Inqilab Logo

বুধবার, ০৩ জুলাই ২০২৪, ১৯ আষাঢ় ১৪৩১, ২৬ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

প্রতিদিন ৫০ হাজার টাকা করে সরকারি কোষাগারে জমা দিতে হবে

১৫৪ ট্যানারিকে হাইকোর্টের নির্দেশ

প্রকাশের সময় : ১৭ জুন, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : আদালতে নির্দেশের পরেও কারখানা না সরানোয় ১৫৪ ট্যানারিকে প্রতিদিন জরিমানা হিসেবে ৫০ হাজার টাকা করে সরকারি কোষাগারে জমা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। আদালতের নির্দেশে যেসব ট্যানারি এখনও সাভারে স্থানান্তর করা হয়নি তাদের তালিকা দাখিলের পর গতকাল বৃহস্পতিবার বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ দস্তগীর হোসেন ও বিচারপতি এ কে এম সাহিদুল হকের বেঞ্চ এ নির্দেশ দেন।
রিট আবেদনের পক্ষের আইনজীবী মনজিল মোরসেদ জানান, যতদিন পর্যন্ত কারখানা সরাবে না, ততদিন পর্যন্ত পরিবেশের ক্ষতি হিসাবে ট্যানারিগুলোকে সরকারি কোষাগারে ৫০ হাজার টাকা করে জমা দিতে হবে। আদালতের এ আদেশ সময়ে সময়ে মনিটরিং করে শিল্পসচিব আগামী ১৭ জুলাইয়ের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন আকারে জানাবেন। একই সময়ের মধ্যে রাজধানীর হাজারীবাগের ট্যানারির কারণে বুড়িগঙ্গায় কি পরিমাণ পরিবেশ দূষণ হচ্ছে তা নির্ণয় করে পরিবেশ সচিবকে আদালতকে প্রতিবেদন আকার জানাতে হবে।
আদালতে শিল্পসচিবের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী রইস উদ্দিন।
এক রিট আবেদনের প্রেক্ষিতে ২০০১ সালে ট্যানারি শিল্প হাজারীবাগ থেকে সরিয়ে নিতে নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। দীর্ঘদিন ধরে ওই আদেশ বাস্তবায়িত না হওয়ায় অন্য এক আবেদনের প্রেক্ষিতে ২০১০ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যে হাজারীবাগের ট্যানারি শিল্প অন্যত্র সরিয়ে নিতে ২০০৯ সালের ২৩ জুন ফের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। সরকারপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে পরে ওই সময়সীমা কয়েক দফা বাড়িয়ে ২০১১ সালের ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত করা হয়। কিন্তু এ সময়ের মধ্যেও স্থানান্তরিত না হওয়ায় আদালত অবমাননার মামলা করেন পরিবেশবাদী সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের পক্ষ থেকে মনজিল মোরসেদ। এ মামলার প্রেক্ষিতে ২০১৪ সালের ১৫ এপ্রিল আদালত অবমাননার রুল জারি করেন হাইকোর্ট। পরে গত বছরের ২১ এপ্রিল আদালতের তলবে হাইকোর্টে হাজির হয়ে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দেন শিল্পসচিব। এরপরও ওই দশ প্রতিষ্ঠান হাজারীবাগ থেকে ট্যানারি স্থানান্তরের পদক্ষেপ না নেয়ায় তাদের বিরুদ্ধে ফের আদালত অবমাননার অভিযোগে আরও একটি আবেদন করেন মনজিল মোরসেদ।
এ আবেদনের শুনানি নিয়ে গত বছরের ১১ আগস্ট হাইকোর্ট দশ কারখানা মালিকের বিরুদ্ধে রুল জারি করেন বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ দস্তগীর হোসেন ও বিচারপতি এ কে এম সাহিদুল হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ। এ রুলের পর দশ মালিককে তলব করে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দেয়ার নির্দেশনা চেয়ে গত ২১ মার্চ আবেদন করেন মনজিল মোরসেদ। গত ২৩ মার্চ এ আবেদনের শুনানি শেষে ব্যাখ্যা দিতে ১০ মালিককে ১০ এপ্রিল তলব করেন আদালত। গত ১০ এপ্রিল হাজিরা দিতে আসার পর ব্যাখ্যা না দেয়ায় তিন মালিককে কোর্ট তত্ত্বাবধায়কের মাধ্যমে পুলিশে সোপর্দ করার আদেশ দেন হাইকোর্ট। পওে কোর্ট তত্ত্বাবধায়ক তাদেরকে কোর্ট পুলিশের কাছে রাখেন। বিকালে তাদের আইনজীবী ফিদা এম কামাল সময়ের আবেদন ও তাদের পক্ষে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেন। পরদিন দুপুর একটার মধ্যে ট্যানারি সরানোর বিষয়ে অগ্রগতি প্রতিবেদন আদালতে জমা দেবেনÑ এ শর্তে আদালতের নির্দেশে পুলিশ তাদের ছেড়ে দেয় বলে জানান আইনজীবী মনজিল মোরসেদ।
পরদিন তাদের আইনজীবী ফিদা এম কামালের মাধ্যমে হলফনামা জমা দেন তিন ট্যানারি মালিক। হলফনামায় তারা তাদের হাজারীবাগের কারখানা বন্ধ রাখাসহ আগামীতে হাজারীবাগ থেকে সাভারে চামড়া শিল্পনগরীতে ট্যানারি স্থানান্তরের আশ্বাস দেন। পরে তাদের আদালত অবমাননার অভিযোগ থেকে রেহাই দেয়া হয়। এরপর গত ১৩ এপ্রিল হাজারীবাগে এখনো যেসব ট্যানারি ব্যবসা পরিচালনা করছে, তাদের তালিকা চেয়েছিলেন হাইকোর্ট। তিন সপ্তাহের মধ্যে শিল্পসচিবকে ওই তালিকা দাখিল করতে বলা হয়। আদালতের এ আদেশ অনুসারে শিল্প সচিবের পক্ষে আইনজীবী রইস উদ্দিন ১৫৫টি ট্যানারির তালিকা হস্তান্তর করেন। এর মধ্যে মাত্র একটি ট্যানারি স্থানান্তর করেছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: প্রতিদিন ৫০ হাজার টাকা করে সরকারি কোষাগারে জমা দিতে হবে
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ