Inqilab Logo

শুক্রবার, ০৫ জুলাই ২০২৪, ২১ আষাঢ় ১৪৩১, ২৮ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

কিলারদের খুন করে প্রমাণ আড়াল করছে সরকার : ইমরান

প্রকাশের সময় : ১৯ জুন, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : একদিকে সিরিয়াল খুনিদের সাজা মওকুফ করা হচ্ছে, অন্যদিকে জনতার হাতে ধরা পরা টার্গেট কিলারদের খুন করে প্রমাণ আড়াল করা হচ্ছে। মাদারীপুরে শিক্ষকের ওপর হামলার সময় হাতেনাতে গ্রেফতার গোলাম ফাইজুল্লাহ ফাহিমের কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হওয়ার দিকে ইঙ্গিত করে গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকার গতকাল (শনিবার) তার ফেসবুকের একটি পোস্টে এমন কথা লিখেন।
ওই পোস্টে তিনি লিখেন, “একদিকে সরকার নিজ দলীয় সিরিয়াল খুনিদের ফাঁসিসহ সব সাজা মওকূফ করে দিয়ে জেল থেকে মুক্ত করছে। অন্যদিকে জনতার হাতে ধরা পরা টার্গেট কিলারদের খুন করে সব প্রমাণ আড়াল করছে! তাহলে সাধারণ মানুষ যাবে কোথায়? এর নাম কি ন্যায়বিচার? এটাই কি ৩০ লাখ মানুষের রক্তে অর্জিত আমার মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ” এর আগে একটি পোস্টে ক্ষমতাসীন দলের নিজস্ব খুনিদের একটা করে খুনের লাইসেন্স বিলি করতে বলেছেন ইমরান এইচ সরকার।
লক্ষ্মীপুরে আওয়ামী লীগ নেতা আবু তাহেরের পুত্র বিপ্লবকে জেল থেকে বের করার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ জানিয়ে ফেসবুকে ওই পোস্টটি প্রকাশ করেন তিনি। লক্ষ্মীপুর জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এ্যাডভোকেট নুরুল ইসলাম হত্যা মামলায় মৃত্যুদ-প্রাপ্ত  বিপ্লবকে ২০১২ সালে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান ক্ষমা কওে দেন। বর্তমানে তিনি শিবির নেতা মহসিন ও যুবদল নেতা ফিরোজ হত্যা মামলায় কারাভোগ করছেন ।
এ প্রসঙ্গে ইমরান লিখেছিলেন, “আমি একটা অনুরোধ করি, এভাবে কষ্ট করে আপনাদের ক্ষমা করার দরকার নাই। মগের মুল্লুকের রাজাদের কষ্ট হোক সেটা আমরা চাই না। প্রয়োজনে আপনারা নিজস্ব খুনিদের একটা করে লাইসেন্স বিলি করুন। খুনের লাইসেন্স! হ্যাঁ, খুনের লাইসেন্স!! এই লাইসেন্সধারীরা খুন করলে কোনো মামলাই করার দরকার নাই।”
শনিবার প্রকাশ করা পোস্টে তিনি লিখেন, “খুন যেই করুক না কেন সে খুনি। জঙ্গি করুক, সন্ত্রাসী করুক কিংবা রাষ্ট্র করুক; সে খুনি। এখানে তবে-কিন্তুর কোনো অবকাশ নেই। একজন বোধ-বিবেচনাসম্পন্ন মানুষের কোনো খুনই সমর্থনের সুযোগ নেই।
কোনো খুনি কিংবা সন্ত্রাসী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য এ দেশের ৩০ লক্ষ মানুষ আত্মত্যাগ করেনি। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা মানে খুনি কিংবা নিপীড়ক রাষ্ট্র নয়। মুক্তিযুদ্ধেও ঘোষণাপত্রে পরিষ্কারভাবেই ন্যায়বিচারের কথা বলা হয়েছে।
একজন খুনিকে হত্যার মধ্যদিয়ে সবচেয়ে বেশি অবিচার করা হয় খুন হওয়া মানুষগুলোর স্বজনদের সাথে। কেননা, অপরাধীকে খুনের মাধ্যমে পরিবারটির ন্যায়বিচার পাবার আর কোনো সম্ভাবনাই থাকে না।
হাতেনাতে আটক হওয়া খুনিকে হত্যার আরো গুরুত্বপূর্ণ দিক হচ্ছে, এইসব খুনির বিরুদ্ধে প্রমাণ থাকে এবং ন্যায়বিচার পাওয়া সহজ হ্য়। বরং এইসব ক্ষেত্রে চলমান হত্যাকা-ের রহস্য উদ্ঘাটনের সুযোগ থাকে। তাহলে প্রশ্ন আসে ঠিক কি কারণে তাহলে এমন অপরাধীকে হত্যা করা হলো? কাকে আড়াল করতে এই হত্যাকা-?”
জঙ্গি টিকিয়ে রেখে সুবিধা পেতে চায়
অন্যদিকে মাদারীপুরে শিক্ষক হত্যাচেষ্টায় গ্রেপ্তার ফয়জুল্লাহ ফাহিম রিমান্ডে থাকা অবস্থায় ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হওয়ার ঘটনার পরপরই ফেসবুকে ঘটনাটি নিয়ে এক মন্তব্য করেছেন সাপ্তাহিকের সম্পাদক গোলাম মোর্তজা।
তিনি লিখেছেন, রাজনৈতিক বক্তৃতায় যে কাউকে অভিযুক্ত করা যায়। নিজেরা ধরতে পারি না, জনগণ ধরে দেয়। তাদের ক্রসফায়ারে বা বন্দুকযুদ্ধে হত্যা করা হয়। এমন একটি হত্যাকা- যে ঘটতে যাচ্ছে, অভিযানের ধরনে তা প্রত্যাশিতই ছিল।
তিনি আরো লিখেছেনÑ কারা জঙ্গি, কারা তৈরি করে, কারা পৃষ্ঠপোষক, কারা জঙ্গি-গুপ্তহত্যা টিকিয়ে রেখে সুবিধা পেতে চায়Ñ সব প্রশ্নের উত্তর আছে এই একটি হত্যাকা-ের মধ্যে। ফেসবুকে দেয়া গোলাম মোর্তোজার এই স্ট্যাটাসে বিনু মাহবুবা নামের একজন তার মন্তব্য প্রকাশ করে লিখেছেন, যাদের কাছেই তথ্য থাকে তারাই বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়।
এম জাকির হোসাইন খান নামের আরো একজন স্ট্যাটাসটি পড়ে মন্তব্য করেছেন, রাষ্ট্রের নাগরিকদের হত্যা করে অনৈতিক শাসন প্রলম্বিত করা যায়, কিন্তু দীর্ঘকাল টিকিয়ে রাখা যায় না।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: কিলারদের খুন করে প্রমাণ আড়াল করছে সরকার : ইমরান
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ