Inqilab Logo

বুধবার, ০৩ জুলাই ২০২৪, ১৯ আষাঢ় ১৪৩১, ২৬ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

বগুড়ায় ২শ’ কোটি টাকার প্রকল্প ভেস্তে যাবার আশঙ্কা

প্রকাশের সময় : ১৬ জুন, ২০১৬, ১২:০০ এএম

মহসিন রাজু, বগুড়া থেকে : পানি উন্নয়ন বোর্ডের ঠিকাদারী কাজের দুর্নীতি রোধ এবং স্বচ্ছতা রোধে এবং ঠিকাদারী কাজের মান নিশ্চিত করতে গঠিত ‘‘কোয়ালিটি কন্ট্রোল টাস্কফোর্স (কিউসি)’’ এর আমলাতান্ত্রিক ওয়ার্ক সিডিউলের কারণে বগুড়ায় যমুনা নদীর ভাংগন রোধে গৃহীত কোটি কোটি টাকার কার্যক্রম মুখ থুবড়ে পড়ার উপক্রম হয়েছে। ফলে ইচ্ছা ও প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি থাকা সত্ত্বেও রোধ করা যাচ্ছেনা নদী ভাংগন, দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদার ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা পরিণত হয়েছেন ঠুঁটো জগন্নাথে। অন্যদিকে ভাংগন আতংকে দিশেহারা হয়ে পড়েছে নদী পাড়ের হাজারো মানুষ !
এমনি একটি ঘটনায় গত মংগলবার বিকাল থেকে সন্ধ্যা থেকে বুধবার সকাল পর্যন্ত কোনোরকম প্রটেকশান ছাড়াই ভাংগতে থাকে বগুড়ার চন্দন বাইশার রৌহদহ এলাকা। পরদিন সকালে নির্দিষ্ট অফিস টাইম সকাল ১০টায় ‘‘কিউসি টিম’’র সদস্য এসে ভাংগন রোধের কাজে ব্যবহৃত ২৫০ কেজি বালির ‘বস্তা গণনা’র কাজ শেষ করার পর এলাকাটির ভাংগন রোধ প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ নৌবাহিনীর নারায়ণগঞ্জ ডক ইয়ার্ডের পক্ষ থেকে ভাংগন কবলিত পয়েন্টে বালি ভর্তি জিওটেক্স বস্তা ফেলার কাজ শুরু করে। এতে রৌহদহ গ্রামবাসী হাফ ছেড়ে বাঁচে, তাদের বক্তব্য যাক এ যাত্রায় গ্রামটি নদীগর্ভে বিলীন হওয়া থেকে বেঁচে গেল অল্পের জন্য।
এমন ঘটনা যে বগুড়াতেই ঘটছে তা’ নয় বরং সারা দেশেই পানি উন্নয়ন বোর্ডের সব প্রকল্পেই সৃষ্টি হয়েছে জটিলতা। সরেজমিনে গতকাল বুধবার ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেছে আগের দিনে আসা শত শত বালি ভর্তি বস্তা নিয়ে দাঁড়ানো নৌকা থেকে বালির বস্তা ফেলা হচ্ছে। ঘটনাস্থলে উপস্থিত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান নৌবাহিনীর অবঃ (অনারারি) লেফটেনেন্ট আশরাফুল ইসলাম জানালেন তীব্র নদী ভাংগন কবলিত এলাকা রৌহদহ থেকে কর্নিবাড়ী পর্যন্ত ৬ কি.মি. এলাকাকে সুরক্ষায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান নৌবাহিনীর নারায়ণগঞ্জ ডক ইয়ার্ড ২শ’ ৬৩ কোটি টাকার একটি কার্যাদেশ পেয়েছে। কার্যাদেশ অনুযায়ী ২০১৮ সালের মধ্যে উল্লেখিত ৬ কি.মি. এলাকায় জরুরী ভাংগন রোধে বালির বস্তা ফেলা, সিসি ব্লক নিক্ষেপ এবং নদীতীর সংরক্ষণে সিডিউল মোতাবেক অন্যান্য কাজ করা হবে। এসংক্রান্ত প্রকল্পের এমডি নৌবাহিনীর ক্যাপ্টেন জাহান ইয়ার (ই) পিএসসি. বিএন এরই মধ্যে প্রকল্প পরিদর্শন করে গেছেন। এদিকে এই প্রকল্পের কাজের স্বচ্ছতা নিশ্চিতের জন্য তদারকিতে নিয়োজিত কিউসি কর্মকর্তারা তাদের অফিস সিডিউলের বাইরে বালির বস্তা ও সিসি ব্লকের গণনা করতে রাজী না হওয়ায়  প্রকল্পের গতি স্থবির হয়ে পড়ার আশংকা করছেন তারা। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কর্মী এবং বগুড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা দিন রাতের বেশির ভাগ সময় নদীর পাড়ের প্রকল্প এলাকায় ব্যয় করলেও কিউসি’ হিসেবে দায়িত্ব পালনকারীরা রমজান মাসের অজুহাতে বেলা সাড়ে ৩টা পর্যন্ত তাদের দায়িত্ব পালন করছেন। ইমার্জেন্সি পরিস্থিতিতেও তারা এমনকি নির্বাহী প্রকৌশলীর কথাও রাখেন না বলে অভিযোগ রয়েছে।
এই অভিযোগ সম্পর্কে কিউসি হিসেবে বগুড়ায় দায়িত্ব পালনকারী আশুতোষ বর্মন জানান, এই ওয়ার্ক সিডিউল করে দিয়েছে হেড অফিস। আর তারা ওই সিডিউল পালন করেন মাত্র। তবে প্রয়োজনের সময় এই ওয়ার্ক সিডিউলের বাইরে যে একদমই কাজ করেন না এমন কথা পুরোপুরি ঠিক নয় । 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বগুড়ায় ২শ’ কোটি টাকার প্রকল্প ভেস্তে যাবার আশঙ্কা
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ