রাষ্ট্রদূত বলেন, সউদী আরবের বিভিন্ন স্থানে মেগা প্রকল্পের কাজ চলছে। এসব মেগা প্রকল্পে প্রচুর বাংলাদেশী কর্মীর চাহিদা রয়েছে। বাংলাদেশ থেকে চিকিৎসক নেয়ার জন্য ইতিমধ্যেই সউদী আরবের একটি প্রতিনিধি দলে ঢাকা সফর করে সউদীতে ফিরে গেছে। সউদী কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশ থেকে প্রকৌশলী নেয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। অতিসম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সউদী আরব সফরের মাধ্যমে সউদীর শ্রমবাজার খুলে গেছে। মহিলা গৃহকর্মীর সাথে একজন করে পুরুষ কর্মীর ভিসা দেয়া শুরু করেছে সউদী কর্তৃপক্ষ। বায়রার একজন সাবেক শীর্ষ পর্যায়ের নেতা এ অভিমত ব্যক্ত করেছেন। সউদী-বাংলাদেশ দ্বি-পাক্ষিক চুক্তিতে মহিলা গৃহকর্মীর সাথে ড্রাইভার, দারোয়ান, খাদেম পুরুষ, ক্লিনার, কুক, আমেল যেরাঙ্গ (কৃষি লেবার), রায়েল মাশি (রাখাল) ও নার্স পুরুষ নেয়ার কথা উল্লেখ ছিল। বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সিজ (বায়রা)-এর একজন সাবেক শীর্ষ পর্যায়ের নেতা ও সা’দিয়া ইন্টারন্যাশনাল-এর স্বত্বাধিকারী শামীম আহমেদ চৌধুরী নোমান বলেছেন, সউদী আরবের অন্যান্য খাতেও শিগগিরই বাংলাদেশ থেকে কর্মী নেয়া শুরু হবে। তিনি বলেন, সউদীর ডোমেষ্টিক ভিসা খুলে যাওয়ায় বাংলাদেশী জনশক্তি রফতানিকারকদের মাঝে প্রাণচাঞ্চাল্য ফিরে এসেছে। আগামীতে অন্যান্য দেশের শ্রমবাজারও খুলে যাবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি গত রোববার তার দপ্তরে ইনকিলাবের সাথে আলাপকালে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সউদী আরব সফর অত্যন্ত ফলপ্রসূ হয়েছে। সউদী সরকার বাংলাদেশ থেকে ৫ লাখ কর্মী নিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। এক কথায় সউদীর শ্রমবাজার উন্মুক্ত হয়ে গেছে বলা যায়। প্রতিদিনই সউদী আরবে পুরুষ-মহিলা কর্মী যাচ্ছে। গত ১৬ জুন ২শ’ ৩ জন কর্মী সউদী আরবে গেছে। প্রবাসী মন্ত্রী এক প্রশ্নে জবাবে বলেন, গৃহকর্মীর সাথে তাদের নিকট আত্মীয় পুরুষ কর্মীর ফ্রি ভিসা দেয়া শুরু করেছে সউদী কর্তৃপক্ষ। সউদীর শ্রমবাজার সম্প্রসারণের কারণে আগামীতে রেমিটেন্সের গতিও বাড়বে বলে প্রবাসী মন্ত্রী আশাবাদ ব্যক্ত করেন। সউদী আরবের মেগা প্রকল্পসমূহে প্রচুর বাংলাদেশীর চাহিদা রয়েছে বলেও প্রবাসী মন্ত্রী উল্লেখ করেন। প্রবাসী মন্ত্রী বলেন, সউদী আরবে কর্মী প্রেরণে অভিবাসন ব্যয় কমে যাবে। অতিরিক্ত অভিবাসন ব্যয় যাতে রিক্রুটিং এজেন্সিগু নিতে না পারে তার জন্য সার্বক্ষণিক নজরদারী রাখা হচ্ছে। সউদীতে নারী কর্মী প্রেরণের ক্ষেত্রে দু’টি বাছাই কমিটি গঠনের মাধ্যমে জনশক্তি রফতান্তিতে স্বচ্ছতার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে বলেও প্রবাসী মন্ত্রী উল্লেখ করেন। বিএমইটি’র সূত্র মতে, নতুন চুক্তির আওতায় গত এক বছরে সউদী আরবে প্রায় ৫৫ হাজার মহিলা গৃহকর্মী চাকরি লাভ করেছে। এসব গৃহকর্মীর প্রসেসিং কার্যক্রম সম্পন্ন করে রিক্রুটিং এজেন্সিগুলো প্রায় ১ হাজার কোটি টাকার সার্ভিস চার্জ লাভ করেছে। গৃহকর্মীরাও গত এক বছরে সউদী আরব থেকে প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকার রেমিটেন্স দেশে পাঠিয়েছে। বায়রার সাবেক যুগ্ম-মহাসচিব আলহাজ মোঃ আবুল বাসার এ তথ্য জানিয়েছেন। এসব গৃহকর্মী প্রতি মাসে ৮শ’ থেকে ১ হাজার সউদী রিয়াল বেতন পাচ্ছে। রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোও এসব গৃহকর্মী সউদী আরবে পাঠিয়ে জনপ্রতি ১ হাজার মার্কিন ডলার করে সার্ভিস চার্জ লাভ করেছে। তিনি বলেন, গৃহকর্মী প্রেরণকারী রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোর মাঝে স্বচ্ছলতা ফিরে এসেছে।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কর্মরত প্রায় ৮৫ লাখ অভিবাসী’র পাঠানো রেমিটেন্সে’র উপরই জাতীয় অর্থনীতি’র ভীত দাঁড়িয়ে রয়েছে। ২০১৪ সালে বিভিন্ন দেশে ৪ লাখ ২৫ হাজার ৬শ’ ৮৪ জন কর্মী চাকরি লাভ করেছে। একই সালে প্রবাসী কর্মীরা ১৪ হাজার ৯শ’ ৪২ কোটি ৫৭ লাখ মার্কিন ডলার রেমিটেন্স দেশে পাঠিয়েছে। ২০১৫ সালে ৫ লাখ ৫৫ হাজার ৮শ’ ৮১ জন কর্মী বিদেশে চাকরি লাভ করেছে। একই বছর প্রবাসী কর্মীরা দেশে রেমিটেন্স পাঠিয়েছে ১৫ হাজার ২শ’ ৭০ কোটি ৯৯ লাখ মার্কিন ডলার। গত জানুয়ারী থেকে ১৮ জুন পর্যন্ত বিভিন্ন দেশে ৩ লাখ ৪৪ হাজার ২শ’ ১৩ জন কর্মী চাকরি লাভ করেছে। জানুয়ারী থেকে মে মাস পর্যন্ত প্রবাসী কর্মীরা দেশে রেমিটেন্স পাঠিয়েছে ৫ হাজার ৯শ’ ৬৯ কোটি ২৬ লাখ মার্কিন ডলার।
২০০৬ সালে সউদী আরবে ১ লাখ ৯ হাজার ৫শ’ ১৩ জন, ২০০৭ সালে সউদীতে ২ লাখ ৪ হাজার ১শ’ ১২ জন, ২০০৮ সালে সউদীতে ১ লাখ ৩২ হাজার ১শ’ ২৪ জন কর্মী চাকরি লাভ করে। অঘোষিত নিষেধাজ্ঞার দরুণ ২০০৯ সালে সউদীতে জনশক্তি রফতানি মাত্র ১৪ হাজার ৬শ’ ৬৬ জনে নেমে আসে । ২০১০ সালে সউদী আরবে মাত্র ৭ হাজার ৬৯ জন কর্মী চাকরি লাভ করে। ২০১৪ সালে সউদীতে ১০ হাজার ৬শ’ ৫৭ জন চাকরি লাভ করে। ২০১৫ সালে সউদীতে মহিলা গৃহকর্মী যাওয়া শুরু হলে দেশটিতে সর্বমোট ৫৮ হাজার ২শ’ ৭০ কর্মী চাকরি লাভ করে। গত জানুয়ারী থেকে মে মাস পর্যন্ত সউদীতে ৫০ হাজার ১শ’ ১৩ জন কর্মী চাকরি লাভ করে। এর মধ্যে মহিলা গৃহকর্মীই বেশি। সউদী সরকারও ঐ দেশে কর্মরত বাংলাদেশী কর্মীদের ভাগ্যেন্নয়নে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখছে। বিগত ক’বছর আগে সউদী বাদশা’র মহানুভবতায় সউদী শ্রম মন্ত্রণালয়ের সচিব সেবা ও সর্ম্পক- যিয়াদ বিন ইব্রাহিম আল দায়ে’র স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে সউদীতে প্রবাসী বাংলাদেশী কর্মীদের নিয়োগকর্তা ও পেশা’র পরিবর্তন কার্যক্রম শুরু হয়েছিল। এতে সউদী আরবে কর্মরত লাখ লাখ প্রবাসী বাংলাদেশী কর্মীদের দীর্ঘ দিনে দাবী পূরণ হয়েছে। ২০১৩ সনে সউদী বাদশা’র মহানুভবতায় মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে অবৈধ লাখ লাখ বাংলাদেশী বৈধতা লাভের সুযোগ পেয়েছে। সাধারণ ক্ষমার আওতায় প্রায় ৬ লাখ অবৈধ বাংলাদেশী কর্মী বৈধতা লাভ করেছে। সউদী কর্মরত প্রবাসী বাংলাদেশী কর্মীদের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করায় তাদের মধ্যে ব্যাপক আশার আলো জেগেছিল।
এদিকে, এক শ্রেণীর দালাল চক্র গ্রামাঞ্চলের উঠতি বয়সী নারীদের পাসপোর্টে ২৫ ঊর্ধ্ব বয়স দেখিয়ে সউদী আরবে বিনা খরচে পাঠানোর জন্য বিএমইটিতে নিয়ে ফিংগার করাচ্ছে। আবার ৫০ ঊর্ধ্ব বয়সের নারী কর্মীদের বয়স পাসপোর্টে ৪০ বয়স দেখিয়ে সউদী আরবে পাঠানোর অভিযোগ উঠেছে। ষোড়শী নারীরা বয়স বেশি দেখিয়ে এবং পঞ্চাশ ঊর্ধ্ব নারীরা বয়স কম দেখিয়ে যাতে সউদী আরবে চলে যেতে না পারে তার জন্য প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় আট সদস্য বিশিষ্ট দু’টি বাছাই কমিটি গঠন করেছে। উল্লেখিত কমিটি’র সদস্যরা হচ্ছেন, আহ্বায়ক পরিচালক মোঃ তাজুল ইসলাম, উপ-পরিচালক ডিএম আতিকুর রহমান, সহকারী পরিচালক মোঃ মাহমুদ উল্লাহ আকন্দ, পরিসংখ্যান কর্মকর্তা মোঃ নাসিরুজ্জামান, আহ্বায়ক পরিচালক এ কে এম টিপু সুলতান, ঊর্ধ্বতন পরিসংখ্যান কর্মকর্তা মাসুদ রানা, উপ-পরিচালক সাজ্জাদ হোসেন সরকার, সহকারী পরিচালক আখলাক উজ জামান। কমিটি’র সদস্যরা বিদেশগামী মহিলা গৃহকর্মীদের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করে যোগ্যকর্মী বাছাই এবং নির্ধারিত প্রশিক্ষণ গ্রহণের মান ও দক্ষতা নিশ্চিত করবে। এতে সউদী আরবে মহিলা গৃহকর্মী প্রেরণে স্বচ্ছতা নিশ্চিত হবে। ২০১৫ সালের ১৪ মে ঢাকায় সউদী সরকারের মন্ত্রী পর্যায়ের সাথে বাংলাদেশের মহিলা গৃহকর্মী প্রেরণ সংক্রান্ত সমঝোতা স্বারক স্বাক্ষরিত হয়। ঐ চুক্তি অনুযায়ী একজন মহিলা গৃহকর্মীর সাথে তার নিকট আত্মীয় একজন পুরুষ কর্মীও বিনা খরচে নেয়ার কথা ছিল। সউদী নিয়োগকারীরা গত ১ বছর যাবত বাংলাদেশ থেকে মহিলা গৃহকর্মী দেদারসে নিচ্ছে। সম্প্রতি সউদী নিয়োগকারীরা মহিলা গৃহকর্মীর সাথে পুরুষ কর্মীর ভিসা ইস্যু করছে। সউদী আরবে কিছু কিছু বাংলাদেশী অভিবাসী নারী কর্মীদের নিয়ে নানা সমস্যার সৃষ্টি হলে রিয়াদস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস কর্তৃপক্ষ এসব সমস্যার দ্রুত সমাধানে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে। গ্রীণল্যান্ড ওভারসীজের স্বত্বাধিকারী মোঃ আব্দুল হাই বলেন, সউদী আরব হচ্ছে আমাদের বরকতের শ্রমবাজার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সউদী’র বাদশাহ’র সাথে দ্বি-পাক্ষিক বৈঠকে জনশক্তি রফতানি সম্প্রসারণের জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ জানিয়েছেন। তিনি বলেন, জনশক্তি রফতানিকারকরা অত্যন্ত আশাবাদী অচিরেই সউদীর শ্রমবাজার উন্মুক্ত হবে ইনশাআল্লাহ।
অঘোষিতভাবে বন্ধকৃত সউদীর শ্রমবাজার পুনরুদ্ধারে সরকার ব্যাপক কূটনৈতিক উদ্যোগ গ্রহণ করে। এর আগে গত ৩১ ডিসেম্বর সউদী সরকার বাংলাদেশ থেকে চিকিৎসক-প্রকৌশলীসহ সব শ্রেণীর কর্মী নিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছিল। ঐ দিন বাংলাদেশের সাথে জনশক্তি রফতানি সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের জন্য সউদী সরকার ঐক্যমত পোষণ করেছিল। সউদী রাজধানী রিয়াদে বাংলাদেশী প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি’র সাথে দ্বি-পাক্ষিক বৈঠকে সউদী শ্রম মন্ত্রী ড. মুফারেরজ বিন সা’দ আল-হকবানী এ আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন। সউদী শ্রম মন্ত্রী বাংলাদেশী কর্মীদের প্রশংসা করে বলেছিলেন, সউদী আরবে কর্মরত বাংলাদেশীরা দেশটির আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। তিনি বলেন, সউদী স্থানীয় আবাসনের কাজ কর্মের জন্য বাংলাদেশী নারী কর্মীর প্রচুর চাহিদা রয়েছে। প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী ঐ সময়ে সউদী আরবে শ্রমবাজার সম্প্রসারণের লক্ষ্যে ৫ সদস্য বিশিষ্ট প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন। দ্বি-পাক্ষিক ঐ বৈঠকে উভয় মন্ত্রী সউদী আরবে জনশক্তি রফতানির বাজার সম্প্রসারণের লক্ষ্যে গত ফেব্রুয়ারী মাসের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের জন্য একমত হয়েছিলেন। এ চুক্তি স্বাক্ষরের মাধ্যমে সউদী আরবে জনশক্তি রফতানির দ্বার পুরোপুরি উন্মুচিত হবার কথা। বিএমইটি’র মহাপরিচালক সেলিম রেজা গতকাল ইনকিলাবের সাথে আলাপকালে সউদী শ্রমবাজার প্রসঙ্গে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সউদী থেকে ঘুরে আসার পর মহিলা গৃহকর্মীর সাথে পুরুষ কর্মীও যাওয়া শুরু হয়েছে। সউদী আরবের অন্যান্য সেক্টরেও বাংলাদেশী কর্মী নেয়ার আভাস পাচ্ছি। শিগগিরই সউদীর শ্রমবাজার পুরোপুরি উন্মুক্ত হবে বলে বিএমইটি’র মহাপরিচালক আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: খুলছে স্বপ্নের দুয়ার
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ