পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ই (বুয়েট) নয় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে আবাসিক হলগুলোতে গড়ে উঠেছে ‘টর্চার সেল’। সেই সেলগুলোতে বিভিন্ন অজুহাতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর চালানো হয় অমানুসিক নির্যাতন। বুয়েটের শেরে বাংলা হলের ‘টর্চার সেলে’ মেধাবী ছাত্র আবরারকে পিটিয়ে হত্যার পর রাবির আবাসিক হলে অন্তত ১২টি ‘টর্চার সেলের’ সন্ধান মিলেছে। এসব কক্ষগুলো ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের কজ্বায় বলে জানা গেছে। সেই সেলগুলো শিক্ষার্থীকে মারধর করা হলে তা হল ও বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসনের নজরে আসার পরেও কোন ভূমিকাতো রাখতে পারেন না বরং প্রশাসনের উপর ফুটে ওঠে অসহায়ত্বের ছাপ।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয় বঙ্গবন্ধু হলের ২২৯, ২৩১,৩২৩ নম্বর কক্ষটি টর্চার সেল নামে পরিচিত। এছাড়াও শেরে-ই-বাংলা ফজলুল হক হলের ৩০৪ নম্বর কক্ষ, শাহ মখদুম হলের ২৫২ ও ২০১ নম্বর রুম, নবাব আব্দুল লতিফ হলের ২১৫ ও ২০৮, সৈয়দ আমীর আলী হলের ২৫৮, শহীদ হবিবুর রহমান হলের ৩০৩, মাদার বখস হলের ২০৫ ও ২১৫ নম্বর কক্ষ, শহীদ জিয়াউর রহমান, শহীদ সোহরাওয়ার্দী, শহীদ শামসুজ্জোহা হলের গেস্ট রুম ও পলিটিক্যাল বøকের বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন রুমকে টর্চার সেল হিসেবে ব্যবহার করা হয়। ক্যাম্পাসে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটলেই এই কক্ষগুলো থেকে বের হতে থাকে ধারালো অস্ত্র ও লাঠিসোটা। এসব কক্ষে ডেকে নিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের নির্যাতনের ঘটনা অহরহ ঘটলেও আতঙ্কে কেউ মুখ খুলছে না।
তবে নাম না প্রকাশ করার শর্তে শাখা ছাত্রলীগের একাধিক নেতা জানান, বর্তমান কমিটির অনেক নেতা বিভিন্ন মাদক সেবন ছাড়াও ইয়াবা, গাঁজার ব্যবসার সাথে জড়িত। নিজের পকেটে টাকা না থাকলেই সাধারণ শিক্ষার্থীদের রুমে নিয়ে চাঁদা দাবি করে, না দিতে চাইলে বেধড়ক মারধর শুরু এবং বাসা থেকে টাকা নিতে বাধ্য করে। পরে পিতামাতা বিকাশে টাকা পাঠালে এঘটনা কাউকে বলতে পারবে না এ শর্তে ছেড়ে দেয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গতবছরের ২ ফেব্রুয়ারি শিক্ষার্থী ও শিবিরকর্মীসহ ১৬জনকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের ২৩১ ও ২২৮ নম্বর কক্ষে নিয়ে চার ঘণ্টাব্যাপী বেধড়ক মারধর করে। এতে তিনজনের হাত-পা ভেঙে যায়। পরে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। গত ৮ আগস্ট শহীদ সোহরাওয়াদী হলে রুমে রুমে গিয়ে শিক্ষার্থী ও শিবিরকর্মীসহ ১২ জনকে বেধড়ক মারধর করে এবং তাদের নগদ টাকা, মোবাইল, কম্পিউটার, প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে নেয়। গত ১৮ অক্টোবর মুন্নুজান হলের সামনে থেকে ১৪ জন শিক্ষার্থীকে শিবির সন্দেহে তুলে নিয়ে আসে ছাত্রলীগ। পরে বঙ্গবন্ধু হলের ২৩৩ নম্বর কক্ষে ঘণ্টাব্যাপী মারধর করে পুলিশে তুলে দেয়। সঙ্গে থাকা মোবাইল ও মানিব্যাগ কেড়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের প্রাধ্যক্ষ ড. মো. রওশন জাহিদ বলেন, অতিদ্রুতই একটি নোটিশ দেওয়া হবে এবং কোন বহিরাগত, অছাত্র হলে থাকতে পারবে না। এরপরও কেউ বিশৃঙ্খলা করতে চাইলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যে রুম গুলো শিক্ষার্থীদের হয়রানি ও মারধর করা হয় সেগুলোকে চিহ্নিত করা হবে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর অধ্যাপক ড.লুৎফর রহমান বলেন, বুয়েটের ঘটনার পর থেকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কয়েকস্তরে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। অন্যায় করে কেউ ছাড় পাবে না। হলের যে রুমগুলোতে শিক্ষার্থীদের টর্চার করা হয় সেগুলোকে চিহ্নিত করে অভিযান চালাব এবং নজরদারিতে থাকবে বলে জানান তিনি।
রাবি ভিসি প্রফেসর ড. এম সোবহান জানান, শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রাধ্যক্ষদের সঙ্গে বসেছিলাম। সেখানে অনাবাসিক, বহিরাগত শিক্ষার্থী হলে অবস্থান করতে পারবে না সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এছাড়াও কোন শিক্ষার্থীকে অহেতুক মারধর করলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।