Inqilab Logo

রোববার, ০৭ জুলাই ২০২৪, ২৩ আষাঢ় ১৪৩১, ৩০ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

বেপরোয়া ভায়াগ্রা চক্র

মিজানুর রহমান তোতা | প্রকাশের সময় : ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১২:০৩ এএম

ভারত থেকে আমদানি করা ভায়াগ্রার বিশাল চালান বেনাপোল স্থলবন্দরে আটকের দেড়মাস পার হলো কিন্তু মূল হোতারা এখনো ধরা ছোঁয়ার বাইরে। আনা হচ্ছে না আইনের আওতায়। এমনকি ভায়াগ্রা গডফাদারদের বিরুদ্ধে ন্যুনতম কোন তদন্ত কিংবা প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন তাদের খুঁটির জোর কোথায়। তাদের হাত কী এতই লম্বা যে বিসিএসআইআরএর রিপোর্ট পরিবর্তন করার সুযোগ পেয়েছে। তারা কাস্টমস কমিশনার বেলাল চৌধুরীসহ যেসব কর্মকর্তারা ভায়াগ্রার চালান আটক করেছেন তাদের দেখে নেওয়ার হুমকি অব্যাহত রেখেছে। আসলে বিশাল চালানটি আটক হওয়ায় ভায়াগ্রা চক্র অতিমাত্রায় বেপরোয়া হয়ে উঠেছে ।

কাস্টমস সূত্র জানায়, ভায়াগ্রা চালান আটক হওয়ার পর দেশের অন্য কোন বন্দর দিয়ে যাতে ভারত থেকে সোডিয়াম স্টার্চ গ্লাইকোলেট নাম দিয়ে ভায়াগ্রা সাদা পাউডার (সিলডেনাফিল সাইট্রেট) আমদানি করতে না পারে তার জন্য বেনাপোল কাস্টমস কর্তৃপক্ষ দেশের সাড়ে ৪ হাজার কাস্টমস ও ভ্যাট কর্মকর্তাকে রেড এ্যালার্ট ম্যাসেজ দেওয়ায় গড়ফাদাররা আরো ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছে। তারা একের পর এক দুদকে দেয়া অভিযোগ সবই ভুয়া প্রমাণ হওয়ায় এখন কিভাবে ক্ষতি করা যায় তার ফন্দি আঁটছে বলে কাস্টমস কমিশনার বেলাল চৌধুরী জানিয়েছেন।
বেনাপোলের বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার মানুষের প্রশ্ন, সর্বনাশী ইয়াবা আগ্রাসনসহ মাদক বন্ধে যেখানে অভিযান পরিচালিত হচ্ছে, সেখানে ২ হাজার ২শ’ ৯৫ কোটি টাকার বিশ্বের সর্ববৃহৎ ভায়াগ্রার চালান আটক হওয়ার তোলপাড় করার ঘটনার নায়করা বহাল তবিয়তে থাকে কীভাবে? শত কিংবা হাজার ট্যাবলেট নয়-আমদানিকৃত ওই ভায়াগ্রা পাউডারে (সিলডেনাফিল সাইট্রেট) ন্যুনতম ২ কোটি ৭০ লাখ ইয়াবা ট্যাবলেট তৈরি হতো। তাদের মতে, এটিকে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা কোনমতেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। সূত্রমতে, যারা ভায়াগ্রা থেকে কোটি কোটি ইয়াবা ট্যাবলেট তৈরির উদ্দেশ্যে ভারত থেকে মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে আমদানি করলো তারা যদি পার পেয়ে যায় তাহলে সাহস নিয়ে আটক করা কাস্টমস কর্মকর্তাদের মনোবল ভেঙে যাবে। ইতোমধ্যেই ভায়াগ্রা আটককারী কর্মকর্তাদের হেনস্তা করার জন্য মাঠে সক্রিয় ভ‚মিকা পালন করছে চক্রটি। বেনাপোল কাস্টমস হাউসের কমিশনার ভায়াগ্রার উৎস তদন্তের জন্য পশ্চিমবঙ্গের কমিশনার অব কাস্টমস (প্রিভেন্টিভ) কে চিঠি দেওয়ায় চক্রটি আরো ক্ষিপ্ত হয়েছে।

শুধু তাই নয়, দুদকের সাবেক উপ পরিচালক আহসান আলী যিনি হবু মহাপরিচালক পরিচয়দানকারী তার আতঙ্কে দীর্ঘ একবছর কাস্টমস হাউসের কর্মকর্তারা অস্থির। এ অস্থিরতা এখনো কাটেনি। তিনি দাবি করেন, “কমিশনারকে তিনি ঝুলিয়েছেন এবং শিক্ষা দিয়েছেন। আর বের হতে পারবে না।” ওই চক্রের মিথ্যা অভিযোগের জবাব দিতে গিয়ে বিঘিœত হয় রাজস্ব আদায় কার্যক্রম। সংশ্লিষ্টদের প্রশ্ন, রাজস্ব আহরণ কার্যক্রমেও চরম বিঘ্নতা ও রাজস্ব ক্ষতির এ দায় কে নেবে?
জানা যায়, শক্তিশালী ভায়াগ্রা চক্রটি দফায় দফায় শুল্ক ফাঁকি দেওয়ার চেষ্টা ও হুমকি-ধামকিসহ নানাভাবে দেশের স্থলবন্দরে অস্থিরতার সৃষ্টি করে চলেছে। এর আগে চক্রটি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদস্য পর্যায়ের কর্মকর্তাকে, রাজনৈতিক ব্যক্তি ও গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তার দিয়ে কমিশনারের কাছে বহু তদবির করে ব্যর্থ হয়ে হিংস্র হয়ে ওঠে। যার রেশ এখনো কাটেনি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ