পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের ইফতার মাহফিলে বিভিন্ন ইসলামী দলের নেতৃবৃন্দ সরকারের উদ্দেশে বলেছেন, পবিত্র রমজানকে সম্মান করতে শিখুন, লাগামছাড়া দ্রব্যমূল্য কমান, নিরপরাধ গ্রেফতারকৃতদের মুক্তি দিন, হিন্দুত্ববাদী ও নাস্তিকদের পাঠ্যসূচী বাতিল করুন। আর যারা বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বাধানোর চক্রান্ত করছে ও দাঙ্গার উস্কানি দিচ্ছে এবং ভারতের হস্তক্ষেপ কামনা করছেÑ তাদের চিহ্নিত করে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগে বিচার করুন। নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, যারা এদেশে ভারতের আগ্রাসনের উস্কানি দিচ্ছে তারা রামকৃষ্ণ মিশনের ধর্মগুরুকে হত্যার হুমকি দিয়ে বাংলাদেশে ভারতের হস্তক্ষেপের পরিবেশ তৈরি করার ষড়যন্ত্র করছে। তাদের এ হস্তক্ষেপ কামনার সর্বশেষ ফলাফল হচ্ছে রামকৃষ্ণ মিশনের ধর্মগুরুর হত্যার হুমকির বিষয়ে মোদি ও মমতার উদ্বেগ প্রকাশ। চক্রান্তকারীরা এটাই চাচ্ছে। তবে মৌখিকভাবে নয়, সরাসরি হস্তক্ষেপের মাধ্যমে।
তারা আরো বলেন, ভারতের এটা জানা থাকা দরকার এদেশ সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানদের দেশ। এদেশের রাজনীতি ও ধর্মীয় ঐতিহ্য পুনরায় স্মরণ করিয়ে নেয়া ভালো। তা না হলে বাংলাদেশের উপর কোনো আগ্রাসন চালালে আগ্রাসীকে কোন জায়গায় নিয়ে যাবে তা ইতিহাসই বলে দেবে। এদেশ আলেম-উলামা ওলি আউলিয়াদের পদচারণায় পুণ্যভূমি। এ ভূখ-ে (বাংলাদেশ) আঘাত করে অতীতে কেউ পার পায়নি, ভবিষ্যতেও পার পাবে না।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে আল্লামা আশরাফ আলী বলেন, কিছুদিন পূর্বে এক মিটিংয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন, শিক্ষানীতিতে ইসলাম বিরোধী কিছু নেই। শিক্ষামন্ত্রী এরূপ অসত্য কথা বলতে পারেন না। দেশের উলামায়ে কেরাম ও ইসলামী স্কলারগণ শিক্ষানীতিকে ইসলাম বিরোধী ও ধর্মহীন বলে এর প্রতিবাদ করেছে। কিন্তু উনারা তার কোনো কর্ণপাত করছে না। উল্টো পাঠ্যসূচীতে শিরক, কুফরী ও হিন্দুত্ববাদ বিষয় ঢুকানো হয়েছে। বর্তমান শিক্ষনীতি ও শিক্ষা আইন ঈমান হরণ ও জাতির মেরুদ- ভাঙ্গার শক্ত হাতিয়ার। এই শিক্ষানীতি, শিক্ষা আইন ও পাঠ্য পুস্তক থাকলে ঈমান হারা করে আগামী প্রজন্ম হিন্দু ও নাস্তিকে পরিণত হবে। এটা দেশ ও ইসলাম ধর্মের বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্র। ৯২% মুসলমানের দেশে তা বাস্তবায়ন হতে দেয়া যায় না। সুতরাং সকল মুসলমানদের কর্তব্য তাদের আগামী প্রজন্মকে রক্ষা করতে ধর্মহীন শিক্ষানীতি, নৈতিকতা বিবর্জিত শিক্ষা আইন ও হিন্দুত্ববাদের পাঠ্যসূচীর বিরুদ্ধে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলা।
গতকাল বিকেলে মতিঝিলস্থ রহমানিয়া রুফটফ রেস্টুরেন্টে রাজনীতিবিদ, উলামায়ে কেরাম ও বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সম্মানে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিলে সভাপতির বক্তব্য রাখেন আল্লামা আশরাফ আলী। দলের মহাসচিব মাওলানা মাহফুজুল হকের পরিচালনায় আরো বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের আমীরে শরিয়ত মাওলানা শাহ আতাউল্লাহ, ইসলামী ঐক্য আন্দোলনের আমীর ড. মাওলানা ঈসা শাহেদী, দলের সিনিয়র নায়েবে আমীর মাওলানা ইসমাইল নুরপুরী, জামিয়া মোহাম্মদিয়া মোহাম্মদপুরের প্রিন্সিপাল মাওলানা আবুল কালাম, জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়ার প্রধান মুফতি মাওলানা হিফজুর রহমান, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের নায়েবে আমীর মাওলানা খুরশিদ আলম কাসেমী, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের সহ-সভাপতি মাওলানা শেখ মুজিবুর রহমান, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের মহাসচিব কাজী আবুল খায়ের, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক, মাওলানা জালালুদ্দিন আহমাদ, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা এটি এম হেমায়েত উদ্দীন, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী, নিউ নেশনের সাবেক সম্পাদক মোস্তফা কামাল মজুমদার, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আবু সাঈদ নোমান, মাওলানা কোরবান আলী, বায়তুলমাল সম্পাদক মাওলানা আতাউল্লাহ আমীন, প্রচার প্রকাশনা ও অফিস সম্পাদক মাওলানা আজিজুর রহমান হেলাল, নির্বাহী সদস্য মুহাম্মদ সাহাবুদ্দীন, হাফেজ শহীদুর রহমান, মুফতী হাসান মুরাদাবাদী, ঢাকা মহানগর সাধারণ সম্পাদক মাওলানা এনামুল হক মূসা, ছাত্র মজলিসের কেন্দ্রীয় সভাপতি মুহাম্মদ হারুনুর রশীদ ও সেক্রেটারী জেনারেল মুহাম্মদ আব্দুর রহীম সাঈদ প্রমুখ ।
মাওলানা শাহ আতাউল্লাহ বলেছেন, রমজানের শিক্ষা হল সত্য মিথ্যার লড়াইয়ে সত্যের পক্ষে মুমিনরা নিজেদের জান এবং মালকে আল্লাহর রাস্তায় বিলীন করে দিবে। এ থেকে বিরত থাকলে রমজানের হক আদায় হবে না।
মাওলানা মাহফুজুল হক বলেন, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্ত ও অভিনেতা পীযুষ বন্দোপধ্যায় বাংলাদেশের হিন্দুদের স্বার্থ সুরক্ষার জন্য ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির হস্তক্ষেপ কামনাকে দেশদ্রোহী হিসেবে আখ্যায়িত করে বলেন, যারা বাংলাদেশে বসবাস করে অন্যদেশের হস্তক্ষেপ চায়, তারা দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বকে ধ্বংস করে দেশকে ভারতের করদ রাজ্যে পরিণত করার ষড়যন্ত্র করছে। এমনি পরিস্থিতিতে ঢাকার রামকৃষ্ণ মিশনের ধর্মগুরুকে হত্যার হুমকি দিয়ে মোদির হস্তক্ষেপের পরিবেশ তৈরীর চক্রান্ত রয়েছে বলে দেশের মানুষ মনে করে। দেশের তাওহীদি জনতা এ চক্রান্তের বিরুদ্ধে গণপ্রতিরোধ গড়ে তুলবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।