Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

তামাকজাত পণ্যে করারোপে ‘মূল্যস্তর প্রথা’ বাতিল দাবি

প্রকাশের সময় : ১৩ জুন, ২০১৬, ১২:০০ এএম

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ঃ ২০১৬-১৭ অর্থবছরের বাজেটে তামাকজাত পণ্যের করারোপে ‘মূল্যস্তর প্রথা’ তুলে না দিলে এটি কর ফাঁকির প্রধান হাতিয়ার হয়ে দাঁড়াবে বলে দাবি করেছে তামাকবিরোধী সংগঠনগুলো। তাদের দাবি, এবারের বাজেটে প্রস্তাব ছিলো সিগারেটের কর নির্ধারণের জন্য মূল্যস্তর প্রথা তুলে দিয়ে সুনির্দিষ্ট শুল্ক আরোপ করা। কিন্তু মূল্যস্তর প্রথা তুলে দেয়ার কোনো উদ্যোগ নেয়নি সরকার। এ প্রথা বিলুপ্ত না হলে ভবিষ্যতে কর ফাঁকির পথ আরো সুগম হবে।
গতকাল জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে ‘তামাক কর: বাজেট প্রতিক্রিয়া ২০১৬-১৭’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি করা হয়। প্রজ্ঞা ও অ্যান্টি টোব্যাকো মিডিয়া অ্যালায়েন্সের (আত্মা) উদ্যোগে তামাকবিরোধী সংগঠনগুলো বাজেট পরবর্তী এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। সংবাদ সম্মেলনে মূল বক্তব্য তুলে ধরেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের প্রফেসর ড. রুমানা হক। তিনি বলেন, তামাকজাত পণ্যের ওপর কর বৃদ্ধির কয়েকটি ক্ষেত্র ছাড়া এবারের বাজেট কাঠামোগতভাবে শুধু অপর্যাপ্তই নয়, ত্রæটিপূর্ণও। তিনি বলেন, দামি সিগারেটের বিদ্যমান কর ৪৫ শতাংশ বহাল রেখে বহুজাতিক কোম্পানিগুলোকে আবারও রেহাই দেয়া হয়েছে। কম দামি সিগারেট ও বিড়ির ওপর প্রস্তাবিত কর হার পণ্য দু’টির মূল্যবৃদ্ধিতে সহায়ক হলেও ব্যবহার কমানোর জন্য কার্যকরী নয়। তবে জর্দা ও গুলের ওপর সম্পূরক শুল্কের হার প্রায় ৬৭ শতাংশ বৃদ্ধি করা হয়েছে তা ইতিবাচক।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে জাতীয় হার্ট ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি জাতীয় অধ্যাপক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল (অব.) আব্দুল মালিক বলেন, বাংলাদেশকে সিরিয়াসলি ধূমপানমুক্ত করতে হবে। কারণ, যুব সমাজ প্রথমে ধূমপানে আসক্ত হয়, এরপর ড্রাগের দিকে এগিয়ে যায়। তিনি বলেন, সরকারের ধূমপান বন্ধ করার ইচ্ছা আছে। তবে কার্যকর অ্যাকশন নেই। ইচ্ছা থাকলে হবে না, অ্যাকশনে যেতে হবে। মূল্যস্তর তুলে দিয়ে কর বাড়াতে হবে। তাহলে জনগণের জন্য কল্যাণকর হবে।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা ২০১৬-১৭ অর্থবছরে তামাকপণ্যের ওপর ২ শতাংশ স্বাস্থ্য উন্নয়ন সারচার্জ আরোপ করা, তামাকের চুলি প্রতি বার্ষিক ৫ হাজার টাকা লাইসেন্স ফি আরোপ এবং এ খাত থেকে আদায় করা অতিরিক্ত রাজস্ব আয় তামাক নিয়ন্ত্রণ এবং অসংক্রামক রোগ মোকাবেলায় ব্যয়েরও দাবি জানান। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন উবীনীগের নির্বাহী পরিচালক ফরিদা আক্তার, আত্মার যুগ্ম-আহবায়ক নাদিরা কিরণ, দ্য ইউনিয়নের পরামর্শক সৈয়দ মাহবুবুল আলম তাহিন, প্রত্যাশার সাধারণ সম্পাদক হেলাল আহমেদ প্রমুখ।
নতুন অর্থবছর থেকেই পাঁচ অঞ্চলে উৎসে কর কর্তন
অর্থনৈতিক রিপোর্টার ঃ জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) মাধ্যমে বর্তমানে যে পরিমাণ আয়কর আহরিত হয়, তার ৫০ শতাংশই আসে উৎসে কর কর্তন থেকে। তবে একই কর অঞ্চল থেকে সাধারণ নিয়মে কর আহরণ ও উৎসে কর কর্তন কার্যক্রম পরিচালিত হওয়ায় প্রত্যাশিত পরিমাণে উৎস কর আহরণ করা সম্ভব হচ্ছে না। এ পরিস্থিতিতে উৎসে কর আহরণ বাড়ানোর লক্ষ্যে পাঁচটি পৃথক কর অঞ্চল (জোন) প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
সূত্রে জানা গেছে, পাঁচটি জোনের মধ্যে চারটি ঢাকায়, অন্যটি হবে চট্টগ্রামে। এই কর অঞ্চলগুলো উৎসে কর কর্তন পরিবীক্ষণ অঞ্চল নামে অভিহিত হবে। নতুন অর্থবছর থেকেই জোনগুলোর কার্যক্রম শুরু হবে।
সূত্র মতে, বর্তমান ব্যবস্থায় একজন কর্মকর্তাকে উভয় ধরনের কর আদায়ে কাজ করতে হয়। এতে কোনোটিতেই গুরুত্ব দেয়া সম্ভব হয় না। এজন্য আলাদা জোন গঠন করা হচ্ছে। সবকিছু ঠিক থাকলে নতুন অর্থবছর থেকেই নতুন পদ্ধতিতে কর আহরণ শুরু হবে। এদিকে দিন দিন অভ্যন্তরীণ সম্পদ আহরণের গুরুত্ব বেড়েই চলেছে। আর অভ্যন্তরীণ রাজস্ব বাড়ানোর গুরুত্ব অনুধাবন করে চলতি অর্থবছরের বাজেট বক্তৃৃতায় উৎসে কর কর্তনে আলাদা জোন গঠনের কথা উল্লেখ করেছিলেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। অন্যদিকে প্রস্তাবিত ২০১৬-১৭ অর্থবছরের বাজেট বক্তৃতায়ও বিষয়টি স্থান পেয়েছে।
জানা য়ায়, উৎসে কর ব্যবস্থাপনা আরও কার্যকর করার জন্য একটি নতুন উৎসে কর ইউনিট স্থাপন করা হবে এবং ইলেক্ট্রনিক উৎসে কর ব্যবস্থা প্রচলন করা হবে। বর্তমানে একটি বৃহৎ করদাতা ইউনিটসহ (এলটিইউ) ৩১টি টেরিটোরিয়াল কর অঞ্চলের মাধ্যমে রাজস্ব আহরণ করা হয়। এসব কর অঞ্চলের উৎসে কর কর্তন কার্যক্রমকে নতুন পাঁচটি জোনের অন্তর্ভুক্ত করা হবে। এর মধ্যে ঢাকার ১ নম্বর উৎসে কর কর্তন পরিবীক্ষণ অঞ্চলের অধীনে এলটিইউসহ সাতটি কর-অঞ্চল অন্তর্ভুক্ত হবে। এগুলো হলোÑ ঢাকার কর অঞ্চল-১, ৫, ৬ এবং রাজশাহী, রংপুর ও বগুড়া কর অঞ্চল। ২ নম্বর জোনের অন্তর্ভুক্ত হবে ঢাকার ২, ৭, ৯ ও ১৪ নম্বর কর অঞ্চল এবং বরিশাল ও খুলনা। ঢাকার ৩ নম্বও জোনের অন্তর্ভুক্ত হবে ঢাকার ৩, ১১, ১২ ও ১৫ নম্বর কর অঞ্চল এবং ময়মনসিংহ, সিলেট ও কেন্দ্রীয় জরিপ অঞ্চল। ঢাকার ৪ নম্বও জোনের অন্তর্ভুক্ত হবে ঢাকার ৪, ৮, ১০ ও ১৩ নম্বর কর অঞ্চল এবং গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জ। উৎসে কর কর্তনের পঞ্চম জোনটি স্থাপিত হবে চট্টগ্রামে। এটির সঙ্গে অন্তর্ভুক্ত হবে চট্টগ্রামের চারটি ও কুমিল্লা কর অঞ্চল।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: তামাকজাত পণ্যে করারোপে ‘মূল্যস্তর প্রথা’ বাতিল দাবি
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ