Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

হাজতখানার পরিস্থিতি দেখে মর্মাহত প্রধান বিচারপতি

প্রকাশের সময় : ২১ জুন, ২০১৬, ১২:০০ এএম

বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ড বিষয়ে অফিসিয়ালি এখনো কিছু জানি না -সুরেন্দ্র কুমার সিনহা
স্টাফ রিপোর্টার : ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতের হাজতখানার পরিস্থিতি দেখে ‘মর্মাহত’ হয়েছেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা। গতকাল সোমবার সকালে নিম্ন আদালতে ‘আকস্মিক সফরে’ গিয়ে ঢাকা আইনজীবী সমিতির সম্মেলন কক্ষে বিচারক, আইনজীবী ও সাংবাদিকদের কাছে এসব কথা জানান তিনি।
সাম্প্রতিক সময়ের বিচারবহির্ভূত হত্যাকা-ের বিষয় অফিসিয়ালি এখনো কিছুই জানেন না প্রধান বিচারপতি। তিনি বলেন, বিচারবহির্ভূত হত্যাকা-ের বিষয়ে অফিসিয়ালি এখনো কিছু জানি না। তবে এ ধরনের কোনো বিষয় জানতে পারলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বিচার বিভাগে কোনো প্রকার দুর্নীতিকে প্রশ্রয় না দেয়ার অঙ্গীকারের কথা জানিয়ে সুরেন্দ্র কুমার সিনহা বলেন, ‘কিছু অনিয়ম পেয়েছি। কিন্তু এগুলো আমাদের আভ্যন্তরীণ বিষয়। এ ব্যাপারে কিছু বলব না।’ জজ কোর্টে আসার বিষয়টি নিজের নিরাপত্তাকর্মীকেও বলেননি জানিয়ে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আজকে সারপ্রাইজড ভিজিটে এসেছি’। আমি সকাল ৯টা ১০ মিনিটে সিএমএম আদালতের হাজতখানায় গিয়ে মর্মাহত হয়েছি। ‘সেখানে মহিলাদের যে হাজতখানা সেখানে চারটি মহিলা আসামিসহ চারটি শিশু রয়েছে। শিশুগুলো কোনো অপরাধী না। আমি দায়িত্বপ্রাপ্তদের জিজ্ঞেস করেছি, শিশুগুলো অপরাধী কিনা? এ শিশুরা অপরাধী না হয়েও হাজতখানায় কেন?’
এসব শিশু ভবিষ্যতে প্রধানমন্ত্রী, প্রধান বিচারপতি এমনকি রাষ্ট্রপতিও হতে পারে মন্তব্য করে সুরেন্দ্র কুমার সিনহা বলেন, ‘আমি সুপারিশ করব, হাজতখানার অপরাধীদের সঙ্গে যেন তারাও অপরাধী না হয়ে যায়। তাদের জন্য আলাদা পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হোক।’ ‘রাজধানীতে যে কোর্ট থাকবে তা আমরা বাহিরে উদাহরণ হিসেবে দেখিয়ে দেব। এ কোর্টগুলো দৃষ্টান্ত হবে। এখানে চুল পরিমাণ দুর্নীতির প্রশ্রয় দিতে দেব না,’ বলেন তিনি।
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে অপরাধীরা জামিন পেলে সাক্ষীরা আর নিয়মিত আদালতে আসে নÑ এমন অভিযোগ করে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘তারা ভয়ে থাকেন।’
এসময় এমন অভিযোগ থাকলে আসামির জামিন বাতিল করার জন্য বিচারকদের বলেন তিনি। সাক্ষী অনিয়মিত থাকলে আসামির ভোগান্তির প্রসঙ্গেও কথা বলেন প্রধান বিচারপতি। ‘সাক্ষীরা দীর্ঘদিন আদালতে না আসায় আসামিরা ভোগান্তিতে পড়েন। মামলার বিচার কাজ দীর্ঘায়িত হয়। এগুলো ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট বিচারকদের আইন মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিচ্ছি।’
এসময় প্রধান বিচারপতির সঙ্গে অন্যদের মধ্যে ছিলেন সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল সৈয়দ আমিনুল ইসলাম, হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার দিলজার হোসেন, প্রধান বিচারপতির বিশেষ অফিসার সাব্বির ফয়েজ, ঢাকার জেলা ও দায়রা জজ এসএম কুদ্দুস জামান, মহানগর দায়রা জজ কামরুল হোসেন মোল্লা, মুখ্য মহানগর হাকিম শেখ হাফিজুর রহমান, মুখ্য বিচারিক হাকিম জেসমিন আরা, ঢাকা আইনজীবী সমিতির সভাপতি সাইদুর রহমান মানিক ও সাধারণ সম্পাদক আইয়ুব রহমান। এর আগে সকাল ১০টায় ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতের এজলাসে গিয়ে ঘণ্টাব্যাপী মামলা পরিচালনা দেখেন তিনি।



 

Show all comments
  • Solaiman Ahmed Sumon ২১ জুন, ২০১৬, ৭:১১ এএম says : 0
    মাননীয় প্রধান বিচারপতিকে বলবো রাষ্ট্রের একজন প্রধান বিচারক হিসেবে এভাবে নির্বাহী ক্ষমতার কাছে বিচার বিভাগকে ধ্বংস হতে দিবেন না।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: হাজতখানার পরিস্থিতি দেখে মর্মাহত প্রধান বিচারপতি
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ