পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
নারায়ণগঞ্জ থেকে স্টাফ রিপোর্টার ঃ নারায়ণগঞ্জে ঈদ বাজাওে ক্রেতাদের ভিড় বাড়তে শুরু করেছে। সেই সাথে জেলা শহর নারায়ণগঞ্জসহ জেলার উপজেলা শহরগুলোর বিভিন্ন মার্কেট ও বিপণী বিতানগুলোতে ভারতীয় পোশাকে সয়লাব হয়ে উঠছে। এসব পোশাকের আগ্রাসনে দেশীয় পোশাকের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে ক্রেতারা।
সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সূত্র জানায়, বিগত বছরগুলোর মতো এ বছরও ভারতীয় পোশাক দিয়ে দোকানপাট সাজানো হয়েছে। দেশের বিভিন্ন সীমান্ত পথ দিয়ে ভারতীয় পণ্য আমদানি করছে চোরাকারবারীরা। অবৈধ পথে এসব পোশাক আসায় একদিকে যেমন সরকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে, অন্যদিকে দেশীয় পোশাকের চাহিদাও দিন দিন কমছে।
নারায়ণগঞ্জ মহানগরীর মার্কটাওয়ার, বেইলী টাওয়ার, সমবায় মার্কেট, ফ্রেন্স মার্কেটসহ বিভিন্ন মার্কেট ও বিপণী বিতান ঘুওে দেখা গেছে, ভারতীয় সিরিয়ালের নামে শাড়ি ও থ্রি-পিসে ভরপুর ছোট-বড় মার্কেটগুলো। বিশেষ করে ফ্যাশন হাউসগুলো ও অভিজাত বিপণী বিতানে এসব কাপড়ের সমাহার চোখে পড়ার মতো। ভারতীয় পোশাকের মধ্যে জলপরি, ইচ্ছেনদী, ফ্লোর টার্চ, কিরণমালা, পারি, ঝিলিক, রাজকন্যা, লাবণ্য, ঝিলমিল, পাটিয়ালি, শঙ্খমালা, নন্দিনি, আঁখি, পাখি, কটকটি, জলনূপুর উল্লেখযোগ্য। বাজারে এসব পোশাকের চাহিদাও বেশি। ব্যবসায়ীরা জানান, ক্রেতা সাধারণের চাহিদার উপরই নির্ভর করে ভারতীয় শাড়ির আধিপত্য ঘটছে। মেয়েদের থ্রি-পিসগুলো সাধারণত ১ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত। ১০ হাজার টাকার বেশি দামেরও রয়েছে।
জনৈক ক্রেতা ওমর ফারুক জানান, ভারতীয় টিভি চ্যানেলের প্রভাব পড়েছে দেশীয় পোশাকের উপর। তার মতে, তরুণী ও মহিলারা ভারতীয় টিভি চ্যানেল স্টার জলশা দেখেই বেশি প্রভাবিত হচ্ছে। ভারতীয় শাড়ি থ্রি-পিসের বাহারি ডিজাইন ভারতীয় টিভি চ্যানেলগুলো প্রদর্শন করায় মহিলারা দেশীয় পোশাকের প্রতি আকর্ষণ হারাচ্ছে।
বিপণী বিতানের এক ব্যবসায়ী জানান, ভারতীয় পোশাকের আধিপত্যের মূল কারণ ভারতীয় টিভি চ্যানেলগুলোর বিভিন্ন ধারাবাহিক নাটক। আবার অনেকেই ভারতীয় কাপড় পছন্দ করেন তাই ব্যবসায়ীরা ঝুঁকি নিয়ে দেশের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে পোশাক আমদানি করছেন। ব্যবসায়ীগণ আরো জানিয়েছেন, ভারতীয় টিভি চ্যানেল প্রদর্শনের ফলে আমাদের তরুণ-তরুণীদের শুধু যে নৈতিক অবক্ষয় ঘটছে তা নয় দেশের অর্থনীতিতেও পড়ছে বিরূপ প্রভাব। ব্যবসায়ীগণ জানিয়েছেন, ভারতে বাংলাদেশের একটি টিভি চ্যানেলও প্রদর্শিত হয় না, সেখানে বাংলাদেশে ভারতীয় টিভি চ্যানেলগুলো প্রদর্শন করা হয় কি কারণে? তারা জানান, অবিলম্বে নেপালের ন্যায় বাংলাদেশেও ভারতের সমস্ত টিভি চ্যানেল বন্ধ করা হোক।
এদিকে এখনো তেমন জমে ওঠেনি ফুটপাতের ঈদ বাজার। পবিত্র মাহে রমজানের ১৩তম দিনে নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন এলাকার ফুটপাত ঘুওে দেখা যায় বেশিরভাগ দোকানে ক্রেতার অপেক্ষায় সময় অতিবাহিত করছেন ফুটপাত ব্যবসায়ীগণ।
বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এখনো ঈদেও বেশ কিছুদিন বাকি। তার ওপর ঈদ সামনে রেখে সরকারি ও বেসরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-বোনাস এখনো হয়নি। এ জন্য ক্রেতাদের ভিড় কম।
আরও কয়েক দিন পর পোশাকশিল্পসহ প্রায় সব প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীরা বেতন-বোনাস পেলে ভিড় বাড়বে ফুটপাতের বাজারে। তবে এরই মধ্যে কম হলেও শুরু হয়ে গেছে ঈদেও কেনাকাটা। বিগত ঈদগুলোতে দেখা গেছে, ঈদ যতই এগিয়ে আসে, জেলার ফুটপাতের ব্যবসায়ীদের ব্যস্ততা ততই বাড়তে থকে। শেষদিকে দম ফেলার ফুরসত থাকে না তাদের।
নারায়ণগঞ্জে ঈদের বাজারের অন্যতম বড় উৎস ফুটপাত। বিত্তবানদের জন্য না হলেও নিম্ন ও নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের ঈদের বাজার অনেকটা ফুটপাতেই সারা হয়। নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবারের সদস্যরা সাধ্যের মধ্যে সেরাটা খুঁজে নেন এই ফুটপাতের দোকান থেকেই।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।