পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
একজন ইন্ডিয়ার দালাল হলেও ১৬ কোটি মানুষ তা হবে না -শফিউল আলম প্রধান
স্টাফ রিপোর্টার : বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া বলেছেন, হাসিনা প্রধানমন্ত্রী নন, নামে প্রধানমন্ত্রী। তাকে প্রধানমন্ত্রী বলা যায় না। দেশের বর্তমান অবস্থা থেকে উত্তরণে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বানও জানান সাবেক প্রধানমন্ত্রী। রাজধানীর হোটেল পূর্বাণীতে জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) উদ্যোগে ইফতার অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
বেগম খালেদা জিয়া বলেন, বাংলাদেশে আজকে তিনি (শেখ হাসিনা) যে বসে আছেন, তিনি কি দেশের প্রধানমন্ত্রী নাকি তিনি অন্য কোনো মন্ত্রী হিসেবে আছেন, সেটা বলা মুশকিল। আজকে দেশের মানুষ মনে করে তিনি (শেখ হাসিনা) প্রধানমন্ত্রী নন, তিনি নামে প্রধানমন্ত্রী। তিনি অন্যের নির্দেশ পালন করেন। কাজেই তাকে প্রধানমন্ত্রী বলা যায় না।
সাম্প্রতিক বিভিন্ন ক্রসফায়ার ও বন্দুকযুদ্ধে নিহত হওয়া ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে খালেদা জিয়া বলেন, প্রথমে অপরাধীদের ধরে জেলখানায় নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর সেই অপরাধীরা রিমান্ড থেকে আর জেলখানা বা তাদের মা-বাবার কাছে ফিরে যায় না। সে সোজা চলে যায় ক্রসফায়ারে। সে এমন কিছু তথ্য দিয়ে দেয়, যার ফলে দেখা যাবে সরকারই জড়িয়ে যাবে। সেজন্য তাকে তখন ক্রসফায়ারে দেয়া হয়। এই পবিত্র রমজান মাসে এটি হচ্ছে। তাহলে বলুন, আজকে কী হচ্ছে দেশে? আজকে তারা জোর করে ক্ষমতায় বসে আছে, তারা জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধি নয়।
বিনা ওয়ারেন্টে গ্রেফতারের ওপর সম্প্রতি জারি হওয়া হাইকোর্টের নির্দেশনার কথা উল্লেখ করে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বলেন, আদালত নির্দেশ দিয়েছেন কাউকে বিনা ওয়ারেন্টে ধরতে পারবে না। সাদা পোশাকে লোকজন কেউ কিন্তু রাতের বেলা কাউকে গ্রেফতার করতে পারবে না। সেই নির্দেশও মানা হচ্ছে না। এরা আদালতের নির্দেশ পর্যন্ত মানে না। উল্টো তারা আদালতকে নির্দেশ দেয়, আদেশ দেয় যে তাদেরকে কী করতে হবে, কী করতে হবে না। এই হচ্ছে দেশের অবস্থা।
সাংবাদিক দম্পত্তি সাগর-রুনীসহ বিভিন্ন সংঘটিত হত্যাকা-ের কোনো আসামী ধরা না পড়ায় খালেদা জিয়া বলেন, সাগর-রুনীকে হত্যা করা হয়েছে। তাদের ল্যাপটপে এমন কিছু ছিল যাতে সরকারের গোপন তথ্য বেরিয়ে আসত। তাই তাদের মেরে সেই ল্যাপটপ চুরি করে নিয়ে গেছে।
বিএনপি প্রধান বলেন, দেশে আজ কারো কোনো নিরাপত্তা নেই, কারও কোনো অধিকার নেই। বাংলাদেশের জন্য যে লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে আমরা যুদ্ধ করেছিলাম, মুক্তিযুদ্ধের সেই উদ্দেশ্য ও মুক্তিযুদ্ধের মূল লক্ষ্য আমাদের সামনে নেই। গণতন্ত্র, ন্যায় বিচার, সকলের সমান অধিকার, মানুষের নিরাপত্তাÑকোনোটাই নেই।
এর আগে বর্তমান সরকারকে জালেম আখ্যা দিয়ে সভাপতির বক্তব্যে জাগপার শফিউল আলম প্রধান বলেন, পবিত্র রমজান মাসে ধর্মপ্রাণ মানুষ শান্তিতে সেহরী-ইফতারও করতে পারছে না। সাঁড়াশি অভিযানের নামে তাদের গ্রেফতার করে নিয়ে যাচ্ছে।
জাগপা প্রধান বলেন, দেশ নিয়ে গভীর ষড়যন্ত্র হচ্ছে। এই রমজান মাসে আমার স্বাধীনতাকে মাত্র ১৯২ টাকায় বিক্রি করে দিয়েছে। ইন্ডিয়াকেও মনে রাখতে হবে, সুজাতা সিংকে দিয়ে একজনকে দালাল বানাতে পারলেও ১৬ কোটি মানুষকে দালাল বানাতে পারবে না ইনশাল্লাহ।
তিনি বলেন, বিএনপি চেয়ারপার্সনকে সাজা দিয়ে জেলে পুরার চক্রান্ত হচ্ছে। বেগম খালেদা জিয়াকে গ্রেফতার করা হলে দেশের মানুষ স্বেচ্ছায় কারাবরণ করবে বলেও হুশিয়ারি দেন সাবেক এই ছাত্রলীগ নেতা।
তিনি বলেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের পুত্র আরাফাত রহমান কোকোকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। সারা দেশে হাজার হাজার মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। মাহমুদুর রহমানসহ বরেণ্য সাংবাদিকদের কারাবন্দি করা হয়েছে। জালেম শাহী সরকারকে আল্লাহ বিদায় করবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
বক্তব্যের পর বেগম খালেদা জিয়া জাগপার সভাপতি শফিউল আলম প্রধান, সাধারণ সম্পাদক খন্দকার লুৎফর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুর রহমান খান, কল্যাণ পার্টির সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, জামায়াতে ইসলামীর আবদুল হালিম, ইসলামী ঐক্যজোটের অ্যাডভোকেট এম এ রকীব ও খেলাফত সৈয়দ মজিবুর রহমান পেশোয়ারীকে নিয়ে এক টেবিলে বসে ইফতার করেন।
এছাড়া আরো ছিলেন জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, আহসান হাবিব লিংকন, এলডিপির রেদোয়ান আহমেদ, সাহাদাত হোসেন সেলিম, এনপিপির ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, মুস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা, জামায়াতে ইসলামীর শামীম সাঈদী, লেবার পার্টির মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, হামদুল্লাহ আল মেহেদি, ন্যাপের জেবেল রহমান গনি, গোলাম মোস্তফা ভুঁইয়া, ইসলামী ঐক্যজোটের মাওলানা আবদুল করীম খান, কল্যাণ পার্টির এমএম আমিনুর রহমান, সাম্যবাদী দলের সাঈদ আহমেদ, পিপলস লীগের গরীবে নেওয়াজ, সৈয়দ মাহবুব হোসেন, ভাসানীর আজহারুল ইসলাম, ডিএল‘র সাইফুদ্দিন আহমেদ মনি, মুসলিম লীগের এএইচএম কামারুজ্জামান খান, শেখ জুলফিকার বুলবুল চৌধুরী, ইসলামিক পার্টির আবু তাহের চৌধুরী, আবুল কাশেম, বিজেপির সালাহউদ্দিন মতিন প্রকাশ, এনডিপির মঞ্জুর হোসেন ঈসা।
বিএনপির আসম হান্নান শাহ, মাহবুবুর রহমান, খন্দকার মাহবুব হোসেন, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবীর খোকন, রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, নুরী আরা সাফা, আবেদ রাজা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সুকোমল বড়ুযা, দৈনিক ইনকিলাবের সম্পাদক এএমএম বাহাউদ্দীন, নয়া দিগন্তের সম্পাদক আলমগীর মহিউদ্দিন, ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের একাংশের নেতা এম এ আজিজ, শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্যজোটের অধ্যক্ষ সেলিম ভুঁইয়া প্রমুখ ইফতারে ছিলেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।