পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপর নির্যাতনের ঘটনা ‘বেড়ে চললেও’ তাদের নিরাপত্তায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার কোনো ভূমিকা রাখছে না বলে অভিযোগ করেছে জাতীয় হিন্দু মহাজোট। রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে ‘হিন্দু সম্প্রদায়ের খুন, জখম, শ্লীলতাহানি, অত্যাচার, সম্পত্তি দখল, মন্দির-প্রতিমা ভাংচুর’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে গতকাল এ অভিযোগ করে সংগঠনটি। দেশের বিভিন্ন স্থানে হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর নির্যাতনের চিত্র তুলে ধরে সরকারের বিরুদ্ধে এসব খবর ‘ধাপাচাপা’ দেওয়ার অভিযোগ তোলেন হিন্দু মহাজোট নেতারা।
সংগঠনটির মহাসচিব গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক বলেন, সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর নির্যাতন বেড়ে চলছে, প্রধানমন্ত্রী হিন্দু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তার জন্য কোনো ভূমিকা রাখেননি বা অঙ্গীকার ব্যক্ত করেনি।
হিন্দুদের অত্যাচার-নির্যাতন করে দেশত্যাগে বাধ্য করা হচ্ছে অভিযোগ করে অনুষ্ঠানে ‘প্রতিরোধ’ গড়ে তোলার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন হিন্দু মহাজোট নেতারা। হিন্দু মহাজোটের আন্তর্জাতিক সম্পাদক রিপন দে বলেন, আমাদের উৎখাতে রাষ্ট্রীয় ষড়যন্ত্র হচ্ছে। আমাদের অস্তিত্ব রক্ষা করতে হবে। সরকার সব বিষয় জেনেও ব্যবস্থা নিচ্ছে না। মনে রাখতে হবে হিন্দু না থাকলে বাংলাদেশও থাকবে না, আমাদের দায়িত্ব আমাদেরই নিতে হবে।
সংগঠনটির মহিলা বিষয়ক সম্পাদক প্রতিভা বাগচী বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে কতজন দেশ ছেড়েছে তার পরিসংখ্যান আমাদের (কাছে) নেই, (খুঁজে) বের করতে হবে। সরকার যতই ধামাচাপা দিক আমাদের রক্ষা আমাদেরই করতে হবে।
হিন্দুদের ওপর সম্প্রতি বেশ কয়েকটি হামলার পর ‘তাদের দুই নেতা’ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে ‘হিন্দুদের নিরাপত্তার জন্য হস্তক্ষেপ’ চেয়েছেন বলে প্রেস ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়ার বরাতে খবর দিয়েছে বিভিন্ন ভারতীয় সংবাদপত্র। তবে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের রক্ষায় প্রতিবেশী কোনো রাষ্ট্রনায়কের কাছে ‘আর্জি জানানোর দরকার নেই’ মন্তব্য করে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেছেন, এজন্য বর্তমান সরকারই ‘যথেষ্ট’।
‘ঢাকা শহরের অবস্থা খুবই খারাপ’ বলে সংবাদ সম্মেলনে অসহায়ত্ব প্রকাশ করেন হিন্দু মহাজোট ঢাকা অঞ্চলের ভাইস প্রেসিডেন্ট শুভাস সাহা। তিনি বলেন, ঢাকেশ্বরী মন্দিরে পূজা বন্ধ হয়ে গেছে। এখানে মহিলারা শাখা-সিঁদুর পরে আর বাসার বাইরে বের হচ্ছে না। হিন্দু সম্প্রদায়ের মহিলা-তরুণীরা এখন বোরকা পরে ঘুরে বেড়ায়।
আওয়ামী লীগ সব সময় হিন্দুদের ভোট পায় দাবি করে চালনা পৌরসভার সাবেক মেয়র অচিন্ত্য মন্ডল বলেন, বর্তমান সরকার তাদের দায়িত্ব নিচ্ছে না। এখন আর পিছে ফেরার সময় নেই, প্রতিরোধ গড়ে তুলে টিকে থাকতে হবে।
হিন্দু সংস্কার সমিতি সাধারণ সম্পাদক সোমনাথ সেন বলেন, দুর্বিষহ দিন অতিবাহিত করছি। হিন্দু নিধন করে বিতাড়িত করতে চাচ্ছে। রাষ্ট্র সহায়তা দিলে এই রকম হতো না। নিরূপায় হয়ে এখন দেশ থেকে চলে যেতে চাচ্ছে অনেকে।
দেশে নির্বাচন এলেই হিন্দু নির্যাতন শুরু হয় মন্তব্য করে মহাজোটের ফরিদপুর অঞ্চলের সভাপতি শিবু প্রসাদ দাস বলেন, নারীদের উপর অত্যাচার, লুণ্ঠন জমি দখল চলছেই। পিরোজপুর জেলা সভাপতি অমূল্য হালদার বলেন, আমরা কেন ভারতে যাব, প্রতিরোধ গড়ে তুলে এখানেই থাকব। এই দেশ আমাদের, বুকের রক্ত দিয়ে এই দেশ আমরা স্বাধীন করেছি।
সংগঠনের জ্যেষ্ঠ সভাপতি উত্তম দাস বলেন, মা-মেয়েদের ধর্ষণ করা হচ্ছে। আর কীভাবে অত্যাচারিত হলে সরকার ব্যবস্থা নেবে?
হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর সহিংসতা বন্ধে এবং প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে জাতীয় সংসদে ৬০টি সংরক্ষিত আসন, সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রণালয় গঠন ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায় থেকে সমহারে মন্ত্রী করার দাবি জানান হিন্দু মহাজোটের সহসচিব গোবিন্দ। এ দাবিগুলোর বিষয়ে ১ জুলাই সরকার স্পষ্ট ঘোষণা না দিলে ১৬ সেপ্টেম্বর সারা দেশে বিক্ষোভ করার ঘোষণা দেন তিনি। এছাড়াও হিন্দু মহাজোটের নির্বাহী সভাপতি দীনবন্ধু রায়সহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা নেতারাও বক্তব্য দেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।