Inqilab Logo

শুক্রবার ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শিবির সন্দেহে আবরারকে পিটিয়ে হত্যা

সংবাদ সম্মেলনে সিটিটিসি প্রধান মনিরুল ইসলাম

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৫ অক্টোবর, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

শিবির সন্দেহেই বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ রাব্বীকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ডিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের (সিটিটিসি) প্রধান মনিরুল ইসলাম। আগামী নভেম্বর মাসের শুরুতে এ মামলার চার্জশিট দেয়া হবে। গতকাল সোমবার ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। এদিকে, আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি মেহেদী হাসান রবিন গতকাল স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। জবানবন্দি শেষে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

মনিরুল ইসলাম বলেন, গ্রেফতার ব্যক্তিদের মধ্যে চারজনের আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে এসেছে যে, তারা শিবির সন্দেহে আবরারকে ডেকে নিয়ে মারপিট করছিল। একপর্যায়ে তার মৃত্যু হয়। তিনি বলেন, আবরারকে হত্যার উদ্দেশ্যে মারপিট করা হয়েছে, নাকি মারপিটের জন্য মারপিট করা হয়েছে, সে ব্যাপারে তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ শেষে জানা যাবে। এই হত্যাকান্ডের তদন্ত শেষে নভেম্বরের শুরুর দিকে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হতে পারে বলেও জানান তিনি।

আবরার হত্যার রাতে পুলিশের ভূমিকা সম্পর্কে জানতে চাইলে মনিরুল ইসলাম বলেন, পুলিশ সেই দিন রাত ৩টার দিকে বুয়েট হলের সামনে গেলে পুলিশকে বলা হয়েছিল কোনো সমস্যা নেই। ওই সময় পুলিশকে ভুল তথ্য দেওয়া হয়েছিল। ভেতরে সমস্যা না থাকলে পুলিশ হলে ঢোকার রেওয়াজ নেই। সমস্যা থাকলে, কেউ জানালে, তখন তারা ঢুকতে পারে। আটককৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে যেটা পেয়েছি, ৩টার বেশ আগেই আবরার মারা গেছে। পুলিশ গিয়েছে অনেক পরে। ঘটনার সময় ওখানে পুলিশের টহল টিমও ছিল। কিন্তু বাইরে কোনো চিৎকার বা শব্দ শোনা যায়নি।

অনেকে বলছেন মারধর করেছে দু’দফা, তিন দফা। আপনাদের পর্যবেক্ষণ কী বলছে- এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কারো কারো জবানবন্দিতে এসেছে বারবার কয়েক ঘণ্টা মারধর করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ৬ অক্টোবর বুয়েটের ছাত্র আবরার ফাহাদকে বেধড়ক পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় নিহত আবরারের বাবা মো. বরকত উল্লাহ ১৯ জনসহ অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে অভিযুক্ত করে চকবাজার থানায় মামলা করেন। এখন পর্যন্ত ১৯ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এর মধ্যে এজাহারভুক্ত ১৫ জন রয়েছে। পুলিশের তদন্তে নাম আসায় বাকি চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

রবিনের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি : এদিকে, আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি মেহেদী হাসান রবিন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। গতকাল সোমবার ঢাকা মহানগর হাকিম তোফাজ্জল হোসেনের আদালতে ১৬৪ ধারায় জবাববন্দি দেন। জবানবন্দি শেষে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। মেহেদী হাসান রবিন আবরার হত্যা মামলার ৪ নম্বর আসামি ও বুয়েটের ১৫তম ব্যাচের শিক্ষার্থী। আবরার হত্যায় সে পাঁচদিনের রিমান্ডে ছিল।

পুলিশ জানায়, গ্রেফতার ১৯ জনের মধ্যে ইফতি মোশাররফ সকাল, মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন, অনিক সরকার ও মো. মুজাহিদুর রহমান মুজাহিদ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। তারা বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন। এ ছাড়া মেহেদী হাসান রাসেল, মুহতাসিম ফুয়াদ, মুনতাসির আলম জেমি, খন্দকার তাবাখখারুল ইসলাম তানভির ও ইসতিয়াক আহম্মেদ মুন্নাকে রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আর এ মামলায় বর্তমানে রিমান্ডে আছেন ৯জন। তাদের ডিবি কার্যালয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বুয়েট


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ