পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সাদিক মামুন, কুমিল্লা থেকে : দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত রিপোর্ট ঘিরে তালগোল পাকিয়েছে তনু হত্যা মামলায়। দ্বিতীয় ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক বোর্ডের প্রধান কামদা প্রসাদ সাহা (কেপি সাহা) ও তার টিমের দেয়া প্রতিবেদন জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করেছে।
প্রতিবেদনটি অত্যন্ত কৌশলীভাবে তৈরি করে তাতে তনুর চরিত্র হননের জায়গাটি প্রতিষ্ঠিত করার ঘৃন্যপ্রয়াস রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন তনুর পরিবার ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা। কেবল তাই নয় তনু হত্যাকা-ের কারণ, ধরণ, প্রকৃতি নির্ণয় না করার ব্যর্থতাও ফুটে উঠেছে প্রথম ও দ্বিতীয় ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসকদের পেশাদারিত্বে। তবে সিআইডির মতে ডিএনএ এবং ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনের যোগফলই হচ্ছে ধর্ষণ। এদিকে গতকাল সোমবার বেলা সোয়া ১২টায় তনুর দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন কুমিল্লার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মুনতাহিম বিল্লাহর আদালতে জমা দিয়েছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কুমিল্লা সিআইডির পরিদর্শক গাজী মোহাম্মদ ইব্রাহিম। আদালত ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন মামলার নথির সাথে সংযুক্ত রাখতে আদেশ দেন।
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের ছাত্রী ও থিয়েটার সদস্য সোহাগী জাহান তনুর মৃত্যুর কারণ দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে স্পষ্ট করতে পারেননি চিকিৎসক টিম। কেবল তাই নয়, মৃত্যুর আগে তনুকে ধর্ষণের বিষযটিও ঘুরিয়ে মুড়িয়ে উল্লেখ করা হয়েছে। কুমিল্লার নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা মনে করছেন, দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে ডা. কেপি সাহার নেতৃত্বাধীন চিকিৎসক টিম সেক্সুয়াল ইন্টারকোর্স শব্দের আগে অত্যন্ত কৌশলে ফোর্সলি শব্দটি এড়িয়ে গেছেন। কিন্তু ঘুরিয়ে হলেও বলেছেন ‘মেয়েটির সাথে মৃত্যুর আগে কোন না কোন পুরুষের যৌন সর্ম্পকের মতো ঘটনা ঘটেছে। যদি আপোষেই যৌন সংসর্গ কিছু ঘটে থাকে তাহলে মেয়েটিকে খুন করবে কেনো? আবার ডা. কেপি সাহাই বলেছেন দশদিন পর কবর থেকে পচা-গলা লাশ তুলে দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্ত করতে গিয়ে অনেক আলামতই নষ্ট হয়ে যায়। তনুর ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। পচা-গলা লাশ থেকে কেপি সাহার নেতৃত্বাধীন চিকিৎসক টিম ‘সেক্সুয়াল ইন্টারকোর্স’ খুঁজে পেয়েছেন। কিন্তু মৃত্যুর পর তরতাজা লাশের ময়নাতদন্ত করতে গিয়ে ডা, শারমিন সুলতানা কিছুই পেলেন না।
এদিকে গত ২২মে শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু সাংবাদিকদের বলেছিলেন, তনু হত্যা মামলার প্রথম ময়নাতদন্তে কিছুটা বিভ্রান্তি ও ভুল তথ্য ছিল। আবার ৩০ মার্চ দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের জন্য লাশ উত্তোলনের কুমিল্লার পুলিশ সুপার শাহ আবিদ হোসেন সাংবাদিকদের বলেছিলেন, লাশের অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে তনুকে হত্যার আগে ধর্ষণ করা হয়েছে। সিআইডির ডিএনএ প্রতিবেদনে তনুকে ধর্ষণের আলামত মিলেছে। আর ডিএনএ প্রতিবেদনের পর ডা. কেপি সাহার নেতৃত্বাধীন চিকিৎসক টিম দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে দেয়া নিয়ে নাটকীয়তা শুরু করে। সিআইডির কাছে ডিএনএ প্রতিবেদন চেয়ে বসে। ডিএনএ দিলে দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত রিপোর্ট দেবে এমন অজুহাতও তুলে ধরেন ডা. কেপি সাহা। একপর্যায়ে তাকে হত্যার হুমকি দিয়েছে এমন উড়োচিঠির বক্তব্য তুলে ধরে মিডিয়াতে আরেকদফা আলোচিত হয়ে উঠেন। সবমিলে তনুর হত্যার ঘটনাটি প্রথম ময়নাতদন্তের শুরু থেকে ঘোলাটে রূপ ধারণ করে চিকিৎসকের ভূমিকার কারণে এমন দাবি নাগরিক সমাজের। অন্যদিকে তনুর বাবা ইয়ার হোসেন ও মা আনোয়ারা বেগম ক্ষোভ প্রকাশ করে মিডিয়াতে বলেছেন, আড়াই মাস পর দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনেও চিকিৎসকরা হত্যার কারণ ও ধর্ষণের বিষয়টি স্পষ্ট করতে পারেননি। দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের চিকিৎসকরা মিথ্যা প্রতিবেদন দিয়েছেন।
সিআইডির অতিরিক্ত আইজিপি শেখ হিমায়েত হোসেন সাংবাদিকদের বলেছেন, দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের রিপোর্টে স্পষ্ট বলা হয়েছে তনু মৃত্যুর আগে যৌনতার শিকার হয়েছেন। আবার তারও আগে সিআইডির ডিএনএ প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, তনুর শরীরে তিন পুরুষের শুক্রানুর আলামত মিলেছে। সিআইডির ডিএনএ এবং চিকিৎসকদের ময়নাতদন্তের সার্বিক যোগফলই হচ্ছে ধর্ষণ। আর এখন সিআইডি এ যোগফলের সূত্র ধরেই হত্যার কারণ ও খুনিদের সনাক্ত করতে সিআইডি অত্যন্ত দক্ষতা, সতর্কতার সাথে কাজ করবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।