পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
নানা সঙ্কটে বন্ধ হয়ে গেছে দেশের বেশিরভাগ পাটকল। এতে বেকার হয়ে পড়েছে হাজারও শ্রমিক। লোকসান গুনছেন পাট ব্যবসায়ীরা। মালিকদের অভিযোগ, বাংলাদেশের পাটপণ্যে ভারত উচ্চমাত্রার এন্টি ডাম্পিং শুল্ক আরোপের কারণে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। এই শিল্পকে বাঁচাতে সরকারের বিশেষ নজরদারি চান তারা।
লোকসানের কারণ দেখিয়ে জামালপুরের সরিষাবাড়িতে ২২টি পাটকলের ২১টিই বন্ধ করে দিয়েছে মালিকপক্ষ। এতে বেকার হয়ে পড়েছেন ১৫-২০ হাজার শ্রমিক। অন্যদিকে মিল মালিকদের কাছে কোটি কোটি বকেয়া থাকায় বিপাকে স্থানীয় পাট ব্যবসায়ীরা। চট্টগ্রামে তিন পাটকলের গুদামে পড়ে আছে প্রায় ২শ’ কোটি টাকার পাটজাত পণ্য। আটকে আছে শ্রমিকের মজুরি। পাটের মৌসুমে অর্থ বরাদ্দ না পাওয়ায় কারখানাগুলো ক্ষতির মুখে পড়ছে বলে দাবি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের।
গত বছর বিজেএমসির মিলগুলোতে পাট সরবরাহকারী এজেন্সির সংখ্যা ছিল ৯৮টি। এ বছর আরও ৭টি বাড়িয়ে ১০৫টির প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। তবে মন্ত্রণালয় কাটছাঁট করে মাত্র ৪৮টি এজেন্সির অনুমোদন দেয়। শর্ত হিসেবে বলা হয়, উপযুক্ত গুদাম নিশ্চিত করে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী মৌসুমের শুরুতেই পাট ক্রয় করতে হবে। আগামী ১ অক্টোবরের মধ্যে যেসব পাট ক্রয়কেন্দ্র ন্যূনতম সাত হাজার ৫০০ মণ পাট কিনতে ব্যর্থ হবে সেগুলো তাৎক্ষণিক বন্ধ করে দেয়া হবে।
এ দিকে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী ইনকিলাবকে বলেন, বর্তমান সরকারের সময়ে সরকারি কোনো পাটকল বন্ধ হয়নি এবং বন্ধ করার কোনো পরিকল্পনাও নেই। সরকারি পাটকলগুলোকে লাভজনক করার জন্য সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশ ৫ মেট্রিক টন পাট পাতা থেকে উৎপাদিত চা রফতানি করবে। পাটপণ্য আর পাটকল সচল করা হচ্ছে।
এজেন্সির কাজ হচ্ছে কৃষকের কাছ থেকে পাট কিনে প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ব্যবহার উপযোগী করে বেল আকারে নির্দিষ্ট জুট মিলে পাট সরবরাহ করা। এর আগে গুদাম ভাড়া করে পাট মজুদ এবং বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে পাট ভাগ করা।
গত বছর চট্টগ্রামের হাফিজ জুট মিলসে পাট সরবরাহ করে বিজেএমসির অনুমোদিত আইডিয়া বিজনেস নামের একটি এজেন্সি। কার্যক্রম মূল্যায়নে গত বছরের ৯৮ এজেন্সির মধ্যে তৃতীয় হয় এজেন্সিটি। এজেন্সি অনুমোদন দেয়ার ক্ষেত্রে এই প্রতিবেদন অগ্রাধিকার দেয়ার শর্ত থাকলেও এ বছর আইডিয়া বিজনেসকে বাদ দেয়া হয়েছে। এই এজেন্সির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ব্যারিস্টার জুয়েল বলেন, পাট খাতকে ক্ষতিগ্রস্ত করার জন্যই এরকম একটা সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এই সিদ্ধান্তের ফলে অনেক পাট অবিক্রিত থাকবে। দর কমে যাবে। কৃষকও দর না পেয়ে পাটের আবাদ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে। অর্থাৎ মৌসুমে ধান ও কোরবানির পশুর চামড়া নিয়ে যে অরাজকতা হয়েছে, পাট নিয়েও একই অরাজক অবস্থা হতে যাচ্ছে। এজেন্সি নিয়োগে অবৈধ লেনদেনের অভিযোগও তোলেন তিনি।
আমিন জুট মিল শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি আরিফুর রহমান ইনকিলাবকে বলেন, বেশিরভাগ পাটকল এখন নানা সঙ্কটে সক্ষমতার অর্ধেকও উৎপাদন করা যাচ্ছে না। আমিন জুট মিলে ২০০৯ সালেও যেখানে দৈনিক ৬৫ টন পাটজাত পণ্য উৎপাদন হয়েছে সেখানে এখন উৎপাদন নেমে এসেছে ১৫ টনে। বিজেএমসির সংস্কার, কারখানায় আধুনিক যন্ত্রপাতি সংযোজন, দক্ষ শ্রমিক নিয়োগ এবং প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ পেলে দেশের সবগুলো পাটকলই ঘুরে দাঁড়াবে।
নীলফামারীর ৫টি পাটকলে ৭৫ ভাগ উৎপাদন বন্ধ। এতে বেকার শ্রমিকদের দিন কাটছে অর্থকষ্টে। মালিকদের অভিযোগ, বাংলাদেশের পাট ও পাটপণ্যে ভারত উচ্চমাত্রার এন্টি ডাম্পিং শুল্ক আরোপ করায় নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। চাঁদপুরের মিলগুলো এখন পুরোপুরি বন্ধ। কর্মকর্তারা বলছেন, এসব মিল চালুর চেষ্টা চলছে।
ডবিøউ রহমান জুট মিলস্ লিমিটেডের এক্সিকিউটিভ ইনচার্জ মাহমুদ হাসান নিপন বলেন, আমি ডবিøও রহমান জুট মিলের ইনচার্জ। আমরা চেষ্টা করতেছি মিলে একটু সমস্যা রয়ে গেছে। আমরা ২০১৮ সালের অক্টোবরের ১৬ তারিখ থেকে আমাদের এই জুট মিলটা সাহার জুট মিলস্ লি:-এর কাছে ভাড়া দিয়েছিলাম। তারা ভাড়াটিয়া চুক্তির আওতায় মিলটি ভাড়া নিয়ে ছিল। কিন্তু কিছু অসন্তোষের কারণে তাদের কিছু সমস্যার কারণে মিলটা ঠিক মতো চালাতে পারিনি। আমরা চেষ্টা করছি মিলটা যেন ভালোভাবে চলে।
তবে ভিন্ন চিত্র দিনাজপুরের পাটকলে। জেলার ৬টি বেসরকারি পাটকলে উৎপাদিত পণ্যের বেশিরভাগই যাচ্ছে ভারতে। মিল মালিকরা বলছেন, পাটের সুদিন ফিরিয়ে আনতে প্রয়োজন সরকারের বিশেষ নজরদারি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।