Inqilab Logo

শনিবার, ২৯ জুন ২০২৪, ১৫ আষাঢ় ১৪৩১, ২২ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

সরকারই রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে গোপন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত : খালেদা জিয়া

প্রকাশের সময় : ১৭ জুন, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : স্বার্থ-বিরোধী কর্মকা-ের জন্য আওয়ামী লীগ সরকারকে ‘রাষ্ট্রদ্রোহী’ বলে অভিযুক্ত করেছেন বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া। গতকাল (বৃহস্পতিবার) রাজধানীর ইস্কাটনে লেডিস ক্লাবে এক ইফতার মাহফিলে বিএনপি চেয়ারপারসন এই অভিযোগ করেন।
তিনি বলেন, এই সরকার ব্যর্থ, অযোগ্য, অথর্ব, দুর্নীতিবাজ, খুনী, অত্যাচারি, গুম, হত্যাকারী এবং রাষ্ট্রদ্রোহী। সরকার নিজেই রাষ্ট্রদ্রোহী- আমি বলব। তারা অন্যের নামে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা দিয়ে বেড়ায়। রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ওরা গোপনে অনেক কিছু করছে, যেটা জনগণ জানে না এবং যেটা দেশের স্বার্থের পরিপন্থি। আমরা বলতে চাই, এই দেশদ্রোহী সরকারের বিরুদ্ধে দেশের মানুষকে, সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। আজকে উচিৎ সকল রাজনৈতিক নেতাদের যার যার প্ল্যাটফর্ম থেকে ঐক্যবদ্ধ হওয়া। কে কোন পদ পাবো, কে কি পাবো- সেটা বড় কথা নয়। আমাদের ব্যক্তিগত চাওয়া-পাওয়া বড় কথা নয়, আমাদের কাছে বড় কথা হলো গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনা, দেশটাকে রক্ষা করা।
২০ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি-এলডিপির উদ্যোগে এই ইফতার মাহফিল  হয়।
সারাদেশে পুলিশের পরিচালিত ‘সাঁড়াশি অভিযান’-এর কঠোর সমালোচনা করে খালেদা জিয়া বলেন, আজকে সরকার দেশটাকে পুরো কারাগার বানিয়ে ফেলেছে। এখন পর্যন্ত ১২ হাজারের ওপরে লোকজন গ্রেপ্তার করেছে। তার মধ্যে বিএনপির হলো ২ হাজার ৭৯২ জন প্রায়।
তাদের (সরকার) লক্ষ্য সন্ত্রাসী ধরা নয়, তাদের লক্ষ্য সন্ত্রাসীদের নির্দ্বিধায় নির্ভয়ে পার করে দিয়ে বিএনপি ও অন্য রাজনৈতিক দলের যত নেতাকর্মী আছে তাদের ধরা। আর বিএনপির যারা সমর্থক ও বিএনপিকে যারা ভালোবাসে এমনসব নিরীহ মানুষকে ধরা, তাদের জেলে ঢুকানো।
দেশে আইনের দু’রকম প্রয়োগের কথা উল্লেখ করে বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, ক্ষমতাসীন ছাত্রলীগের লোকজন অবাধ অস্ত্র নিয়ে ঘুরে বেড়ায়, তাদের ধরা হয় না। পত্রিকায় দেখেছেন, কয়েকদিন আগে ছাত্রলীগের একজন সে অস্ত্রসহ ধরা পড়েছে, তাকে জেলখানায় নিয়ে কয়েকদিন পর জামিন নিয়ে আবার বেরিয়ে এসেছে। আওয়ামী লীগের লোকজন অস্ত্র নিয়ে ধরা পড়লেও তাদের রিমান্ড নেয়া তো দূরের কথা, তাদের জেলখানায় পর্যন্ত রাখে না। লোক-দেখানোর জন্য কয়েকদিনের জন্য জেলে নিয়ে আবার ছেড়ে দেয়।
অন্যদিকে বিএনপির লোকজন কোনো অপরাধ না করলেও তাদের ধরে নিয়ে যাওয়া হয়। তাদের দিনের পর দিন কারাগারে রাখা হয়, রিমান্ডে নেয়া হয়। আদালতে জামিনে বেরিয়ে আসতে গেলে আবার জেলগেইট থেকে নতুন মামলা দেখিয়ে কারাগারে আটকিয়ে রাখা হয়।
দেশের অর্থনৈতিক দুরবস্থার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আজকে প্রত্যেকটা ব্যাংক লুট হয়েছে। সরকারি ব্যাংক তো আছে, অনেক বেসরকারি ব্যাংকেও কোনো হিসাব মেলে না। জীবনে কখনো শুনিনি, রাষ্ট্রীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক যেভাবে ডাকাতি হয়েছে। এই সরকার ব্যর্থ, অযোগ্য, অথর্ব, দুর্নীতিবাজ সরকার- তা প্রমাণ করে দিলো।
এই অবস্থা থেকে উত্তরণে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান বিএনপি চেয়ারপারসন। এই সরকার এতো মানুষ খুন করেছে, এতো মানুষ হত্যা করেছে, এতো অপরাধ করেছে, আমরা আল্লাহর কাছে রমজান মাসে দোয়া করবো, আল্লাহতালা এদেশের মানুষদের কান্না, আহজারি, অত্যাচার হচ্ছে, এই সরকারকে ক্ষমতা থেকে বিদায় করে, অত্যাচারীদের শাস্তি দিয়ে আপনি দেখিয়ে দিন আল্লাহ বিচার দুনিয়াতে আছে।
বক্তব্যের পর এলডিপির চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল অলি আহমেদ, মহাসচিব রেদোয়ান আহমেদ, সাহাদাত হোসেন সেলিম, কল্যাণ পার্টির সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিমকে নিয়ে এক টেবিলে বসে ইফতার করেন খালেদা।
এছাড়া ছিলেন এলডিপির আবদুল করিম আব্বাসী, সাহাদাত হোসেন সেলিম, জামায়াতে ইসলামীর অধ্যাপক আবদুল হালিম, জাগপার শফিউল আলম প্রধান, খন্দকার লুৎফর রহমান, আসাদুর রহমান খান, এনডিপির খোন্দকার গোলাম মূর্তাজা, এনপিপির ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, মুস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা, লেবার পার্টির মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, হামদুল্লাহ আল মেহেদি, মুসলিম লীগের এএইচএম কামরুজ্জামান খান, জুলফিকার বুলবুল চৌধুরী, ন্যাপের জেবেল রহমান গনি, গোলাম মোস্তফা ভুঁইয়া, ইসলামী ঐক্যজোটের মাওলানা আবদুল করীম খান, মাওলানা শওকত আমীন, খেলাফত  সৈয়দ মজিবুর রহমান, জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর)আহসান হাবিব লিংকন, গোলাম মোস্তফা, কল্যাণ পার্টির এমএম আমিনুর রহমান, সাম্যবাদী দলের সাঈদ আহমেদ, পিপলস লীগের সৈয়দ মাহবুব হোসেন, ভাসানীর আজহারুল ইসলাম, ডিএল’র সাইফুদ্দিন আহমেদ মনি, ইসলামিক পার্টির মো. এজাজ হোসেন, জমিয়তে উলামে ইসলামের মাওলানা মহিউদ্দিন ইকরাম।  
ইফতারে বিএনপির চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ, মাহমুদুল হাসান, আবদুল্লাহ আল নোমান, আলতাফ হোসেন, সেলিমা রহমান, হায়দার আলী, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, জেবা খান প্রমুখ অংশ নেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সরকারই রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে গোপন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত : খালেদা জিয়া
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ