Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

‘সিস্টেম’ই খুনি বানিয়েছে মেধাবীদের!

ঢাবির ছাত্র হলে অর্ধশত ‘টর্চার সেল’ গেস্টরুমে প্রটোকল পদ্ধতিসহ শেখানো হয় মারামারি কৌশল

নুর হোসেন ইমন | প্রকাশের সময় : ১৬ অক্টোবর, ২০১৯, ১২:০১ এএম

সভ্য দেশে অপরাধ করলে বিচার হয়, আর ভালো কাজের জন্য থাকে পুরষ্কার। তবে বাংলাদেশের বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্ররাজনীতির নামে চলে উল্টোটা। বাংলাদেশ প্রকৌশলী বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের হত্যার ঘটনায় আদালতে দেয়া জবানবন্দিতে শাখা ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আসামী অনীক সরকার বলেন, ‘সিনিয়র জুনিয়র যে-ই হোক, আমরা তাদের এভাবে পেটাতাম। আমাদের মতের সঙ্গে না মিললে কাউকে পিটিয়ে বের করে দিতে পারলে ছাত্রলীগের হাই কমান্ড আমাদের প্রশংসা করত। সিস্টেমটাই আমাদের এমন নিষ্ঠুর বানিয়েছে।’ 

বুয়েট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়সহ র্শীসস্থানীয় পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর চিত্র প্রায় একই। যখন যে দল সরকারে থাকে হলগুলোর নিয়ন্ত্রণ নেয় সে দলের ছাত্রসংগঠন। ভিন্নমত দমন ও শিক্ষার্থীদের নিয়ন্ত্রণে সৃষ্টি করা হয় গেস্টরুম ও গণরুমের মত সংস্কৃতি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) এর হলগুলো ২০০৯ সালের পর থেকে এককভাবে নিয়ন্ত্রণ করছে আওয়ামীলীগের ভ্রাতৃপ্রতিম ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগ। ছাত্রলীগের নির্দেশনা অমান্য করা শিক্ষার্থীদের নির্যাতনে প্রত্যেকটা ছাত্র হলে পলিটিক্যাল বড় ভাইদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে অর্ধশতাধিক ‘টর্চার সেল”। নোংরা রাজনীতির কবলে পড়ে বিভিন্ন অপরাধে জড়িয়ে পড়েন দেশসেরা মেধাবী শিক্ষার্থীরা।
গত ১০ বছরে ঢাবির ছাত্র হলগুলো থেকে ছাত্রলীগের কর্মসূচিতে অংশ না নেয়া, বড় ভাইদের নির্দেশ অমান্যসহ শিবির, ছাত্রদল সন্দেহে পিটিয়ে হল থেকে বের করার ২ শতাধিক খবর গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। হল নিয়ন্ত্রণে নিয়মিত হলগুলোতে বসে ‘গেস্টরুম’। এসব গেস্টরুমে নবীন শিক্ষার্থীদের ম্যানার শেখানোর নামে নির্যাতন করে ছাত্রলীগ। মিছিলে না যাওয়া, নেতাদের প্রটোকল সালাম না দেয়ার মত ‘অপরাধের’ বিচার গেস্টরুমে করা হলেও ‘অপরাধের’ মাত্রা অনুযায়ি শিক্ষার্থীদের ডাক পড়ে টর্চার সেলে।
নেতার কমান্ড অমান্য করা, গ্রুপিং রাজনীতিতে অন্য গ্রুপের কর্মী বা বিরোধী মতাবলম্বী হলে ‘টর্চার সেলে’ নিয়ে নির্যাতন করা হয়। টর্চার সেলে নির্যাতনের শিকার হয়ে একেবারে পঙ্গুত্ব ও অসুস্থতা নিয়ে জীবন কাটাচ্ছেন শতধিক শিক্ষার্থী। অনেকে লেখাপড়া শেষ না করেই বিদায় নিতে বাধ্য হয়েছেন।
কিভাবে অপরাধে জড়ায় মেধাবীরা : ঢাবি ছাত্রলীগের হল কমিটি না থাকায় বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৮টি হলে ছাত্রলীগের মোট ৭২টি গ্রুপ আছে। ছাত্রদের ১৩টি হলে গ্রুপের সংখ্যা ৫২টি। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের র্শীষ দু’নেতার অনুসারী গ্রুপসহ প্রত্যেক হলে শাখা ছাত্রলীগের দুটি করে গ্রুপ রয়েছে। ১ম বর্ষের নবীন শিক্ষার্থীরা যেকোন একটি গ্রুপের হয়ে হলে উঠেন। এসব গ্রুপ তার অনুসারী নেতাকর্মীদের পৃথকভাবে গেস্টরুমে ডেকে নিয়ে যায়। গেস্টরুম হলের অতিথি কক্ষ বা গণরুম বা রাজনৈতিক কক্ষগুলোতে হয়। হল কমিটি হওয়ার পর প্রত্যেক হলে দুটি করে গ্রুপ সৃষ্টি হয়। এরবাইরে গ্রুপগুলো অধিনে থাকে কয়েকটি সাব-গ্রুপ।
গেস্টরুমে একেবারে নবীন শিক্ষার্থীদের প্রথম ১ মাস সাধারণত বড় ভাইদের সাথে আচরণ শেখানো ও পরস্পরের পরিচিতির জন্য ডাকা হয়। এসময় সালাম দেয়া, প্রটোকল পদ্ধতি, সিনিয়র-জুনিয়রের চেইন অব কমান্ড বিষয়ে নির্দেশনা দেয়া হয়। কয়েক সপ্তাহ পর থেকে এসব নির্দেশনা অমান্য করলে শুরু হয় শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন। গুরুত্বপূর্ণ ক্লাস, পরীক্ষা বা অন্য কোন কারণে কর্মসূচিতে না যেতে পারলে তাকে বড় ভাইদের থেকে ‘ছুটি’ নিতে হয়।
দুয়েক মাস যাওয়ার পর প্রত্যেক গণরুমে সকলের জন্য একটি করে ক্রিকেট খেলার স্টাম্প কিনতে হয়। মুহসীন হলের চতুর্থ বর্ষের এক শিক্ষার্থী নাম প্রকাশ না করার শর্তে ইনকিলাবকে বলেন, ‘আমরা ১ম বর্ষে তিনটি গণরুমে ১২০ জনের মত ছিলাম। আমাদেরকে প্রত্যেককে একসাথে গুলিস্তান গিয়ে সবার জন্য একটা করে স্টাম্প কিনতে বলা হয়। এরপর রাত ২টা/ ৩টা বাজে পলাশি, হাতিরঝিলসহ বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে যাওয়ার নির্দেশনা দেয়। রাতভর ক্যাম্পাসে ঘুরে ঘুরে হল, গ্রুপ ও ছাত্রলীগের নামে স্লোগান দিতে বলা হয়। পরদিন সকাল ৮টায় ক্লাস থাকলেও এগুলো থেকে কাউকে রেহাই দেয়া হতো না।’ বড় ভাইদের ভাষায় রাতে একসাথে ঘুরতে বের হলে জুনিয়রদের মধ্যে ঘণিষ্ঠতা ‘ইন্টিমিসি’ বাড়বে। গেস্টরুমের নির্দেশনার কারণে নবীন শিক্ষার্থীদের অনেক সময় রাতে না ঘুমিয়ে ক্যাম্পাসে ঘুরতে হয়। ছাত্রলীগের নির্দেশনায় ক্যাম্পাসে ঘুরতে বের হওয়া নবীন শিক্ষার্থীদের দলগুলো অনেক সময় গভীর রাতে সোহরাওয়াদী উদ্যানে ডুকে পড়ে বিভিন্ন রকমের অপকর্মে জড়িয়ে পড়ারও ঘটনা ঘটেছে।
রাতে ক্যাম্পাসে বের করে দিয়ে সিনিয়ররা জুনিয়রদের রুমগুলোতে অনেক সময় তালা লাগিয়ে দেয় যেন নির্দেশনা পালন না করে কেউ এসে ঘুমিয়ে পড়তে না পারে। গেস্টরুমে অন্য গ্রুপের সঙ্গে সংঘর্ষ হলে করণীয় কি, কীভাবে আক্রমণ করবে, মারামারি সংগঠিত হলে কিভাবে নিজের হলের বা গ্রুপের নাম না বলে অন্য কোন নাম পালিয়ে চলে আসতে হবে এসব কৌশল শেখানো হয়। বড় ভাইদের মনমতো চলতে না পারায় শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের অসংখ্য ঘটনার নজির রয়েছে।
গেস্টরুমে নির্যাতন অনেকটা খোলাখোলি হলেও ‘টর্চার সেল’ নিয়ে মুখ খুলতে রাজি নয় ছাত্রলীগ। ঢাবির ছাত্রদের ১৩টি হলে খোঁজ নিয়ে মিলেছে অর্ধশত ‘টর্চার সেল’ এর সন্ধ্যান। পরিবেশ ও সময়ভেদে এসব কক্ষগুলো লাভ করে ভয়ংকর রূপ। কখনও শয়ন কক্ষ, আহার কক্ষ, অতিথি কক্ষ, বারান্দা বা ছাদও‘ টর্চার সেলে’ পরিণত হয়।
ছাত্রী হলে নির্যাতনের মাত্রা কম হলেও গত সাত বছরে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ও ছাত্রদের ১৩টি আবাসিক হলে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ৫৮টি নির্যাতনের ঘটনা ঘটিয়েছে। নির্যাতনের পর এদের কাউকে পিটিয়ে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে, কাউকে তাড়িয়ে দিয়ে সিট দখল করা হয়েছে। আবার গ্রুপিং রাজনীতির আধিপত্য বিস্তারে সংগঠনের পদধারী নেতাকেও ‘ছাত্রদল-শিবির’ করার অভিযোগে এনে পিটিয়ে হল থেকে বের করে দেয়ার নজির রয়েছে।
কোন সালে কত নির্যাতন
গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুসারে, ২০১৩ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি সলিমুল্লাহ মুসলিম (এসএম) হলে ৬ শিক্ষার্থী ছাত্রলীগের হাতে নির্যাতনের শিকার হন, ১০ এপ্রিল একই হলে ৮ শিক্ষার্থী নির্যাতনের শিকার হন, ১২ জুন মধুর ক্যান্টিনে ১ জন, ২৩ জুলাই স্যার এএফ রহমান হলে ৩ জন ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে ৩ জন, ১৬ জুলাই হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলে ১ জন, ২৫ আগস্ট কবি জসীমউদ্দীন হলে ১ জন, ৬ সেপ্টেম্বর হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলে ৩ জন, ১ অক্টোবর মাস্টারদা সূর্যসেন হলে ১ জন, ২০ নভেম্বর বঙ্গবন্ধু হলে ১ জন, ২৫ অক্টোবর মধুর ক্যান্টিনে ২ জন, ২৬ নভেম্বর মুহসীন হলে ১ জন, ১১ ডিসেম্বর এসএম হলে ৪ জন, ১৬ ডিসেম্বর একই হলে আরও ৪ জন, ২১ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলে ১জন ছাত্রলীগের নিতাকর্মীদের নির্যাতনের শিকার হন।
২০১৪ সালের ২০ জানুয়ারি শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলে ৫ জন ও কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে ১ জন, ৩ মার্চ অমর একুশে হলের সামনে ৪ জন, ৫মে কলাভবনের সামনে ৩ জন ও কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে ১ জন, ২০ অক্টোবর স্যার এএফ রহমান হলে ৮ জন। ২০১৫ সালের ২ ফেব্রুয়ারি জহুরুল হক হলে ৭ জন, ৪ ফেব্রুয়ারি একই হলে ১ জন এবং ফজলুল হক মুসলিম (এফএইচ) হলে ১ জন, ২১ ফেব্রুয়ারি এসএম হলে ২ জন, ২ আগস্ট বিজয় একাত্তর হলে ৩ জন নির্যাতনের শিকার হন।
২০১৬ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি চারুকলায় ১ জন, ১ মার্চ এসএম হলে ১ জন, ২২ অক্টোবর একই হলে ২ জন শিক্ষার্থী নির্যাতিত হন। ২০১৭ সালের ২৭ জুলাই জিয়াউর রহমান হলে ২ জন, ১০ আগস্ট এসএম হলে ১ জন, ১২ আগস্ট বিজয় একাত্তর হলে ১ জন ও জিয়াউর রহমান হলে ১জন, ১৭ আগস্ট মুহসীন হলে ৫ জন, ১১ অক্টোবর কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে ১ জন এবং ২৪ অক্টোবর টিএসসিতে ১ জন নির্যাতনের শিকার হন।
২০১৮ সালে ছাত্রলীগের নির্যাতনের শিকার হন- ১৬ জানুয়ারি বিজয় একাত্তর হলে ১ জন, ৬ ফেব্রæয়ারি এসএম হলে ১ জন, ২৭ ফেব্রæয়ারি বিজয় একাত্তর হলে ১ জন, ১ মার্চ ফুলার রোডে ১ জন, ৮ মার্চ এফএইচ হলে ১ জন, ২৩ মার্চ বিজয় একাত্তর হলে ২ জন, ২৪ মার্চ স্যার এএফ রহমান হলে ১ জন, ১০ এপ্রিল কবি সুফিয়া কামাল হলে ১ জন, ২৪ মে জিয়াউর রহমান হলের গেস্টরুমে অন্তত ৩ জন, ৬ আগস্ট এফএইচ হলে ৬ জন, ৩০ সেপ্টেম্বর এসএম হলে ২ জন, ১০ অক্টোবর মুহসীন হলে ১ জন, ২৫ অক্টোবর টিএসসিতে ২ জন, ১ নভেম্বর টিএসসিতে ১ জন, ২১ নভেম্বর এসএম হলে ১ জন, ২৩ ডিসেম্বর বিজয় একাত্তর হলে ১ জন, ২৪ ডিসেম্বর জহুরুল হক হলে ১ জন। চলতি বছর ছাত্রলীগের নির্যাতনের শিকার হন- ৩০ জানুয়ারি মল চত্বরে ১ জন, ১ মার্চ এসএম হলে ১ জন, ২২ এপ্রিল বিজয় একাত্তর হলে ১ জন, ১৩ জুলাই জিয়াউর রহমান হলের গেস্টরুমে ২৫ জনকে মারধর ও গালাগালের ঘটনা ঘটে।
এসব ঘটনায় ভুক্তভোগী দেড় শতাধিক শিক্ষার্থীর হল ছাড়তে হয়েছে। ‘ছাত্রদল-শিবির’ করার অভিযোগে এদের অধিকাংশকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। কিন্তু অভিযোগের সত্যতা না পাওয়ায় থানা থেকে অভিভাবকের জিম্মায় ছাড়া পান অধিকাংশ শিক্ষার্থী। অনেকে আবার বিভিন্ন মামলায় অইেশ শিক্ষার্থীকে জেলে পাঠানো হয়। গণমাধ্যমে প্রকাশিত এসব ঘটনার বাইরেও বিভিন্ন সময়ে শিক্ষার্থী হয়রানির খবর পাওয়া গেছে। হলগুলোতে সিট দখলের মাধ্যমে আধিপত্য বিস্তার করতেই এ ধরনের অন্যায় কাজে ছাত্রলীগ জড়াচ্ছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
শিক্ষার্থীরা বলছেন, ‘পড়ালেখা করে পরিবারের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে দেশের র্শীষ স্থানীয় বিদ্যাপীঠে আসলেও সিস্টেমের কারণে অপরাধে জড়াতে বাধ্য হন তারা। অপরাধের জালে জড়িয়ে পড়া মেধাবীরা সহজে বের হতে পারেন না। শিক্ষার্থীদের অপরাধের দিকে ঠেলে দিয়ে বিপদে পড়লে নেতারাই আবার তাদের আশ্রয় দেয়। ফলে বাধ্য হয়ে তাদের রাজনীতিতে সক্রিয় থাকতে হয়।’ হলে গেস্টরুমে থাকার কথা শিকার করলেও টর্চার সেলের নেয় বলে দাবি ছাত্রলীগের। শীর্ষ নেতারা বলছেন, ছাত্রলীগকে বিতর্কিত করতে ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবেই এটি বলা হচ্ছে। গণরুম-গেস্টরুম নিয়ে কিছু নেতিবাচক আলোচনা থাকলেও এটি ‘টর্চার সেল’ বলতে নারাজ ছাত্রলীগ।
মেধাবী থেকে অপরাধী
নোংরা ছাত্ররাজনীতির বলি দেশের মেধাবী শিক্ষার্থীরা। বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার হত্যার অন্যতম আসামী শামীম বিল্লাহ। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গ্রামের মেধাবী শামীম ‘সুবোধ’ বালক হিসেবেই পরিচিত ছিলেন। টিউশনি করিয়েই পড়াশোনার খরচ চালাতেন তিনি। সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার ভুরুলিয়া ইউনিয়নের ইছাকুড় গ্রামের ট্রাক চালক আমিনুর রহমান ওরফে বাবলু সরদারের ছেলে শামীম বিল্লাহ ছিলেন বুয়েটের নেভাল অ্যান্ড আর্কিটেকচার বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। বুয়েটে এসেই জড়ান ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে। বড়ভাইদের নির্দেশ মানতে গিয়ে ভয়ংকর হত্যাকান্ডে জড়িয়ে পড়েন তিনি।
আবরার হত্যার আরেক আসামী আকাশ হোসেন। তারা বাবা জয়পুরহাট সদরের দোগাছি গ্রামের বাসিন্দা আতিকুল ইসলাম পেশায় একজন ভ্যানচালক। তিনি হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রমের টাকা ও প্রতিবেশীদের সহযোগীতায় নিজের মেধাবী ছেলেকে ভর্তি করান বুয়েটে। বাবা আশায় ছিলেন অভাবের সংসারে এক সময় পূর্ণতা আসবে আকাশের হাত ধরে। ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করে আকাশ সংসারের হাল ধরবে। কিন্তু ভ্যানচালক বাবার সে স্বপ্ন ভেঙ্গে চুরমার হয়ে গেছে। আকাশের বাবা আতিকুল ইসলাম গণমাধ্যম বলেন, আকাশ ছাত্রলীগের বুয়েট শাখার সদস্য, এটা জানতাম না। তবে ছেলেকে রাজনীতিতে জড়িত না হতে বারবার নিষেধ করেছিলাম। সে যদি আমার কথা শুনতো তাহলে আজ এ পরিস্থিতি হতো না।’##



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বুয়েট


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ