Inqilab Logo

শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সোনামসজিদ স্থলবন্দরে ফল আমদানিতে ধস

প্রকাশের সময় : ২১ জুন, ২০১৬, ১২:০০ এএম

শিবগঞ্জ (চাঁপাইনবাবগঞ্জ) সংবাদদাতা : জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের ত্রæটিপূর্ণ নির্দেশের কারণে স্থলবন্দরগুলোর মধ্যে কোনো কোনো বন্দরে সর্বনাশ হচ্ছে, আবার কোনো কোনো বন্দরে পৌষ মাস শুরু হয়েছে। অনুসন্ধানে জানা গেছে, ভারত থেকে একটি ট্রাকে মিশ্র (মিক্স) ফলজাতীয় পণ্য আনা যাবে না। ২০০৫ সালে কমিশনার কাস্টমস রাজশাহী দপ্তর থেকে আবদুল মান্নান পাটুয়ারী কমিশনার কর্তৃক স্বাক্ষরকৃত এরকম একটি নির্দেশনাপত্র দেওয়া হয়েছিল সোনামসজিদ বন্দরে। এর ধারাবাহিকতায় ২০০৬ সালে কাস্টমস রাজশাহী সুলতান মাহমুদ ইকবাল একই নিয়মের আরও একটি পত্র দেন সোনামসজিদ, হিলি, বুড়িমারী, বাংলাবান্দা, বিরল ও রহনপুর স্থলবন্দরে দায়িত্বরত কাস্টমস কর্মকর্তাকে। সেই নির্দেশনা মোতাবেক সোনামসজিদ স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে ট্রাকে কোনো মিক্স ফলজাতীয় পণ্য আসছে না। কোনো সময় মিক্স ফলজাতীয় পণ্য সোনামসজিদ স্থলবন্দরে প্রবেশ করলেও কাস্টমস কর্মকর্তারা যে ফলের রাজস্ব বেশি সেই মোতাবেক একই ট্রাকে থাকা অন্যান্য ফলেও রাজস্ব আদায় করে থাকেন। ফল আমদানীকারকরা এতে মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হয়। ফলে ব্যবসায়ীরা মিক্স করে কোনো ফল আমদানি করতে পারে না। অপরদিকে ভোমরা স্থলবন্দরে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের এই ধরনের কোনো পত্র না থাকায় সেখান দিয়ে অনাসেই আসছে ভারতীয় ট্রাকে মিক্স ফলজাতীয় পণ্য। জানা গেছে, আঙ্গুর ফল আমদানী করে কমলার রাজস্ব দিয়ে পণ্য ছাড় করা হচ্ছে। আমদানীকৃত অঙ্গুরের প্রতি টনের রাজস্ব প্রায় ৪৭ হাজার টাকা। কমলার রাজস্ব প্রতিটন ২৯ হাজার টাকা। ফলে একটি ট্রাকে প্রতিটনে ১০ হাজার টাকা করে রাজস্ব ফাঁকি যাচ্ছে সরকারের। কোনো কোনো সময় ভোমরা বন্দরে একটি ট্রাকে ১০ টন আঙ্গুর ৪ টন কমলা এনে ২ টন আঙ্গুরের রাজস্ব আদায় করে বাকিগুলো কমলা ফলের নিয়ম অনুসারে রাজস্ব আদায় করে থাকে বলে সিএন্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যদের অভিযোগ রয়েছে। আমদানীকৃত ফলের ক্ষেত্রে একই নিয়মনীতি সকল স্থলবন্দরে না থাকায় কোনো কোনো বন্দরে সুযোগ নিয়ে সরকারকে রাজস্ব ফাঁকি দিচ্ছে কাস্টমস কর্মকর্তা, সিএন্ডএফ এজেন্টদেরা। এ ব্যাপারে কাস্টমসের একজন সুপারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ভারত থেকে একই ট্রাকে মিক্স করে ফল জাতীয় পণ্য আমদানী করলে রাজস্ব ফাঁকির সুযোগ নিয়ে থাকে সিএন্ডএফ এজেন্টেরা। তিনি আরও জানান, দেশের সকল বন্দরে ফলসহ বিভিন্ন মিক্স পণ্য ভারত থেকে আনার ক্ষেত্রে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের একই ধরনের নির্দেশনা থাকলে কোন স্থলবন্দরে রাজস্ব ফাঁকির কোনো সুযোগ পাবে না। কিন্তু এক বন্দরে ভারত থেকে ফল আমদানী ক্ষেত্রে বিভিন্ন বন্দরে বিভিন্ন ধরনের নির্দেশনা রয়েছে। সোনামসজিদ সিএন্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যরা জানিয়েছেন, বর্তমানে ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে ব্যাপক হারে ভারত থেকে একই ট্রাকে বিভিন্ন ধরণের ফল আমদানী করে (আঙ্গুর এনে কমলার রাজস্ব দিয়ে ছাড় করা হচ্ছে ওই সব ফলের গাড়ী)। গেল দেড় মাস থেকে সকল প্রকার ফল আমদানি বন্ধ রয়েছে। তবে মে মাসে মাত্র ৩টি লিচু ফলের গাড়ি এ বন্দর প্রবেশ করেছে। উত্তর অঞ্চলে ৩টি বন্দর দিয়ে ফল আমদানী কমে যাওয়ায় গেল ফেব্রæয়ারী মাস থেকে রাজস্ব আয় কমে গেছে। সোনামসজিদ স্থল বন্দরে ফল আমদানী কমে যাওয়ায় নভেম্বর, ডিসেম্বর ও জানুয়ারী মাসের চেয়ে গত ফেব্রæয়ারী মাসে রাজস্ব আয় কমে গেছে। গত ফেব্রæয়ারী মাসে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে প্রায় ৩১ কোটি ২৫ লাখ টাকা বেশি রাজস্ব আয় হয়েছে। সোনামসজিদ স্থল বন্দরে কাস্টমস ও অন্যান্য সংস্থার রাজস্ব আদায়ের ক্ষেত্রে কড়াকড়ি থাকা সত্তে¡ও গত ফেব্রæয়ারী মাসে রাজস্ব আয় হয়েছে ৬০ কোটি ৪৯ লাখ ৩১ হাজার টাকা। রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৫ কোটি ৯২ লাখ টাকা। স্থলবন্দরে দায়িত্বরত একজন কাস্টমস কর্মকর্তা জানান, এ বন্দর দিয়ে ভারত থেকে একই ট্রাকে মিক্স ফল না আসায় রাজস্ব আয় কম হয়েছে। সহকারী কমিশনার কাস্টমস জানান, এখানে কাস্টমস বিভাগ সরকারী বিধি-বিধান মোতাবেক রাজস্ব আদায় করে থাকে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সোনামসজিদ স্থলবন্দরে ফল আমদানিতে ধস
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ