‘বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী একজন মুক্তিযোদ্ধা বীরপ্রতীক ও বাংলাদেশের শীর্ষ ব্যবসায়ী। মুক্তিযোদ্ধা ও ব্যবসায়ী হিসেবে তাকে আমরা সম্মান জানাই। কিন্তু পাটশিল্প পরিচালনায় উনি সম্পূর্ণ ব্যর্থ। ব্যর্থতার দায় নিয়ে তার পদত্যাগ করা উচিত এবং প্রধানমন্ত্রীর কাছে উনার অপসারণ চাচ্ছি। আমরা অচিরেই এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি দেব।’- বাংলাদেশ পাটকল শ্রমিক লীগের সভাপতি মো. মাহবুবুর আলম এসব কথা বলেছেন।
সোমবার দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে পাটকল পরিচালনায় ব্যর্থতার দায়ে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজীর (বীরপ্রতীক) অপসারণ চেয়েছে এ দাবি জানায় তারা।
পাটকল শ্রমিক লীগের সভাপতি বলেন, আমরা মন্ত্রীর সঙ্গে এ পর্যন্ত যতবার দেখা করেছি ততবার মন্ত্রী বলেছেন- আমাদের পাটকল সরকার আর চালাবে না। আপনাদের পাওনা দিয়ে দেয়া হবে। আর পাটকল পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপে (পিপিপি) দেয়া হবে। অথচ প্রধানমন্ত্রী বলেছেন- পাটপণ্যকে কৃষিপণ্যের মর্যাদা দিয়ে সুযোগ-সুবিধা দিতে। তার মানে প্রধানমন্ত্রী পাটশিল্প বাঁচাতে চান আর পাটমন্ত্রী এ শিল্প ধংস করতে চান।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, সরকার ঘোষিত জাতীয় মজুরি কমিশন-২০১৫ রোয়েদাদ রাষ্ট্রায়ত্ত সব খাতে বাস্তবায়ন হলেও বাংলাদেশ পাটকল শ্রমিকরা এ থেকে বঞ্চিত। তাই শ্রমিকরা মজুরি কমিশন-২০১৫ বাস্তবায়নসহ ৯ দফা প্রস্তাব তুলে ধরেন।
এর মধ্যে রয়েছে অবসরপ্রাপ্ত শ্রমিক-কর্মচারীদের পিএফ, গ্র্যাচুইটি ও মৃত শ্রমিকের বীমার বকেয়া প্রদান, পাটশিল্পকে কৃষিশিল্পের মর্যাদা দেয়ার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা বাস্তবায়ন, শ্রমিক-কর্মচারীদের নিয়োগ ও স্থায়ী করা, অব্যবস্থাপনায় মজুতকৃত প্রায় ৬৭৩ কোটি টাকার পাট বিক্রির ব্যবস্থা করা, চাকরিরত অবস্থায় মারা যাওয়া শ্রমিকদের পরিবারকে আইন অনুযায়ী ৩৬ মাসের বেতন পরিশোধ করা।
শ্রমিকদের এসব দাবি বাস্তবায়ন না হলে ধর্মঘটে যাওয়াসহ বিভিন্ন কর্মসূচি ঘোষণা করা হয় সংবাদ সম্মেলনে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে- ৩০ অক্টোবর প্রতিটি মিল গেটে শ্রমিক সমাবেশ। এছাড়া ২ ও ১৮ নভেম্বর প্রতিটি পাটকলে শিফটে শিফটে বিক্ষোভ, ১২ নভেম্বর বিজেএমসির প্রধান কার্যালয় ঘেরাও কর্মসূচি ও ১৩ নভেম্বর জাতীয় প্রেসক্লাবে মানববন্ধন ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অভিমুখে মিছিল ও স্মারকলিপি প্রদান।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ পাটকল শ্রমিক লীগের সহ-সভাপতি ফরাজী নজরুল ইসলাম, মোহম্মদ আলী, আক্তারুজ্জামান, হেমায়েত উদ্দিন আজাদী প্রমুখ।