Inqilab Logo

বুধবার ২০ নভেম্বর ২০২৪, ০৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

৯০ দিন তদন্তে আলোর সন্ধান পেয়েও কাছে যেতে পারছে না সিআইডি

প্রকাশের সময় : ২১ জুন, ২০১৬, ১২:০০ এএম

সাদিক মামুন, কুমিল্লা থেকে : সোহাগী জাহান তনু হত্যার ঘটনায় নানা নাটকীয়তা সৃষ্টি হতে হতে পার হয়েছে ৯০ দিন। থানা পুলিশ, ডিবি হয়ে সিআইডিতে এসে মামলার তদন্ত আলোর সন্ধান পেলেও কাছে যেতে পারছে না সিআইডির তদন্ত সহায়কদল। ডিএনএ প্রতিবেদনে ধর্ষণের আলামত পাবার পর সন্দেহভাজনদের তালিকাও করেছে সিআইডি। কিন্তু সন্দেহভাজনদের গ্রেফতার বা ডিএনএ পরীক্ষা করতে পারছে না সিআইডি। কারণ ঘটনাটি সেনানিবাসের অভ্যন্তরে সংঘটিত হওয়ায় সিআইডি স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারছে না। এমন আক্ষেপ করেই সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার বলেছেন ‘সন্দেহভাজনদের তালিকা ঘিরে মামলাটির তদন্তে যথেষ্ট অগ্রগতি আসার পরও কাছে যাওয়া যাচ্ছে না।’ সব মিলে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ ছাত্রী ও থিয়েটার সদস্য সোহাগী জাহান তনুর হত্যাকারীরা ৯০ দিনেও অধরা রয়েছে।
শেষ পর্যন্ত তনু হত্যা মামলার ভবিষ্যৎ কোথায় গিয়ে ঠেকবে এমন প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে ৯০ দিনের মাথায় এসে ক্ষোভে ফেটে উঠেছে কুমিল্লার নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি ও বিচারের দাবিতে রাজপথে নেমে আসা আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। গতকাল সোমবার তনু হত্যার ৯০ দিন পার হয়েছে। কিন্তু মামলার অগ্রগতি নিয়ে সিআইডি গণমাধ্যমে পজেটিভ ধারণাই দিয়ে আসছে। সিআইডির তদন্তে তনুর পরিবারসহ আমজনতা খুশি। কিন্তু সন্দেহভাজনদের দোরগোড়ায় পৌঁছানোর পথটির পিচ্ছিলতা কেটে না উঠায় সর্বমহলেই মামলাটির ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা বলছেন, তনু হত্যা মামলাটি জটিল করে তোলার জন্য মূলত দায়ী প্রথম ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক শারমিন সুলতানা।
অন্যদিকে দ্বিতীয় ময়নাতদন্তকারী মেডিকেল বোর্ডের প্রধান ডা. কামদা প্রসাদ সাহা (কেপি সাহা) আড়াই মাস ধরে নানা নাটকীয়তার জন্ম দিয়ে দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের বিতর্কিত প্রতিবেদন দিলেন। আবার প্রতিবেদন দেয়ার পর গণমাধ্যমে বক্তব্য দিলেন একজন অপরাধ বিশেষজ্ঞের মতো। পুলিশের অপরাধ বিভাগকে মামলাটির বিষয়ে ‘জ্ঞান’ দিয়ে কেপি সাহা বললেন ‘মৃত্যুর সঠিক কারণ উদঘাটন করার জন্য পুলিশকে আরও অধিক তদন্তের পথে এগুতে হবে।’ আর ময়নাতদন্ত ঘিরে চিকিৎসকদের ভূমিকা প্রসঙ্গে সিআইডির কুমিল্লা অঞ্চলের বিশেষ পুলিশ সুপার ড. নাজমুল করীম খান বলেছেন, ‘আমরা যদি যার যার অবস্থান থেকে নিজেদের কাজের প্রতি শ্রদ্ধাশীল না হই তাহলে তো জাতি হতাশই হবে।’ আমরা সন্দেহভাজনদের তালিকা করেছি। সন্দেহভাজনদের ডিএনএ পরীক্ষা করাতে পারলেই আমরা একটা লক্ষ্যে পৌঁছে যেতে পারতাম। বিষয়টির খুব কাছাকাছি গিয়েও কাছে যেতে পারছি না। সীমাবদ্ধতাই আমাদের অগ্রগতির পথে অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এখন উপরের সিদ্ধান্তই প্রয়োজন।’
সিআইডি কুমিল্লা অঞ্চলের বিশেষ পুলিশ সুপার ড. নাজমুল করীম খানের এ ধরনের মন্তব্য ও কাজের মাত্রা নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন তনুর পরিবার ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা। সচেতন নাগরিক কমিটি কুমিল্লার সভাপতি আলী আকবর মাসুম বলেন, চিকিৎসকরা অনেক তথ্যই গোপন রেখে তনু হত্যা মামলাটি ঘোলাটে করেছে। এদিকে গতকাল সোমবার দুপুরে নগরীর কান্দিরপাড় পূবালী চত্বরে তনু হত্যার ৯০ দিন পূর্তি ঘিরে কুমিল্লার গণজাগরণ মঞ্চ মানববন্ধন ও সমাবেশের আয়োজন করে। সমাবেশে তনুর মা আনোয়ারা বেগম অভিযোগ করেন,“গত ২৬ মে রাত ৮টার দিকে কুমিল্লা ক্যান্টনম্যান্ট বোর্ডে ডিউটি শেষ করে তনুর বাবা (ইয়ার হোসেন) সেনানিবাসের বাড়িতে ফেরার সময় ‘কুমিল্লা সেনানিবাস’ লেখা একটি বাস দ্রুতগতিতে এসে তাকে ধাক্কা দেয়ার চেষ্টা করে। তনুর বাবা রাস্তার পাশে দ্রুত চলে গেলে তিনি প্রাণে রক্ষা পান। কিন্তু মুহূর্তেই দুইজন আরোহীর একটি মোটর সাইকেল তনুর বাবাকে ধাক্কা দেয়ার চেষ্টা করে। এ সময় তিনি রাস্তার পাশে খাদে পড়ে রক্ষা পান।”



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ৯০ দিন তদন্তে আলোর সন্ধান পেয়েও কাছে যেতে পারছে না সিআইডি
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ