দেশে দেশে রোজার উৎসব
মাহে রমজান আরবী নবম মাসের নাম। চাঁদের আবর্তন দ্বারা যে এক বৎসর গণনা করা হয়,
প্রশ্ন: মজলুমকে সাহায্যে করা কী ঈমানী দায়িত্ব ?
উত্তর : মোমিনমাত্রই একে অন্যের ভাই। এক মোমিন অপর মোমিনের মাঝে এমন ভালোবাসা ও আন্তরিকতা থাকবে যে, পরস্পর একটি দেহের মতো মনে হবে। একজনের ক্ষতি আরেকজনকে ততটাই আহত করবে, যতটা মাথায় আঘাত পেলে তার সারা শরীর আহত হয়। বিপদ-মুসিবতের সময় একে অন্যের প্রতি আন্তরিকভাবে সহযোগিতার হাত প্রসারিত করবে। কোনো ভাই অসুস্থ বা আহত হলে কিংবা কোনো ক্ষতি বা বিপদের সম্মুখীন হলে অপর ভাই তার সাহায্যে এগিয়ে আসবে। কেউ কারও ইজ্জতহানি করতে বা কেউ তাকে অন্যায়ভাবে পরাজিত করতে চাইলে তার আশু সমাধান বা পক্ষাবলম্বন করা মোমিনের অপরিহার্য দায়িত্ব। আল্লাহ তায়ালা কোরআনুল কারিমে এরশাদ করেন-‘মোমিনরা তো পরস্পর ভাই ভাই’। (সূরা হুজরাত : ১০)। মহান আল্লাহ আরও এরশাদ করেন-‘ঈমানদার পুরুষ ও ঈমানদার নারী একে অপরের সহায়ক’। (সূরা তওবা : ৭১)। মজলুমকে সাহায্য করার বিষয়ে পবিত্র কোরআনে সুস্পষ্টভাবে আল্লাহ তায়ালা বলেন-‘হে ঈমানদারগণ! তোমাদের কী হলো, তোমরা কেন আল্লাহর রাস্তায় অসহায় নর-নারী ও শিশুদের জন্য লড়াই করছ না, যারা দুর্বলতার কারণে নির্যাতিত হয়ে ফরিয়াদ করে বলছে, হে আমাদের রব! এ জনপদ থেকে আমাদের বের করে নিয়ে যাও, যার অধিবাসীরা জালেম এবংতোমার পক্ষ থেকে আমাদের জন্য কোনো বন্ধু, অভিভাবক ও সাহায্যকারী পাঠাও। যারা ঈমানদার, তারা লড়াই করে আল্লাহর রাস্ত আর যারা কাফের, তারা লড়াই করে তাগুতের পথে। কাজেই শয়তানের সহযোগীদের সঙ্গে লড়ে যাও। নিশ্চিত জেনে রাখ শয়তানের কৌশল আসলেই দুর্বল’। (সূরা নিসা : ৭৫-৭৬)। জালেমদের প্রেিরাধের ব্যাপারে আল্লাহপাক এরশাদ করেন-‘তোমরা জালেম সম্প্রদায়ের মোকাবেলায় তোমাদের সাধ্যানুযায়ী প্রস্তুতি গ্রহণ করো’। (সূরা আনফাল : ৬০)। ইসলাম মজলুমের পক্ষাবলম্বন করেছে। মজলুম যদি অমুসলিমও হয়, তবুও তাকে সাহায্য করার তাগিদ দিয়েছে পবিত্র ধর্ম ইসলাম। হজরত রাসুল (সা.) এরশাদ করেন-’নিশ্চয়ই আল্লাহ তার প্রতি দয়া করেন, যে তার বান্দাদের প্রতি দয়া করে’। (বুখারি : ১৭৩২)। হজরত রাসূল (সা.) আরো বলেন-যে ব্যক্তি দুনিয়াতে অপরের একটি প্রয়োজন মিটিয়ে দেবে, পরকালে আল্লাহ তার ১০০ প্রয়োজন পূরণ করে দেবেন এবং বান্দার দুঃখ-দুর্দশায় কেউ সহযোগিতার হাত বাড়ালে আল্লাহ তার প্রতি করুণার দৃষ্টি দেন’। (মুসলিম : ২৫৬৬)। হজরত নোমান (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) এরশাদ করেন-‘সব মোমিন একই ব্যক্তি সত্তার মতো। যখন তার চোখে যন্ত্রণা হয়, তখন তার গোটা শরীরই তা অনুভব করে। যদি তার মাথাব্যথা হয়, তাতে তার গোটা শরীরই বিচলিত হয়ে পড়ে’। (মুসলিম : ২৫৮৬)। রাসুলুল্লাহ (সা.) আরও এরশাদ করেন-‘মোমিনরা পারস্পরিক ভালোবাসা ও সহযোগিতার ক্ষেত্রে এক দেহের মতো। দেহর কোনো অঙ্গ আঘাতপ্রাপ্ত হলে পুরো দেহ সে ব্যথা অনুভব করে’। (বোখারি : ৬০১১)। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘আল্লাহপাক বান্দার সাহায্যে ততক্ষণ থাকেন, যতক্ষণ সে অপর ভাইয়ের সাহায্যে থাকে।’(মুসলিম : ২৩১৪)। রাসুলুুল্লাহ (সা.) এরশাদ করেন-‘তোমার ভাইকে সাহায্য করো। চাই সে জালেম হোক বা মজলুম। জনৈক ব্যক্তি জিজ্ঞেস করল হে আল্লাহর রাসুল (সা.) মজলুমের সাহায্যের বিষয়টি তো স্পষ্ট। কিন্তু জালেমকে কীভাবে সাহায্য করবো? তিনি বলেন, তাকে জুলুম থেকে বিরত রাখ। এটাই তার প্রতি তোমার সাহায্য। (বোখারি : ১৮৫৩)।
উত্তর দিচ্ছেন: এহসান বিন মুজাহির
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।