পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
হাসান সোহেল : নীতিমালা ভঙ্গের দায়ে ৩টি মেডিকেল কলেজের কার্যক্রম সাময়িক স্থগিত করার নোটিশ প্রদানের পূর্বেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। গত ১২ জুন সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত বেসরকারি মেডিকেল কলেজের শিক্ষা কার্যক্রম পর্যালোচনা সভায় আশুলিয়ার নাইটিঙ্গেল মেডিকেল কলেজ, রংপুরের নর্দান মেডিকেল কলেজ এবং গাজীপুরের সিটি মেডিকেল কলেজের কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ করার নির্দেশ দেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। এ সিদ্ধান্তের নোটিশ এখনো মেডিকেল কলেজগুলোতে পাঠানো হয়নি তার আগেই মেডিকেল কলেজগুলোর তদবিরে সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে বাধ্য হয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। অবশ্য যেদিন এই সিদ্ধান্ত হয় ওইদিনই একটি মেডিকেল কলেজের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান, এই সিদ্ধান্তে সরকার থাকতে পারবে না। কয়েকদিনের মধ্যেই সব ঠিক হয়ে যাবে। অবশ্য তার কথার ব্যতিক্রম হয়নি মাত্র ৪ দিনের মধ্যেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে বাধ্য হয় সরকার। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা জানান, রাজনৈতিক বিবেচনায় মেডিকেল কলেজের অনুমোদন হয়েছে। আবার সেই বিবেচনায়ই অনিয়ম করেও পার পেয়ে যাবে এটাই সত্য। এখানে কারো কিছু করার নেই বলে উল্লেখ করেন ওই কর্মকর্তা।
স্বাস্থ্য অধিকার আন্দোলনের আহ্বায়ক এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রো-ভিসি প্রফেসর ডা. রশীদ-ই মাহবুব বলেন, একটি সিদ্ধান্ত নিয়ে তার বাস্তবায়ন না করে পূর্বের অবস্থানে ফিরে আসা এটা খারাপ মোটিভ। দেশের জন্য অত্যন্ত খারাপ মেসেজ। এভাবে হলে বেসরকারি মেডিকেল কলেজগুলো বেপরোয়া হয়ে উঠবে। চিকিৎসা ব্যবস্থা ধ্বংসের মুখে পড়বে।
গতকাল স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত এক সভায় বন্ধ করে দেওয়া ৩টি মেডিকেল কলেজের শিক্ষা কার্যক্রম অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সাময়িক বন্ধকৃত তিন মেডিকেল কলেজে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া ও ভবিষ্যতের কথা বিবেচনা করে কলেজগুলোতে বর্তমান ছাত্রছাত্রীদের শিক্ষা কার্যক্রম অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। শিক্ষার্থীদের মানবিক দিক ও জনস্বার্থ বিবেচনা করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের নির্দেশে পূর্ব সিদ্ধান্তের এই সংশোধনী আনা হয়। তবে বেসরকারি মেডিকেল কলেজ পরিচালনা নীতিমালার শর্ত পূরণ না করায় আগামী ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষ থেকে ওই তিন কলেজে নতুন শিক্ষার্থী ভর্তির স্থগিতাদেশ যথারীতি বহাল থাকবে।
যদিও মানসম্পন্ন চিকিৎসা শিক্ষা ফিরিয়ে আনতে বদ্ধপরিকর স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম গত ১২ জুনের সভায় ৩টি মেডিকেল কলেজ সাময়িক বন্ধের নির্দেশ দিয়ে আগামী ৩ মাসের মধ্যে দেশের ৬৮টি বেসরকারি মেডিকেল কলেজ আবারো পরিদর্শন কারর নির্দেশ দেন। তিনি বলেছেন, মানসম্পন্ন শিক্ষার ক্ষেত্রে কোনো ধরনের ছাড় নয়। কারণ দেশের বৃহৎ জনগোষ্ঠীকে চিকিৎসা সেবা দেয়ার লক্ষ্যেই সরকারি খাতের পাশপাশি বেসরকারি খাতকে গুরুত্ব দিয়ে মেডিকেল কলেজগুলো করা হয়েছিল। এসব মেডিকেল কলেজগুলোর মান বজায় না থাকলে সুচিকিৎসক পাওয়া যাবে না। শুধু সার্টিফিকেট বিতরণের জন্য কলেজের কার্যক্রম চালিয়ে যেতে দেওয়া যায় না। কলেজের কার্যক্রমের মান সুরক্ষায় সরকার কঠোরভাবে তদারকি করার কথাও উল্লেখ করেন তিনি। কিন্তু ৪ দিনের মাথায় এই সিদ্ধান্ত থেকে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সরে আসাকে ভালো চোখে দেখছেন না অনেকে। এর মাধ্যমে বেসরকারি মেডিকেল কলেজগুলো নীতিমালা ভঙ্গ করে পার পেয়ে যাওয়ার রীতি চালু হলো। আরও বেপরোয়া হয়ে পড়বে প্রতিষ্ঠানগুলো।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্তি সচিব (চিকিৎসা শিক্ষা ও জনশক্তি উন্নয়ন) নাসির আরিফ মাহমুদ ইনকিলাবকে বলেন, শিক্ষার্থীদের সামনে পরীক্ষা। কলেজ পরিবর্তন প্রক্রিয়ায় সমস্যায় পড়তে হবে। এতে পড়ালেখায় ক্ষতি হবে। আর তাই সমস্যা থাকা সত্ত্বেও শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করা হয়েছে। তবে আগামী বছর থেকে এই মেডিকেল কলেজগুলোতে শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ থাকবে। যদি না তারা সমস্যাগুলো দূর না করে। নাসির আরিফ মাহমুদ বলেন, এর মাধ্যমে অন্যান্য মেডিকেল কলেজগুলো সতর্ক হবে।
উল্লেখ্য, নীতিমালা ভঙ্গের কারণে গত রোববার ৩টি মেডিকেল কলেজকে সাময়িক বন্ধের নির্দেশ দিয়েছিল স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। তবে ওই দিনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী চট্টগ্রামের সাউদার্ন মেডিকেল কলেজ এর উপর ২০১৬-২০১৭ শিক্ষাবর্ষে নতুন ছাত্রছাত্রী ভর্তির নিষেধাজ্ঞা এবং একই জেলায় বিজিসি ট্রাস্ট মেডিকেল কলেজের আসন সংখ্যা ১২৫ থেকে ৭৫-এ কমিয়ে আনার সিদ্ধান্ত বলবৎ থাকবে। সার্বিক শিক্ষার পরিবেশ, হাসপাতালের শয্যা ও রোগীর সংখ্যা ও সেবা কার্যক্রমসহ বেসরকারি মেডিকেল কলেজ নীতিমালার বিভিন্ন শর্ত পূরণ সন্তোষজনক না হওয়ায় সরকার এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।