পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
ইনকিলাব ডেস্ক : বিদেশি কোম্পানি গঠনের জন্য প্রবিধান তৈরির পরই বীমা খাতে বিদেশি বিনিয়োগের অনুমোদন দেবে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)। ২০১১ সালে আইডিআরএ গঠনের পর এমন কথাই বলা হয়েছিল। কিন্তু এখন পর্যন্ত এ-সংক্রান্ত কোনো প্রবিধান তৈরি হয়নি। এরই মধ্যে লাইসেন্স দেয়া হয়েছে ভারতীয় বীমাপ্রতিষ্ঠান এলআইসির বিনিয়োগে প্রতিষ্ঠিত কোম্পানি এলআইসি বাংলাদেশ লিমিটেডকে।
জানা গেছে, বিদেশি আরো কয়েকটি বীমা কোম্পানি বাংলাদেশে ব্যবসা করতে আগ্রহ দেখিয়েছে। এর মধ্যে অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে ব্রিটিশ বীমা কোম্পানি প্রুডেনশিয়াল লাইফ। এছাড়া দীর্ঘ সময় ধরে শাখা অফিস খুলে এখানে ব্যবসা করে আসছে যুক্তরাষ্ট্রের জীবন বীমা কোম্পানি মেটলাইফ।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বীমা খাতে বিদেশি প্রতিষ্ঠানকে ব্যবসার অনুমোদন দেয়ার আগেই এ-সংক্রান্ত প্রবিধান তৈরি জরুরি ছিল। কিন্তু তা না করে বিদেশি বিনিয়োগের অনুমোদন দিয়ে যাচ্ছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা। এভাবে চলতে থাকলে ভবিষ্যতে বিদেশি বীমা প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে পড়বে।
এপ্রসঙ্গে বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিআইএ) চেয়ারম্যান শেখ কবীর হোসেন বলেন, বিদেশি কোম্পানিকে লাইসেন্স দেয়ার আগেই একটি প্রবিধান করা উচিত ছিল। কিন্তু করা হয়নি। এখন কোম্পানিগুলো কীভাবে চলবে, তা নিয়ন্ত্রণ সংস্থাই জানে। এ বিষয়ে আমাদের কিছু বলা হয়নি।
২০১২ সালে আইডিআরএ প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর বিদেশি বীমা কোম্পানি গঠনের একটি খসড়া নীতিমালা অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছিল। এতে বলা হয়েছিল, বিদেশি কোম্পানির ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রথম তিনজন বিদেশি থাকলেও বাকিদের অবশ্যই দেশিয় হতে হবে। এছাড়া কোনো বিদেশি বীমা কোম্পানি এ দেশে ব্যবসা করতে চাইলে সমজাতীয় কোনো বাংলাদেশি কোম্পানির সঙ্গেই যৌথভাবে আসতে হবে। কিন্তু এখন পর্যন্ত চূড়ান্ত হয়নি সেই নীতিমালা।
এ বিষয়ে আইডিআরএর সাবেক সদস্য নবগোপাল বণিক বলেন, ‘বিদেশি বীমা কোম্পানি গঠনের একটি খসড়া প্রবিধান ওই সময় আমি তৈরি করেছিলাম, যা অর্থ মন্ত্রণালয়েও পাঠানো হয়। কিন্তু পরবর্তী সময়ে এর কোনো অগ্রগতি হয়নি। বীমা খাতে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করতে হলে একটি শক্ত নীতিমালা জরুরি বলে মনে করেন তিনি।
গত ২১ ডিসেম্বর বাংলাদেশে জীবন বীমা ব্যবসা করার লাইসেন্স পেয়েছে এলআইসি বাংলাদেশ লিমিটেড। এতে উদ্যোক্তা অংশের ৫০ শতাংশ শেয়ার থাকবে ভারতীয় এলআইসির। ১০ শতাংশ শেয়ার থাকবে দেশিয় দুইপ্রতিষ্ঠান মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক লিমিটেড (এমটিবি) ও মিউচুয়াল ফান্ড এসইএমএলের। আইনে বিদেশী কোম্পানির পরিশোধিত মূলধনের বিষয়ে কোনো কিছু বলা না থাকলেও নবগঠিত এ কোম্পানির ক্ষেত্রে এটি ১০০ কোটি টাকা হতে পারে বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে পাইওনিয়ার ইন্স্যুরেন্সেরপ্রধান নির্বাহী ও এলআইসি বাংলাদেশে লিমিটেডের পরিচালক সিরাজুল ইসলাম বলেন, ১০০ কোটি টাকা পরিশোধিত মূলধনের বিষয়টি আইনে কোথাও নেই। এ-সংক্রান্ত কোনো গেজেটও নেই। নিয়ন্ত্রণ সংস্থা আমাদের যা বলেছে, আমরা তাই করেছি।
এদিকে আইএলসির পর নিবন্ধন পেতে আগ্রহের কথা জানিয়েছে ব্রিটিশ জীবন বীমা কোম্পানি প্রুডেনশিয়াল লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি। সম্প্রতি কোম্পানিটির একটি প্রতিনিধি দল আইডিআরএ চেয়ারম্যানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে বাংলাদেশে ব্যবসা করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। বাংলাদেশে জীবন বীমার ব্যবসা করার অনুমতি পেলে এ খাতে ২০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে বলে জানিয়েছে কোম্পানিটি। কিন্তু এসব বিদেশি কোম্পানি দেশের বীমা খাতে কার্যক্রমে আসার আগেই এ-সংক্রান্ত বিধি তৈরি করা জরুরি হয়ে পড়েছে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
এ বিষয়ে আইডিআরএর সদস্য জুবের আহমেদ খান বলেন, ‘বিদেশি বীমা কোম্পানি গঠন-সংক্রান্ত কোনো প্রবিধান এখন পর্যন্ত হয়নি। তবে এটা আমরা করব এবং ভবিষ্যতে বিদেশি কোম্পানিগুলোকে এর আওতায় নিয়ে আসা হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।