পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের নির্যাতন ও নিয়ন্ত্রণে ছাত্রলীগের টর্চার সেল নিয়ে বিভিন্ন সময় আলোচনা উঠলেও এসব বন্ধে ব্যবস্থা নেয়নি প্রশাসন। সরকারের পক্ষ থেকে বিষয়টি নিয়ে কার্যকর ব্যবস্থা চোখে পড়েনি। ছাত্রলীগের নির্যাতনে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) শেরেবাংলা হলে হত্যাকান্ডের ঘটনার পর বিষয়টি আবারও আলোচনায় আসে। এই হলের ২০১১ নম্বর কক্ষে তাকে নির্মম নির্যাতনের পর হত্যা করা হয়। কক্ষটি ছাত্রলীগের একটি ঘোষিত টর্চার সেল ছিলো বলে জানা যায়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায় কক্ষটি শাখা ছাত্রলীগের টর্চার সেল হিসেবে দীর্ঘ সময় থেকেই ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এই কক্ষে থাকতেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের আইনবিষয়ক উপসম্পাদক ও সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ছাত্র অমিত সাহা, উপদপ্তর সম্পাদক ও কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ছাত্র মুজতাবা রাফিদ, সমাজসেবা বিষয়ক উপসম্পাদক ও বায়োমেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ছাত্র ইফতি মোশারফ ওরফে সকাল এবং প্রত্যয় মুবিন। শিক্ষার্থীরা বলছেন অনেকটা ঘোষণা দিয়েই ছাত্রলীগ এ কক্ষটিকে টর্চার সেল হিসেবে ব্যবহার করে আসছে। নাম গোপন রাখার শর্তে এক শিক্ষার্থী বলেন, সাধারণ শিক্ষার্থীরা ছাত্রলীগের কর্মসূচিতে অংশ নিতে একটু ব্যতিক্রম হলেই এ রুমে এসে মারধর করা হয়। কক্ষটি থেকে সোমবার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা খুনের আলামত হিসেবে স্ট্যাম্প, চাপাতি ও মদের বোতল উদ্ধার করেছেন। মদ্যপ অবস্থায় হত্যাকারীরা ফাহাদকে মারধর করে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ২০১৮ সালের মাঝামাঝি সময়ে ১৭ ব্যাচের ছাত্র সাখওয়াত অভিকে জোরপূর্বক সমাবেশে যেতে বাধ্য করেন ছাত্রলীগ নেতা অমিত সাহা। সমাবেশে যেতে দেরি করলে অমিত তাকে প্রহার করলে হাত ভেঙে যায়। আঘাতে হাত ভাঙলেও তাকে বলতে বাধ্য করা হয়- সিঁড়ি থেকে পড়ে হাত ভেঙেছে। এরকম নির্যাতন চললেও শিক্ষার্থীরা কেউ ভয়ে প্রতিবাদ করেনি। কারণ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেল এই হলের ছাত্র হওয়ায় সবকিছুই নিয়ন্ত্রণ ছিল তার হাতে।
শেরে বাংলা হল সরজমিনে পদক্ষিণ করে দেখা যায়, র্যাগিংকে অপরাধ হিসেবে উল্লেখ করে হল প্রভোস্টের নাম্বার দিয়ে ডিজিটাল ব্যানারও টাঙানো হয় পুরো হল প্রাঙ্গণে। শিক্ষার্থীরা গণমাধ্যম কর্মীদের জানান, আওয়ামী লীগ এবং ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের মিলনস্থল হিসেবে কক্ষটি ব্যবহার করা হতো। প্রায় প্রতি রাতেই সে কক্ষে পার্টি চলতো। মাতাল শিক্ষার্থীদের চিৎকার চেঁচামেচি শোনা যেতো। এতে আশপাশের কক্ষের শিক্ষার্থীদের নানা সমস্যা হলেও, ভয়ে কারো কিছুর বলার উপায় ছিলো না।
অধিকাংশ টর্চার সেলকে ছাত্রলীগ ‘পলিটিক্যাল রুম’ হিসেবে উল্লেখ করে থাকে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ছাত্রলীগের এক নেতা বলেন, ২০১১ নাম্বার কক্ষটি ছাত্রলীগের ‘পলিটিক্যাল রুম’ হিসেবে পরিচিত ছিলো। এখানে বিভিন্ন সময় শিক্ষার্থীদের ধরে এনে জিঙ্গাসাবাদ ও নির্যাতন করা হতো।’ বুয়েটের অন্য একটি হলের এক সহকারী প্রভোস্ট নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি হলে ছাত্রলীগের এমন কক্ষ রয়েছে, যেগুলো ‘টর্চার সেল’ হিসেবে পরিচিত।’ তিনি বলেন, ‘এটি দীর্ঘদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃতিতে ছিলো না, কিন্তু গত পাঁচ বছরে ফিরে এসেছে। প্রতিটি হলেই নির্দিষ্ট কিছু কক্ষ থাকে, যেখানে ছাত্রলীগ সদস্যরা থাকেন। সেখানে তারাই সর্বেসর্বা, অন্য কাউকে সেখানে থাকতে দেওয়া হয় না।’ সহকারী প্রক্টরের বক্তব্য থেকে জানা যায়, রাজনৈতিক ক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে বহিরাগত এবং সাবেক শিক্ষার্থীরাও বিভিন্ন হলে থাকেন।
গত বছর সারাদেশে নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের সময়ও দাইয়ান নাফিস প্রধান নামে অপর এক শিক্ষার্থীকে শিবির কর্মী আখ্যা দিয়ে পিটিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেয় ছাত্রলীগ। ছাত্রলীগ সদস্যদের হাতে মারধর এবং নির্যাতনের সময় হয়ে বিভিন্ন সময় অভিযোগ করেও কোন বিচার পায়নি শিক্ষার্থীরা। বিষয়টি নিয়ে আবরার হত্যার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মুখ খুলতে শুরু করেছেন শিক্ষার্থীরা। ##
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।