পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
দ্রুত বার্ধক্যজনিত রোগ বা প্রোজেরিয়া আক্রান্ত শিশুদের সনাক্ত করতে ‘ফাইন্ড দ্য চিলড্রেন-১০ ইন বাংলাদেশ উইথ প্রোজেরিয়া’ নামে ক্যাম্পেইন চালু করেছে দ্য প্রোজেরিয়া রিসার্চ ফাউন্ডেশন (পিআরএফ)। এটি বিশে^র একমাত্র প্রতিষ্ঠান যারা প্রোজেরিয়া আক্রান্ত শিশুদের চিকিৎসা ও নিরাময়ের জন্য কাজ করে। শিশুদের দ্রুত বার্ধক্যজনিত জটিল এ রোগের বিষয়ে জনসাধারণসহ স্বাস্থ্যসেবাদানকারীদের সচেতন করার জন্য এ ক্যাম্পেইনের আয়োজন।
বাংলাদেশে প্রোজেরিয়া অক্রান্ত শিশুদের সনাক্ত করতে সকলের সহায়তা প্রত্যাশা করছে প্রতিষ্ঠানটি। যাতে আক্রান্ত শিশুরা চিকিৎসা ও স্বাস্থ্যসেবা নির্দেশিকার মাধ্যমে আরও দীর্ঘদিন ভালোভাবে জীবনযাপন করতে পারে।
হাচিনসন-গিলফোর্ড প্রোজেরিয়া সিন্ড্রোম (এইচজিপিএস) নামে পরিচিত একটি জটিল রোগ হলো প্রোজেরিয়া। এটি বিরল জেনেটিক রোগের মধ্যে একটি গ্রুপ। যার অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো- বয়সের তুলনায় আক্রান্ত শিশুদের অধিক বয়স্ক মনে হয়। এ রোগের ফলে শিশুরা গড়ে ১৪ বছর বয়সে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করে। এছাড়াও প্রোজেরিয়া আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে শরীরের বিভিন্ন জোড়া শক্ত হওয়া, স্বাভাবিক বৃদ্ধি না হওয়া, ওজন কমে যাওয়া এবং চুল ও ত্বক বয়স্ক লোকদের মতো হয়ে যাওয়া লক্ষণগুলো দেখতে পাওয়া যায়। ফলে আক্রান্ত শিশুরা জাতিগতভাবে ভিন্ন থাকলেও সবাইকে প্রায় একই রকম দেখায়।
পিআরএফ এর প্রেসিডেন্ট এবং এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর অড্রে গর্ডন বলেন, আক্রান্ত শিশুদের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে আমরা তাদের খুঁজে বের করতে চাই। তাদের সনাক্ত করে চিকিৎসা সহায়তা করাই হলো ‘ফাইন্ড দ্য চিলড্রেন’ ক্যাম্পেইনের উদ্দেশ্য। প্রোজেরিয়া একটি জটিল রোগ যা অনেকেই বুঝতে পারে না। বাংলাদেশ এমন একটা দেশ যেখানে প্রায় ১৬৫ মিলিয়ন বা ১৬ কোটির বেশি লোক বসবাস করে। পরিসংখ্যানগত দিক বিবেচনা করে আমরা মনে করি, প্রায় ১০ জন প্রোজেরিয়া আক্রান্ত রোগী এখানে রয়েছে। প্রোজেরিয়া আক্রান্ত শিশুদের সনাক্ত করে তাদের চিকিৎসা দেয়া এবং জনসাধারণসহ স্বাস্থ্যসেবাদানকারীদের সচেতন করার জন্য এ ক্যাম্পেইনের আয়োজন করেছি। তাদেরকে চিকিৎসা পরামর্শ দেয়ার পাশাপাশি ক্লিনিক্যালট্রিটমেন্ট ট্রায়ালে অংশগ্রহণের সুযোগ করে বর্তমান অবস্থার উন্নতির জন্য ওষুধের ব্যবস্থা করা হবে।
বর্তমানে বিশে^ প্রায় সাড়ে তিনশ থেকে চারশ শিশু জটিল এ রোগে আক্রান্ত বলে বিশেষজ্ঞরা ধারণা করছে। কিন্তু ২০১৯ সালের অক্টোবর মাস পর্যন্ত মাত্র ১৬১ জন আক্রান্ত শিশুর সন্ধান পেয়েছে দ্য প্রোজেরিয়াা রিসার্চ ফাউন্ডেশন। ফলে প্রায় ২০০ শিশু এর আওতার বাইরে রয়েছে। পরিসংখ্যাতগত দিক বিবেচনা করে বাংলাদেশে প্রায় ১০ জন প্রোজেরিয়া আক্রান্ত রোগী রয়েছে। যাদের এখনও পর্যন্ত সনাক্ত করা যায়নি। গত তিন বছরে বাংলাদেশে তিন জন শিশুকে সনাক্ত করা হয়েছে। বাংলাদেশে বসবাসরত লোকেরা প্রোজেরিয়া আক্রান্ত শিশুদের সনাক্ত করতে সহায়তা করলে খুব সহজে পিআরএফ এ সকল শিশুদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা ও সাহায্য দিতে পারবে।
বিশ^ব্যাপী প্রোজেরিয়াা আক্রান্ত শিশুদের অনুসন্ধান, চিকিৎসা সুপারিশসহ শিশুদের জীবন মান উন্নত করতে পিআরএফ তাদের প্রোগ্রাম ও পরিসেবাগুলো উন্নত করেছে। আক্রান্ত শিশুদের জন্য লোনাফর্নিব অ্যাকসেস (হিউম্যান ক্লিনিক্যালট্রায়ালের মাধ্যমে চিকিৎসা পদ্ধতি) অন্তর্ভুক্ত করেছে। এর মাধ্যমে শিশুরা স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারবে। বর্তমানে পিআরএফ এর অর্থায়নে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বোস্টন শিশু হাসপাতালে আক্রান্ত শিশুদের ক্লিনিক্যাল ড্রাগ ট্রায়ালের মাধ্যমে লোনাফর্নিব সেবা প্রদান করছে।
পিআরএফ এর মেডিকেল ডিরেক্টর ডা. লেসলি বি. গর্ডন বলেন, বাংলাদেশে আমরা যখন প্রোজেরিয়া রোগীর সন্ধান পাবো তখনই তারা পিআরএফ এর আন্তর্জাতিক প্রোজেরিয়া রেজিস্ট্রির অংশ হয়ে যাবে। চিকিৎসা সুপারিশ পাওয়ার পাশাপাশি ক্লিনিক্যাল চিকিৎসা পরীক্ষায় যোগদানের জন্য আমন্ত্রিত হবেন। বাংলাদেশে প্রোজেরিয়া আক্রান্ত প্রতিটি শিশুকে এই সুযোগ দেয়া হলো আমাদের অন্যতম লক্ষ্য। প্রয়োজনীয় সকল ধরনের সাহায্য সহযোগিতা করার জন্য আমাদের প্রথম কাজ হলো এ সকল রোগী ও তাদের পরিবারকে সনাক্ত করা। প্রোজেরিয়া আক্রান্ত সমস্ত শিশুদের চিকিৎসা ও নিরাময়ের জন্য আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। অতএব অনুগ্রহ করে বাংলাদেশে প্রোজেরিয়া আক্রান্ত রোগীদের সনাক্ত করতে আমাদের সহযোগিতা করুন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।