পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
আদালতের নির্দেশনা মানছে না পুলিশ : সাদা পোশাকে আটকের অভিযোগ
মাহে রমজানে সাঁড়াশি অভিযানের কারণে দেশজুড়ে তোলপাড়
স্টাফ রিপোর্টার : জঙ্গিবিরোধী অভিযান নিয়ে দেশ জুড়ে চলছে তোলপাড়। পবিত্র রমজান মাসে এ ধরনের অভিযানের যুক্তিতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সমাজের বিভিন্ন শ্রেণীর সচেতন নাগরিকেরা। তারা বলছেন, জঙ্গি দমন অভিযানের নামে প্রতিদিন গণহারে হাজার হাজার মানুষকে গ্রেফতার করায় এ প্রশেরœ সৃষ্টি হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, জঙ্গিবিরোধী অভিযানের নামে পুলিশ যেভাবে হাঁক-ডাক চালিয়ে যাচ্ছে মূলত দেশে সেই পরিমাণ জঙ্গি আস্তানা আছে কিনা এ নিয়েও প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। দেশে জঙ্গিদের আখড়ায় পরিণত হয়েছে, এমন মেসেজই আন্তর্জাতিক অঙ্গনে উপস্থাপন করছে কিনা তাও সরকারকে খতিয়ে দেখার প্রয়োজন।
মানবাধিকার সংগঠনের কর্মীরা বলছেন, অভিযানের সময় অনেক ক্ষেত্রে যথাযথভাবে আদালতের নির্দেশনা মানা হচ্ছে না। তবে পুলিশ বরাবরই তা অস্বীকার করে আসছে।
পুলিশ বলছে, দেশব্যাপী পুলিশের চলমান জঙ্গিবিরোধী বিশেষ অভিযানে গত চার দিনে ১১ হাজার ৬৮৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। যার মধ্যে জঙ্গি সন্দেহে রয়েছে ১৪৫ জন। গতকাল চতুর্থ দিনে সারাদেশে ৩ হাজার ১১৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এর মধ্যে জঙ্গি সন্দেহে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ২৬ জনকে। সোমবার সকাল থেকে গতকাল (মঙ্গলবার) সকাল পর্যন্ত এ অভিযান চলে। পুলিশ সদর দপ্তরের জনসংযোগ কর্মকর্তা এ কে এম কামরুল আহছান এ তথ্য জানিয়েছেন।
এদিকে আইন বিশেষজ্ঞ ও বিশিষ্টজনেরা অভিযোগ করেছেন, জঙ্গিবিরোধী সাঁড়াশি অভিযানের নামে ঈদের আগে সারাদেশে গণগ্রেফতারে মেতেছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। সপ্তাহব্যাপী পুলিশি এ অভিযানে মানা হচ্ছে না আইনের বিধি-বিধান। উপেক্ষিত হচ্ছে আদালতের নির্দেশনা। বিনা ওয়ারেন্টে, সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়া, এমনকি সাদা পোশাকে এভাবে দৈনিক হাজার হাজার সাধারণ মানুষ ও বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের গ্রেফতারকে আইনের পরিপন্থী, অমানবিক বলে মনে করেন তারা। অনেক ক্ষেত্রে গ্রেফতারের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আদালতে সোপর্দ করার বিধানও মানছে না পুলিশ। ফলে জনমনে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বৃদ্ধি পেয়েছে। এ সবের পেছনে ঈদের আগে গ্রেফতার বাণিজ্য ও বিরোধী দল দমনই মুখ্য কারণ বলে মনে করেন তারা।
সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক সভাপতি অ্যাড. খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, জঙ্গি গ্রেফতারের নামে বর্তমানে যে গণগ্রেফতার চলছে তা আইনের পরিপন্থী। এটা আদালতের নির্দেশনা অমান্যের সামিল। কারণ সর্বোচ্চ আদালতের সুস্পষ্ট নির্দেশনা ছিলো পরোয়ানা ছাড়া গ্রেফতার করা যাবে না। কিন্তু বর্তমানে যেভাবে গণগ্রেফতার করা হচ্ছে তা আদালত অবমাননা এবং আইনের শাসনের পরিপন্থী। এভাবে ঢালাও গ্রেফতার করলে অদৃশ্য কারণে মূল আসামিরা পার পেয়ে যাবে।
এর আগে পুলিশ সদর দপ্তর জানায়, শুক্রবার সকাল থেকে গত সোমবার সকাল পর্যন্ত সাঁড়াশি অভিযানে ৮ হাজার ৫৬৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়, যার মধ্যে জঙ্গি সন্দেহে গ্রেফতার করা হয় ১১৯ জনকে।
পুলিশের পাঠানো বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, প্রথম দিনে জঙ্গি সন্দেহে গ্রেফতার ৩৭ জনের মধ্যে ২৭ জন জেএমবি ও জাগ্রত মুসলিম জনতা বাংলাদেশের জেএমজেবি) সাত জন রয়েছে। বাকি তিন জনের পরিচয় সম্পর্কে জানায়নি পুলিশ সদর দপ্তর। ওই দিন গ্রেফতার হওয়া আসামিদের মধ্যে গ্রেফতারি পরোয়ানাভুক্ত ১ হাজার ৮৬১ জন, নিয়মিত মামলার ৯১৭ জন, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার মামলার ১৯ জন ও মাদক উদ্ধার মামলার ৩৫৮ জন রয়েছে।
দ্বিতীয় দিনে গ্রেফতারকৃত জঙ্গি ছাড়া অন্যদের মধ্যে ১ হাজার ৪৯৬ জন গ্রেফতারি পরোয়ানাভুক্ত আসামি। আর নিয়মিত মামলার আসামি ৫৮৮ জন।
তৃতীয় দিনের অভিযানে পরোয়ানাভুক্ত ২ হাজার ৫৭৮ জন, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার মামলায় ১৯ জন, মাদক উদ্ধার মামলায় ১৬০ জন ও অন্যান্য মামলায় ৪৫৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
চতুর্থ দিনের অভিযানে জঙ্গি ছাড়া পরোয়ানাভুক্ত ২ হাজার ৩৬৮ জন, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার মামলায় ৩৮ জন, মাদক উদ্ধার মামলায় ২৯৫ জন ও অন্যান্য মামলায় ৩৮৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
সংবিধান বিশেষজ্ঞ ড. শাহদীন মালিক গতকাল বলেন, উচ্চ আদালতের নির্দেশনা ছিলো- বিনা কারণে কাউকে হয়রানিমূলক গ্রেফতার করা যাবে না। আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী চলমান গণগ্রেফতার আদালত অবমাননার শামিল ও বেআইনি। স্পষ্টই বোঝা যাচ্ছে, আদালতের নির্দেশনা মেনে এত লোককে গ্রেফতার করা সম্ভব না। তাই আইন অমান্য করে এই গণগ্রেফতার চলছে। এভাবে গ্রেফতার করলে পুলিশি সরকারের ওপর জনগণের আস্থা কমবে।
এদিকে জঙ্গিবিরোধী সাঁড়াশি অভিযানের নামে গণগ্রেফতার বন্ধ করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে খেলাফত মজলিস। গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে দলটির আমির মাওলানা মোহাম্মদ ইসহাক ও মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদের এ আহ্বান জানান।
বিবৃতিতে খেলাফত নেতৃবৃন্দ বলেন, সরকার সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা বিধানে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। ঘরে-বাইরে কোথায়ও আজ মানুষের জান-মাল-ইজ্জতের নিরাপত্তা নেই। ধর্ম-বর্ণ, দেশি-বিদেশি নির্বিশেষে সব মানুষই আজ নিরাপত্তাহীন হয়ে পড়েছে। জনগণ অজানা আশঙ্কায় দিনাতিপাত করছে। গুপ্তহত্যা বন্ধ ও প্রকৃৃত অপরাধীদের শনাক্ত করতে সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ হয়ে সরকার সাঁড়াশি অভিযানের নামে বিরোধীদলীয় রাজনৈতিক নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষকে গণগ্রেফতার শুরু করেছে।
নেতৃবৃন্দ বলেন, পুলিশের হিসাব মতে গত ৪ দিনে সন্দেহভাজন ১১৯ জন জঙ্গিসহ ১১ হাজারের বেশি গ্রেফতার করা হয়েছে। অর্থাৎ ১১৯ জন সন্দেহভাজন জঙ্গি আর বাকি সবাই বিরোধী রাজনৈতিক নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ। আসলে সরকার পুলিশের গ্রেফতার বাণিজ্য চাঙ্গা করার জন্যে এই গণগ্রেফতার অভিযান শুরু করেছে বলে মনে হচ্ছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, রমজান মাসে সরকারের গ্রেফতার-নির্যাতনের জন্যে অনেক বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীরা বাসায় থাকতে পারছেন না। সুষ্ঠুমত রোজা রেখে সেহরি-ইফতার করতে পারছেন না। এ গ্রেফতার-নির্যাতন রমজানের রোজার পবিত্রতা নষ্টের শামিল। অবিলম্বে বিরোধী দল ও সাধারণ মানুষ দমন-পীড়নের এই গণ-গ্রেফতার বন্ধ করতে হবে।
চট্টগ্রামে ৩০৬ জন গ্রেফতার
চট্টগ্রাম ব্যুরো জানায়, চট্টগ্রাম মহানগর ও জেলায় বিভিন্ন থানায় ‘জঙ্গিবিরোধী’ অভিযান চালিয়ে ৩০৬ জনকে আটক করেছে পুলিশ। তবে এদের মধ্যে জঙ্গি সম্পৃক্ততার অভিযোগে কেউ আটক হয়নি বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে।
জেলার বিভিন্ন থানা এলাকা থেকে আটক ২১৫ জনের মধ্যে জামায়াত-শিবিরের ১১ জন নেতাকর্মী থাকার কথা স্বীকার করেছে পুলিশ। সোমবার দিনগত রাতে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়। এনিয়ে গত চার দিনে ১৪১০জনকে আটক করা হলো।
চট্টগ্রামের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বিশেষ শাখা) রেজাউল মাসুদ জানান, জেলার ১৬ থানায় রাতভর অভিযান চালিয়ে ২১৫ জনকে আটক করা হয়েছে। এদের মধ্যে ২ জন শিবির ও ৯ জন জামায়াত দলীয় কর্মী আছে। একই অভিযানে ২টি শর্টগান, ৮টি কার্তুজ, ৩৫ লিটার চোলাই মদ, ৫৫৮ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছে।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয় ২৪ ঘন্টায় মোট ১০৬ জন আসামি গ্রেফতার করা হয়। এর মধ্যে বিশেষ অভিযানে ৫১ জন আসামি গ্রেফতার করা হয়। তাদের মধ্যে জঙ্গি কেউ নেই।
খুলনায় গ্রেফতার ৯৯
খুলনা ব্যুরো জানায়, খুলনায় মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘন্টায় দুই চরমপন্থী ও ১২ জামায়াত নেতাকর্মীসহ আরও ৯৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের মুখপাত্র এডিসি মনিরুজ্জামান মিঠু জানান, গত ২৪ ঘন্টায় মহানগরী এলাকা থেকে ৩৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এরমধ্যে পূর্ব বাংলা কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য ও পুলিশের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী অহিদুর শিকদার (৩৫) ও নিউ বিপ্লবী কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য জেলা পুলিশের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী শংকর কুমার (৪৫) আছে। এছাড়া মনিরামপুর থানার জামায়াত কর্মী মোসাদ্দেক হোসেন (৫৫), খুলনার জামায়াত কর্র্মী ইয়াহিয়া খান (৫২) এবং ছাত্রশিবির কর্মী রায়হান হাওলাদার (২৫) ও রাফিন সরদার (২৪) রয়েছেন।
খুলনা জেলা পুলিশের ওসি-১ আব্দুর রশিদ জানান, ২৪ ঘন্টায় জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে ৬২ জনকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের মধ্যে ৮ জন জামায়াতে ইসলামীর এবং একজন বিএনপি কর্মী।
সিলেটে ৫৬ জন গ্রেফতার
সিলেট অফিস জানায়, সিলেটে পুলিশের বিশেষ অভিযানে জামায়াত নেতাসহ ৫৬ জন আসামিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে কানাইঘাট পৌর জামায়াতের সাংগঠনিক সম্পাদক ছদরুল ইসলাম রয়েছেন। গত সোমবার দিবাগত রাত থেকে মঙ্গলবার ভোর পর্যন্ত সিলেট মহানগর ও জেলা পুলিশ অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেফতার করে।
বগুড়ায় গ্রেফতার ৯৬
বগুড়া অফিস জানায়, বগুড়ায় ২৪ ঘন্টায় জেএমবির ১ সদস্য ও জামায়াত শিবিরের ৬ জনসহ বিভিন্ন মামলায় ৯৬ জন গ্রেফতার হয়েছে।
বগুড়ার সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার গাজিউর রহমান জানান, সদর উপজেলাসহ জেলার সব থানায় এই অভিযান চলছে। এর মধ্যে বগুড়া সদর এলাকা থেকে ১৭ জন, শিবগঞ্জে ৭ জন, সোনাতলায় ৪জন, গাবতলীতে ১১জন, সারিয়াকান্দিতে ৫জন, শেরপুরে ১২জন, নন্দীগ্রামে ৯জন, আদমদীঘিতে ৫ জন, দুপচাঁচিয়ায় ৫ জন, কাহালুতে ৪ জন, শাজাহানপুর ১০ জনকে গ্রেফতার করেছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় গ্রেপ্তার ৬৮
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সংবাদদাতা জানান, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ৬৮ জনকে আটক করা হয়েছে। গত সোমবার রাত থেকে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত এ অভিযান পরিচালিত হয়। জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ডিআইও-১) মোঃ আব্দুল কাইয়ূম জানান, সপ্তাহব্যাপী সাঁড়াশি অভিযানের অংশ হিসেবে জেলার ৯টি উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
সাতক্ষীরায় আটক ৪৭
সাতক্ষীরা জেলা সংবাদদাতা জানান, জঙ্গী ও সন্ত্রাস দমনে সাতক্ষীরায় পুলিশের সাঁড়াশি অভিযানের পঞ্চম দিনে এক জেএমবি সদস্য এবং জামায়াত-শিবিরের নয়জন কর্মীসহ মোট ৪৭ জনকে আটক করা হয়েছে। সোমবার রাত থেকে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত জেলার আটটি থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়। আটক জেএমবি সদস্য কলারোয়া উপজেলার রাজপুর গ্রামের সোলাইমান সরদারের ছেলে হাসানুজ্জামান, এটি জানিয়েছে পুলিশ।
ঝিনাইদহে আটক ২৭
ঝিনাইদহ জেলা সংবাদদাতা জানান, ঝিনাইদহের কথিত দুই জঙ্গি ও চার জামায়াত-শিবির কর্মীসহ ২৭ জনকে আটক করা হয়েছে। সোমবার রাত থেকে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন উপজেলায় অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়। আটককৃতদের সদর উপজেলায় ৫, শৈলকুপায় ৪, হরিনাকু-ুতে ৬, কালীগঞ্জে ৫, কোটচাদপুরে ৪ এবং মহেশপুরে ৩ জন রয়েছে। আটকের বিষয় নিশ্চিত করেছেন জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আজবাহার আলী শেখ।
নাটোরো ৫৩ মোটরসাইকেলসহ ৬৩ জন আটক
নাটোর জেলা সংবাদদাতা জানান, পুলিশী অভিযানে নাটোর জেলার বিভিন্নস্থান থেকে তিন জামায়াত ও ছাত্রশিবির নেতাকর্মীসহ ৬৩ জনকে আটক করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘন্টায় জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে তাদের আটক করা হয়। নাটোরের পুলিশ সুপার শ্যামল কুমার মুখার্জী জানান, নিয়মিত অভিযানের অংশ হিসেবে জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালানো হয়। অভিযানে নাটোর নবাব সিরাজ-উদ-দৌলা সরকারি কলেজ ছাত্রশিবিরের সভাপতি নাজিম উদ্দিন ও শিবির কর্মী মাসুদ রানাসহ ৬৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়। এছাড়াও সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র না নিয়ে সড়কে মোটরসাইকেল চলাচলকারীদের তল্লাশী করা হয়। এ সময় জেলার বিভিন্নস্থান থেকে ৫৩টি মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়। চলতি এই অভিযানে নাটোরে এ পর্যন্ত ২২১জনকে আটক করা হয়েছে।
কুষ্টিয়ায় আটক ৩৬
কুষ্টিয়া থেকে স্টাফ রিপোর্টার জানান, কুষ্টিয়ায় জামায়াতের ৩ নেতা-কর্মীসহ ৩৬ জনকে আটক করেছে পুলিশ। সেই সাথে ইমরান হোসেন নামে এক জঙ্গি সদস্যকে আটক করেছে। সোমবার রাত থেকে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত জেলার ৬টি থানার বিভিন্ন এলাকা থেকে পুলিশ তাদের আটক করে। আটককৃত অন্যদের মধ্যে জামায়াতের রুকন মিরপুর উপজেলার ধলসা পয়ারী মাদ্রাসার সুপার মাওলানা আজিজুর রহমান, জামায়াতের সদর থানা শাখার অফিস সহকারী ইসমাঈল হোসেন, কর্মী সিদ্দিকুর রহমান সিদ্দিক।
জামায়াতের জেলা আমির অধ্যক্ষ খন্দকার একেএম আলী মুহসীন জানান, পুলিশের অভিযানে কয়েকদিনে জামায়াতের ৩৪ জন নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
নীলফামারীতে গ্রেফতার ২২
নীলফামারী জেলা সংবাদাদাতা জানান, নীলফামারীতে জঙ্গি ও সন্ত্রাস দমনে পুলিশের বিশেষ সাঁড়াশি অভিযানে একজন জামায়াত কর্মীসহ ২২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সোমবার রাত থেকে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত জেলার ৬ উপজেলার বিভিন্নস্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়। এনিয়ে গত ৫ দিনে ৮৭ জনকে গ্রেফতার করা হলো।
রাজবাড়ীতে ৫ দিনে ১৬০ জন আটক
গোয়ালন্দ (রাজবাড়ী) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, রাজবাড়ীতে ৫ দিনে ১৬০ জন আটক ৩টি অস্ত্র ও ৬ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়েছে।
ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার তোফায়েল আহম্মেদ জানান, গত শুক্রবার থেকে পুলিশের সাঁড়াশি অভিযানে রাজবাড়ীর পাঁচটি উপজেলা থেকে শুক্রবার ১৩ জন, শনিবার ৩২ জন, রোববার ৪২ জন, সোমবার ৩৬ জন এবং আজ মঙ্গলবার ৩৭ জন আটক করা হয়েছে।
এর মধ্যে রাজবাড়ী পুলিশের তালিকাভূক্ত ৩ সন্ত্রাসীকে ৩টি অস্ত্র ও ৬ রাউন্ড গুলিসহ গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গলাচিপায় আটক ৪
গলাচিপা (পটুয়াখালী) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, গলাচিপা থানা পুলিশ সোমবার রাতে অভিযান চালিয়ে ৪ জনকে গ্রেফতার করেছে। এরা হলেন, উপজেলা ছাত্র শিবিরের কোষাধ্যক্ষ আল আমিন (৩০) তেঁতুলতলা, জামায়াত নেতা জাকির হোসেন (৪২), নুর মোহাম্মদ (৫৫) ও পাড় ডাকুয়া থেকে সাজাপ্রাপ্ত আসামি আওয়ামী লীগ নেতা সুলতান খোন্দকারকে।
রাজশাহীতে আটক-৫০
রাজশাহী ব্যুরো জানায়, পুলিশের চলমান অভিযানের পঞ্চম দিনে জামায়াত-বিএনপির কর্মী ও জেএমবি সদস্যসহ জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে পুলিশ মোট ৫০ জনকে আটক করেছে। গত সোমবার সকাল ৬টা থেকে মঙ্গলবার ভোর ৬টা পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়।
রাজশাহী জেলা পুলিশের ডিআই-১ শরিফুল ইসলাম জানান, গত সোমবার সকাল ৬টা থেকে মঙ্গলবার ভোর ৬টা পর্যন্ত জেলার ৯ থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে মোট ৫০ জনকে আটক করেছে। আটককৃতদের ১ জন জেএমবি সদস্য, জামায়াতের কর্মী ১ জন ও বিএনপির ২ জন কর্মী রয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।