সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেছেন, সারাদেশে ছোট-বড় অনেক সম্রাট তৈরি হয়েছে। এ সম্রাট শুধু আওয়ামী লীগে নয়, সব দলেই রয়েছে। এমন সম্রাটদের প্রতিহত করতে হলে প্রয়োজন সব দলের রাজনৈতিক ঐকমত্য।
সোমবার ফেনীর একটি মিলনায়তনে সুজন, ফেনী জেলা কমিটির আয়োজনে ‘বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কার ও নাগরিক ভাবনা শীর্ষক’ গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন।
বদিউল আলম মজুমদার বলেন, দেশে এখন দুর্বৃত্তায়ন চলছে। এ দুর্বৃত্তায়ন রোধ করতে প্রয়োজন রাজনৈতিক ঐকমত্য। জনগণের প্রতি সরকারের দায়বদ্ধতা থাকলে এমন পরিস্থিতি তৈরি হতো না।
তিনি বলেন, ২০১৪ এবং ২০১৮ সালের নির্বাচন জনগণের সম্মতির আলোকে হয়নি। সে কারণেই বর্তমান সরকারের জনগণের প্রতি দায়বদ্ধতা নেই। জনগণের সম্মতির শাসন সৃষ্টি করতে হবে। সম্রাটদের সরকার নয়, জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
সুজন সম্পাদক বলেন, সুজনের সংস্কার প্রস্তাবের উদ্দেশ্য সব দলের সম্মিলিত ঐক্য। দেশকে এগিয়ে নিতে এর প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। দেশের বর্তমান যে অবস্থা এতে সর্বক্ষেত্রে সংস্কার প্রয়োজন। এজন্য প্রয়োজন একটা জাতীয় সনদ। যে সনদটিতে স্বাক্ষর করবে দেশের সব রাজনৈতিক দল। সব রাজনৈতিক দল সদিচ্ছা পোষণ করলে এ জাতীয় সনদ প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব।
ছাত্র রাজনীতি প্রসঙ্গে বদিউল আলম বলেন, ছাত্রদের রাজনীতি করা সাংবিধানিক অধিকার। এ অধিকার খর্ব করা উচিত নয়। তবে লেজুড়ভিত্তিক ছাত্র রাজনীতি বন্ধ হওয়া প্রয়োজন।
গোলটেবিল বৈঠকে দেশের রাজনৈতিক সংস্কারের জন্য ২০টি প্রস্তাব উত্থাপন করে সুজন। প্রস্তাবগুলো হলো- রাজনৈতিক সংস্কৃতির পরিবর্তন, নির্বাচনী সংস্কার, কার্যকর জাতীয় সংসদ, স্বাধীন বিচার বিভাগ, নিরপেক্ষ
নির্বাচন কমিশন, সাংবিধানিক সংস্কার, গঠনতান্ত্রিক ও স্বচ্ছ রাজনৈতিক দল, স্বাধীন বিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান, দুর্নীতিবিরোধী সর্বাত্মক অভিযান, যথাযথ প্রশাসনিক সংস্কার, বিকেন্দ্রীকরণ ও স্থানীয় সরকার, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, শক্তিশালী নাগরিক সমাজ, মানবাধিকার সংরক্ষণ, একটি নতুন সামাজিক চুক্তি, পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা, আর্থিক খাতে সুশাসন প্রতিষ্ঠা, শিক্ষা ব্যবস্থা ও শিক্ষার মানোন্নয়ন ও নারীর ক্ষমতায়ন।
সুজন, ফেনী জেলা শাখার সভাপতি অ্যাডভোকেট লক্ষণ চন্দ্র বণিকের সভাপতিত্বে ও
সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেনের সঞ্চালনায় গোলটেবিল বৈঠকে আরও বক্তব্য রাখেন ফেনী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুর রহমান বিকম, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও সাহিত্যিক প্রফেসর রফিক রহমান ভূইঁয়া, ফেনী ইউনিভার্সিটির ট্রেজারার প্রফেসর তায়বুল হক, ফেনী সিটি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর উৎপল কান্তি বৈদ্য,
বিএনপির জাতীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য অ্যাডভোকেট মেজবাহ উদ্দিন, ফেনী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সাবেক সভাপতি ও সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আবদুল মোতালেব, জেলা
বিএনপির সদস্য সচিব আলাল উদ্দিন আলাল, ফেনী শহর ব্যবসায়ী সমিতির
সাধারণ সম্পাদক পারভেজুল ইসলাম হাজারী, ফেনী শহর ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সভাপতি ইকবাল আলম, সাংবাদিক রবিউল হক রবি, যতন মজুমদার, ফেনী সরকারি কলেজ ছাত্র সংসদের ভিপি তোফায়েল আহমেদ তপু প্রমুখ।