Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতিসত্তার ভিত্তি ধর্মশিক্ষাকে প্রাধান্য দিয়ে শিক্ষানীতি পাঠ্যক্রম হতে হবে -ইসলামিক ফ্রন্ট

প্রকাশের সময় : ২১ জুন, ২০১৬, ১২:০০ এএম

রমজানের পর থেকে সর্বাত্মক আন্দোলন
স্টাফ রিপোর্টার : ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ চেয়ারম্যান আল্লামা সৈয়দ বাহাদুর শাহ্ মোজাদ্দেদী অবিলম্বে শিক্ষানীতি-২০১০, শিক্ষা আইন-২০১৬ ও প্রাথমিক থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত চলমান পাঠক্রম সংশোধন করার দাবি করেছেন। তিনি বলেন, জাতীয় শিক্ষানীতি-২০১০ ও শিক্ষা আইন-২০১৬ এর অধীনে প্রণীত সিলেবাসে বিভিন্ন শ্রেণীর পাঠ্যবই থেকে মহানবীর জীবনচরিতসহ মুসলিম লেখকদের ইসলামি ভাবাদর্শ সম্বলিত গল্প, রচনা ও কবিতা তথা মুসলিম মনিষী ও প-িতদের জীবনালেখ্যকে পরিবর্তন করে স¤পূর্ণ বিপরীতধর্মী এমনিতর কতিপয় বিষয় সংযোজিত করা হয়েছে, যা দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের ঈমান-আকিদা ও ইসলামি মূলবোধের সাথে কোনোভাবেই সংগতিপূর্ণ নয়। বরঞ্চ বর্তমান পাঠ্যক্রমে শিক্ষার্থীদের ইসলামি শিক্ষার প্রতি অধিকতর উদাসীনতা সৃষ্টির অপপ্রয়াস চালানো হয়েছে। এ শিক্ষানীতি ও শিক্ষা আইনের মাধ্যমে পাঠ্যক্রমে সুর্দীঘকাল থেকে প্রচলিত ধর্মীয় শিক্ষার বিষয়টিকে গুরুত্বহীন করে তোলার মাধ্যমে নাস্তিক্যবাদী নীল নকসা বাস্তবায়নের চরম ধৃষ্ঠতা ও প্রদর্শিত হয়েছে। তিনি বলেন, তাবৎ দুনিয়ার ভূখ-গত পরিচিতির মর্মমূলে রয়েছে ধর্ম। তাই জাতিসত্তার অন্যতম ভিত্তি হিসেবে ধর্মশিক্ষাকে প্রাধান্য দিয়েই রাষ্ট্রীয় শিক্ষানীতি প্রণয়ন করা হয়। তিনি আরো বলেন, ধর্মীয় মূল্যবোধের অনুশীলন ও চর্চার মাধ্যমেই একজন শিক্ষার্থী চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের উৎকর্ষতা সাধনের পাশাপাশি খাঁটি ও যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে উঠে। এ কারণেই বিশ্বের দেশে দেশে ধর্মীয় শিক্ষার আলোকেই শিক্ষানীতি প্রণীত হয়েছে। ধর্মীয় শিক্ষা আহরণের জন্য পৃথক স্কুল, কলেজ ছাড়াও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন একটি ক্যাথলিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। যুক্তরাজ্যে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় খ্রিষ্টান ও ইহুদি শিক্ষা ব্যবস্থা চালু আছে। জার্মান ও গ্রিসে অদ্যাবধি অর্থডক্স ও খ্রিষ্টধর্ম শিক্ষা চালু আছে। কানাডায় ক্যাথলিক শিক্ষার জন্য বার্ষিক বাজেটে বাধ্যতামূলক বরাদ্দের প্রতিশন রয়েছে। রাশিয়া ও চীনেও ধর্মভিত্তিক শিক্ষা ব্যবস্থা চালু রয়েছে। সউদী আরবসহ মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়া প্রভৃতি রাষ্ট্র মুসলিম ভিত্তি নিয়েই শিক্ষাধারা টিকে আছে। ভারতের স্বাধীনতা পরবর্তী ধর্ম নিরপেক্ষ শিক্ষা বাস্তবায়নে উদ্যোগ দেয়া হলেও কালক্রমে তা লক্ষভ্রষ্ট হয়। তুরস্কের মতো রাষ্ট্রে ধর্মভিত্তিক শিক্ষা ব্যবস্থার বিরুদ্ধে কামাল আতাতুর্কের সর্বপ্রকার ষড়যন্ত্র ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়। তাই শিক্ষানীতি ২০১০ ও শিক্ষা আইন ২০১৬’তে সংযোজিত ইসলামী ভাবাদর্শ বিরোধী বিষয়সমূহ বাতিল করে অবিলম্বে দেশের খ্যাতনামা শিক্ষাবিদ, ইসলামে স্কলার তথা বিশেষজ্ঞদের সমন্বিত মতামতের ভিত্তিতে নতুন শিক্ষানীতি ২০১৬ প্রণয়নের জন্য সরকারের নিকট জোর দাবি জানান। “জাতীয় শিক্ষানীতি-২০১০ ও শিক্ষা আইন-২০১৬ নাস্তিক্যবাদী ধারা সংযোজন প্রেক্ষিত ধর্ম ও নৈতিকতা বিদ্বেষী পাঠ্যক্রম” শীর্ষক ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর উদ্যোগে গতকাল সোমবার বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাব বলরুমে অনুষ্ঠিত এক সেমিনার ও ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সভাপতির বক্তব্যে আল্লামা খাজা আরিফুর রহমান তাহেরী বলেন, সংশ্লিষ্ট সকলের এ বিষয়ে অনুধাবন করা উচিত যে, ধর্ম ও নৈতিক অনুভূতি আর জঙ্গিবাদ বা উগ্রপন্থা এক নয়। ধর্ম ও নৈতিকতায় জঙ্গিবাদের মধ্যে আকাশ-পাতাল তফাৎ। একথা না বুঝতে পারাটা হবে জাতির বুদ্ধিবৃত্তিক পরাজয়। বরঞ্চ ধর্ম ও নৈতিকতাহীন শিক্ষা আগামী প্রজন্মকে অবক্ষয়ের করাল গ্রাসে নিক্ষেপ করবে। তাই জঙ্গিবাদ দমন করতে হলে জাতিকে ধর্ম ও নৈতিকতার প্রকৃত শিক্ষা অর্জন করতে হবে। নতুন প্রজন্ম ইসলাম কাকে বলে জানবেই না। চলমান পাঠ্যসূচি বাতিলে রমজানের পর সর্বত্র আন্দোলন শুরু করা হবে।
আরও আলোচনায় অংশ নেন ঢাকা মহানগরের সাধারণ স¤পাদক এ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, টাঙ্গাইল মধুপুর দরবার শরীফের পীর সাহেব আল্লামা আবু হানিফ মধুপুরী, মগবাজার হামিদিয়া দরবার শরীফের পীর সাহেব আল্লামা হাবিব উল্লাহ্ বাগদাদী আল ক্বাদেরী, বদরপুর দরবার শরীফের সাজ্জাদানসীন আল্লামা সাইয়িদ আরিফ বিল্লাহ্ রাব্বানী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ প্রভাষক মুহাম্মদ মাসুম বিল্লাহ্, মুফতি আমীমুল ইহসান (র.) ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান সাইয়্যেদ নাঈমুল ইহসান বারাকাতী, এ্যাডভোকেট শাহীদ রিজভী, মনির হোসাইন, নাঈম উদ্দীন, কফিল উদ্দীন রানা ও সৈয়দ আবু ছায়িদ শাফিন প্রমুখ।



 

Show all comments
  • saimum ২১ জুন, ২০১৬, ১২:৩৩ পিএম says : 0
    ইনশা আল্লাহ্‌ এই ইসলাম বিরোধী জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০ বাতিল করতেই হবে
    Total Reply(0) Reply
  • কায়ছার শাহ ২১ জুন, ২০১৬, ১০:২৫ পিএম says : 0
    বামপন্থি নাস্তিক ও ................ ...............দের শকুনী থাবায় ক্ষত বিক্ষত মুসলিম প্রধান বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থা। আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার জন্য ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ ও ইসলামী ছাত্র সেনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: জাতিসত্তার ভিত্তি ধর্মশিক্ষাকে প্রাধান্য দিয়ে শিক্ষানীতি পাঠ্যক্রম হতে হবে -ইসলামিক ফ্রন্ট
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ