পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ডেডলাইন কক্সবাজার
কক্সবাজার অফিস : কক্সবাজারে পাহাড় কাটা থামছে না কিছুতেই। একদিকে কক্সবাজারের পাহাড়গুলো দখল করে নিচ্ছে অবৈধ বসবাসকারী রোহিঙ্গারা। অন্যদিকে বিভিন্ন ভূঁইফোড় সংগঠন ও সমিতির নামে সরকারী দলের নেতা-কর্মীরা দখল করে নিচ্ছে কক্সবাজারের বিস্তর পাহাড় ও বনভূমি। অভিযোগ উঠেছে, সরকারী কর্মকর্তাদের অবৈধ সুযোগ সুবিধা দিয়ে ওসব পাহাড়ে গড়ে তোলা হচ্ছে অবৈধ স্থাপনা।
শহরের সৈকতপাড়া এলাকায় কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের মালিকানাধীন ৩টি পাহাড় কেটে তৈরী করা হচ্ছে আবাসিক প্লট। ওই পাহাড়ে এর আগেও একবার দখল করে আবাসন প্রকল্প গড়ে তুলেছিল একটি সিন্ডিকেট। এ নিয়ে পত্র-পত্রিকায় লেখালেখি হলে জেলা প্রশাসন সেখানে উচ্ছেদ করে সেখানে নির্মিত স্থাপনা। কিন্তু উচ্ছেদ অভিযানের পর আর ওই পাহাড়ের খবর রাখেননি জেলা প্রশাসন। এই সুযোগে বেপেরোয়া পাহাড় খেকোর দল আবারো দখলে নেয় ওই পাহাড় ৩ টি। গড়ে তোলে শতাধিক ঘরবাড়ি। অভিযোগ উঠেছে, পরিবেশ অধিদপ্তরের বড়কর্তাকে ‘ম্যানেজ’ করে সৈকত পাড়ার পাশের ৩ টি পাহাড় কেটে প্লট তৈরি করছেন কক্সবাজার শহর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আবদুর রহমান ও তার সাঙ্গ-পাঙ্গরা। শহরের ৭০ জনের সমন্বয়ে গড়ে উঠা ওই সিন্ডিকেটে রয়েছেন শহর স্বেচ্ছাসেবক লীগের আরো অনেক নেতা, পরিবেশের অধিদপ্তরের বড়বাবু, কিছু সাংবাদিক, সাবেক সরকারি কর্মকর্তা ও স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিবর্গ।
সরেজমিনে পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায়, ৩টি পাহাড়ের বিশাল অংশ কেটে সমতল করা হয়েছে। সেখানে তৈরি হয়েছে অসংখ্য টিনের ঘর। অধিকাংশ ঘরে বসতি স্থাপন করেছে রোহিঙ্গা ও শহরের চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা। স্থাপন করা হয়েছে গভীর নলকূপ। পালাক্রমে পাহারা বসানো হয়েছে সেখানে। সার্বক্ষণিক পাহারাদার হিসেবে রয়েছে স্থানীয় আবু সালেহ।
এ বিষয়ে সমিতির ক্যাশিয়ার মোবারক জানান, উচ্ছেদের পরও কিছু স্থাপনা তৈরি করা হয়েছে। সেখানে সমিতির প্রত্যেক সদস্যকে প্লট দেয়া হয়েছে। তবে সমিতিতে কে কে আছেন তা তিনি জানেন না। পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালকের ব্যক্তিগত কর্মচারী ও নুনিয়ারছড়ার বাসিন্দা স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মো. আলম জানান, সেখানে তার প্লট রয়েছে। তবে তার স্যারের নামে কোন প্লট নেই। কিন্তু ওখানে প্লট রয়েছে এমন একটি সূত্র জানায়, সরদার শরিফুর ইসলামের নামে প্রথম পাহাড়ে প্লট বরাদ্দ রয়েছে। ওই প্লটের দখল বুঝে নিয়েছেন আলম। বিষয়টি সর্দার শরিফুলও জানেন।
তবে পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক সরদার শরিফুল ইসলাম জানান, সেখানে তার কোন প্লট নেই। এটি তার বিরুদ্ধে ওই সিন্ডিকেটের অপপ্রচার মাত্র।
পাহাড় দখলে নেতৃত্বদানকারী শহর স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি আব্দুর রহমান জানান, সমিতির উন্নয়নের জন্য ওখানে প্লট তৈরি করা হচ্ছে। জেলার বাইরে থেকে আগতরা পুরো কক্সবাজার গিলে খাচ্ছে। কিন্তু এখানকার স্থানীয়দের বসবাসের জায়গাও নেই। তাই কিছু মানুষের বাসস্থানের জন্যই ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
এদিকে প্রশাসন একদফা দখল মুক্ত হওয়ার পর আবারো দখল হওয়ার জন্য পরিবেশ অধিদপ্তরকে দায়ী করেছেন জেলার সচেতন মহল। তাদের মতে, দখলদারদের বিরুদ্ধে মামলা না করে তাদেরকে পাহাড় কাটতে উৎসাহিত করা হয়েছে।
এ বিষয়ে কক্সবাজারের পরিবেশ সচেতন অনেকেই জানান, কক্সবাজারে পাহাড় ও বন ধ্বংস হওয়ার জন্য দায়ী সরদার শরিফুল ইসলাম। সৈকত পাড়ায় পাহাড় দখলে অনৈতিক সুবিধা নিয়ে ওই কর্মকর্তা দখলকারীদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেননি বলেও তদের অভিযোগ।
কক্সবাজার বন ও পরিবেশ সংরক্ষণ পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি সাংবাদিক দীপক শর্মা জানান, প্রথম দফায় পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে ওই সিন্ডিকেটের বিপক্ষে মামলা করা হলে দ্বিতীয়বার দখল করার দুঃসাহস দেখাতো না দখলকারীরা। তিনি আরো জানান, পরিবেশ অধিদপ্তরের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদদেই শহর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আব্দুর রহমান ওই ধ্বংসযজ্ঞ চালাচ্ছেন।
কক্সবাজার পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক সরদার শরিফুল ইসলাম জানান, অতীতে ওই পাহাড়ে স্থাপনা নির্মাণকারীদের বিরুদ্ধে অনেকগুলো মামলা থাকায় নতুন মামলা করা হয়নি। যেহেতু আবারো স্থাপনা করা হয়েছে। তাই এবার মামলা করা হবে।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো. আলী হোসেন জানান, সেখানে আবারো উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করবে। নতুন পুরাতন সকল স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে। এছাড়া দখলকারীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরও করা হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।