পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
আবু হেনা মুক্তি : বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠতে ঝড়বৃষ্টি কম হলেও গত সপ্তাহব্যাপী থেমে থেমে যে বৃষ্টিপাত হচ্ছে তাতেই নগরবাসী পানিতে হাবুডুবু খাচ্ছে। গত তিনদিনের মাঝারি ও ভারি বৃষ্টিতে মহানগরীতে পানিবদ্ধতা প্রকট আকার ধারণ করেছে। আষাঢ়-শ্রাবণ তো পড়েই রয়েছে। ভরা বর্ষা মৌসুমে নগরীর হালহকিকত নিয়ে নগরবাসী দারুণ উদ্বিগ্ন। মহানগরী ও সংলগ্ন এলাকার ৩৪টি খালের মধ্যে এ যাবত মাত্র ১১টি খাল খনন ও সংস্কার করা হয়েছে। আর এতেই ব্যয় হয়েছে প্রায় ৬২ কোটি টাকা। অথচ তিনদিনের বৃষ্টি পাতে রাস্তাঘাট, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, স্কুল-কলেজ, ঘর-বাড়ি সর্বত্র পানি আর পানি। একতলা ও নিচু ঘর-বাড়িতে পানি ওঠেনি এমন এলাকা খুব কম ছিল। সেই সঙ্গে বিদ্যুৎহীন নগরীতে জনদুর্ভোগ ছিল চরমে। নগরীর সাত রাস্তার মোড়, রয়েল মোড়, শান্তিধাম, নিরালা, বেনীবাবু রোড, পূর্ব ও পশ্চিম বানিয়াখামার, রায়পাড়া, টুটপাড়া, খালিশপুর, মুজগুন্নি, বয়রা, বাস্তুহারা এলাকা সর্বত্র সড়কে প্রায় হাঁটু পানি।
পানিবদ্ধতা রোধে কেসিসি গত ৩ বছর আগে ঝটিকা অভিযান শুরু করেছিল। যা এখন আবার ঝিমিয়ে গেছে। কারণ নগরীর ৩৪টিসহ ছোট-বড় মোট ৫০টি খালের অধিকাংশই এখন প্রভাবশালীদের দখলে। এর মধ্যে ১১টি খালের অস্তিত্বই খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে পানি নিষ্কাশনের বন্দবস্ত না থাকায় ড্রেনেজ ব্যবস্থা একেবারেই ভেঙে পড়েছে। সামান্য বৃষ্টি হলেই নগরীর রাস্তাঘাট পানিতে টইটুম্বর হবেই। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে বিশেষ কিছু জায়গায় ত্বরিত পদক্ষেপ না নিলে আসছে বর্ষায় নগরীর অধিকাংশ স্থান পানিতে তলিয়ে যাবে। কেসিসি সূত্র বলছে দীর্ঘ দিনের জঞ্জাল ১ দিনে পরিষ্কার করা সম্ভব নয়। তবে বর্তমান ভারপ্রাপ্ত মেয়রের নেতৃত্বে আশু কিছু ত্বারিত ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। তার কিছু সুফল এই বর্ষাকালেই পাওয়া যাবে।
সূত্র মতে, গত ১ যুগে খুলনা সিটি কর্পোরেশন এলাকায় ব্যাপক হারে জনবসতি বৃদ্ধি পায়। আবাসনের প্রয়োজনে নগরীর পরিধিও বাড়তে থাকে। গত দু’দশকে বিভিন্ন সরকারের আমলে জনসংখ্যা বৃদ্ধির দরুন প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় চলতে থাকে খাস জমি ও খাল দখলের প্রতিযোগিতা। এসব কর্মকা-ে থেমে নেই ভূমি ও জরিপ অফিসের সাথে জড়িত সংশ্লিষ্টরা। অবৈধ অর্থের বিনিময়ে প্রভাবশালীরা যেভাবে পেরেছে খাল দখল করে অবৈধ স্থাপনা ও সুবিধাবাদীরা তঞ্চকতার মাধ্যমে নিজ নামে রেকর্ড করে অন্যের কাছে বিক্রি করে দিয়েছে। নিজেরাও মালিক হয়েছে। অনেক ভূমি অফিসের কর্মচারী এ সকল অনৈতিক কর্মকা-ের মাধ্যমে অনেক জমি-জায়গা ও অর্থকড়ির মালিক হয়েছে। ভূমি অফিস সংশ্লিষ্ট ছা-পোষা কর্মচারীরা এখন বিপুল বিত্তবৈভবের মালিক। অবসরপ্রাপ্ত কানুনগো এবং সার্ভেয়ারদের খুলনা মহানগরীতে ৩ তলা ৫ তলা অট্টালিকা ও অনেক জমি-জায়গা রয়েছে।
সূত্রটি জানায়, নগরী ও পার্শ্ববর্তী এলাকার ৫০ খালের মধ্যে ৮০-৯০ শতাংশ অবৈধ দখলে গেছে। এই দখল প্রক্রিয়ার সাথে প্রায় শতাধিক প্রভাবশালী ব্যক্তি প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত। দখলদারদের উচ্ছেদ আন্দোলন তিন বছর বছর স্তিমিত হয়ে পড়েছে। ফলে বর্ষা মৌসুমের আষাঢ়-আশ্বিন মাস নগরীর একটি বড় অংশে স্থায়ী জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। বর্ষার এ ৪ মাস ডুবে থাকে ২ লাখেরও বেশি নগরবাসী। এর সংখ্যা এবার আরো বাড়বে।
সিটি কর্পোরেশনের সূত্র জানান, নগরী ও পার্শ্ববর্তী এলাকার ৫০ খালের মালিক জেলা প্রশাসন। কর্পোরেশন এগুলো তদারকি করেন মাত্র। উল্লেখযোগ্যÑ খালগুলো হচ্ছে নিরালা, ময়ূর নদী, মন্দার, ক্ষেত্রখালী, মতিয়াখালী, লবণচরা, তালতলা, মিস্ত্রিপাড়া, নবীনগর, ছড়িছড়া, লবণচরা গোড়া, লবণচরা স্লুইস গেট, সবুজবাগ, মিয়াপাড়া পাইপের মোড়, বাস টার্মিনালের পশ্চিম পার্শ্বে, রায়েরমহল পশ্চিমপাড়া, বাস্তুহারা, গল্লামারী নর্থ, দেয়ানা দক্ষিণপাড়া, বাটকেমারী, সাহেবখালী, হাজী তমিজ উদ্দীন, নারকেলবাড়িয়া, সুড়িমারি, ডুবি, বেতবুনিয়া, দেয়ানা, তেঁতুলতলা দশ গেট, হাতিয়া, মাথাভাঙা, মাস্টারপাড়া, হরিনটানা, ক্ষুদে, মজুমদার, কাদের, চক মথুরাবাদ, নবপল্লী, ছোটবয়রা শ্মশানঘাট, রায়েরমহল মোল্লাপাড়া, বিলপাবলা ইত্যাদি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।