পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ইনকিলাব ডেস্ক : বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর ধারাবাহিক হামলার প্রেক্ষিতে তারা চাইছেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও ভারত সরকার যেন বিষয়টি ঢাকার কাছে তুলে ধরে তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে। বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ইউনিট কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক ও মানবাধিকার কর্মী রানা দাশগুপ্ত বলেছেন, বাংলাদেশে সবচেয়ে বড় সংখ্যালঘু স¤প্রদায় হলো হিন্দুরা। এ স¤প্রদায়টি বাংলাদেশে ঝুঁকির মুখে। মৌলবাদী ও জামায়াতিরা বাংলাদেশ থেকে হিন্দুদের মূলোৎপাটনের চেষ্টা করছে। আমরা মনে করি হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ট দেশ হিসেবে ভারত এক্ষেত্রে কিছু করতে পারে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে আমাদের বড় আশা রয়েছে। তার উচিত এ বিষয়টি বাংলাদেশ সরকারের কাছে তুলে ধরে হিন্দুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। ভারতের শীর্ষস্থানীয় কয়েকটি দৈনিক ও অনলাইন পত্রিকায় পিটিআই সূত্রে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানা গেছে।
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, ১০ জুন হিন্দুদের আশ্রমের সেবক নিত্যরঞ্জন পান্ডেকে (৬০) কুপিয়ে হত্যা করেছে সন্দেহজনক ইসলামী জঙ্গিরা। এ নিয়ে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ বাংলাদেশে ধর্মনিরপেক্ষ কর্মীদের ওপর ধারাবাহিক হামলার চতুর্থ শিকার হলেন সংখ্যালঘু স¤প্রদায়ের এ ব্যক্তি।
রানা দাশগুপ্ত আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের একজন প্রসিকিউটরও। তিনি বলেছেন, ধর্মীয় সংখ্যাগরিষ্ঠ ও মৌলবাদী গ্রæপগুলো হিন্দু স¤প্রদায়কে সমূলে উৎপাটন করতে চায়। গত দু’বছর ধরে ধর্মীয় এই তৎপরতার আরো অগ্রগতি হয়েছে। তার দাবি, বাংলাদেশকে একটি মৌলবাদী রাষ্ট্রে পরিণত হতে দিয়ে স্থিতিশীল ভারত উপমহাদেশ অর্জন করা কখনও সম্ভব হবে না। তাই ভারত যদি এ অঞ্চলে স্থিতিশীলতা চায় তাহলে আমাদের দেশে (বাংলাদেশে) সংখ্যালঘু স¤প্রদায়কে বিনাশ করা বন্ধ করতে তাদেরকে পদক্ষেপ নিতে হবে।
ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে, একজন পুরোহিত, একজন খ্রিস্টান দোকানি, একজন সিনিয়র পুলিশ কর্মকর্তার স্ত্রীসহ এক সপ্তাহে নিত্যরঞ্জন পান্ডেকে হত্যা করা হয়েছে। ফেব্রæয়ারিতে উগ্রপন্থীরা একটি মন্দিরের পুরোহিতকে কুপিয়ে হত্যা করে। তার সহায়তায় এগিয়ে যাওয়া এক ভক্তকে গুলি করে আহত করে। এপ্রিলে একজন প্রফেসরকে রাজশাহীতে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। একই মাসে হিন্দু স¤প্রদায়ের একজন দর্জিকে হত্যা করা হয় তার দোকানের ভিতর। বাংলাদেশে প্রথম এলজিবিটি স¤প্রদায়ের ম্যাগাজিনের সম্পাদক ও তার এক বন্ধুকে সন্দেহভাজন ইসলামী জঙ্গিরা ঢাকায় তার বাসায় হত্যা করেছে। এ ছাড়া ২০১৫ সালে বাংলাদেশে ধর্মনিরপেক্ষ ও উদারপন্থী বøগারদের ওপর ধারাবাহিক হামলা হয়েছে।
বাংলাদেশে হিন্দুদের অবস্থা ভয়ঙ্কর। ধর্মনিরপেক্ষ আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকলেও তৃণমূল পর্যায়ে পরিস্থিতি ভয়ানক। ধর্ষণ, হত্যা, লুট, অগ্নিসংযোগ, হিন্দু এবং অন্য সংখ্যালঘুদের বাড়িঘর ধ্বংস ক্রমেই বাড়ছে।
বাংলাদেশের স্বনামধন্য অভিনেতা এবং বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশন এফডিসি’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক পিযুষ বন্দোপাধ্যায় বলেন, ‘যতক্ষণ না ভারত বাংলাদেশের ওপর চাপ সৃষ্টি করছে মৌলবাদীরা থামবে না’। তিনি বলেন, ‘ভারত এ অঞ্চলের একটি প্রধান শক্তি, একটি প্রতিবেশী দেশে যখন হিন্দুদের নির্মমভাবে জবাই করা হচ্ছে তখন সে অলস বসে থাকতে পারে না’।
মিঃ দাশগুপ্তের পাশাপাশি মিঃ বন্দোপাধ্যায় বাংলাদেশে ভারতীয় হাই কমিশনারের অতি দ্রæত সাড়া কামনা করেন-যারা ইতোমধ্যেই তাদের প্রতিনিধিকে আশ্রমে হিন্দু সেবায়েত এবং তাদের সহকর্মীদের পরিবারের সাথে সাক্ষাতের জন্য পাঠিয়েছে। কিন্তু তিনি বলেন, ভারতের আরো কিছু করা দরকার।
বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের জন্য আরো বেশি নিরাপত্তার দাবি জানাচ্ছে মানবাধিকার গ্রæপ ও হিন্দু নেতারা।
সংখ্যালঘু নেতারা যদিও বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের জন্য ভারত সরকারের বিষয়টি তুলে ধরার আশা করছে, কিন্তু বাংলাদেশের একজন মন্ত্রী মনে করেন, আসলে ধর্ম নিরপেক্ষ এবং উদার আওয়ামী লীগ সরকারের কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টির জন্য এ হামলা চালানো হচ্ছে।
বাংলাদেশের তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেন, ‘প্রকৃতপক্ষে এটা হচ্ছে বাংলাদেশের ভাবমর্যাদা নষ্টে মৌলবাদী এবং জামায়াত কর্মীদের একটি চাল। এসব হামলা সংখ্যালঘুদের উদ্দেশ্যে নয়, বরং তাদের প্রকৃত লক্ষ্য সরকারকে কলঙ্কিত করা এবং দেশকে একটি মৌলবাদী রাষ্ট্রে পরিণত করা। আমরা এটা কখনও হতে দেব না। আমরা সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা বিধানে নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি এবং সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে’।
ভারত যদি বিষয়টি উত্থাপন করে তাহলে ঢাকা কী করবে- এ প্রশ্ন করা হলে ইনু বলেন, ‘বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্ক খুব ভাল। ভারত আমাদের বন্ধু। ভারত যদি আমাদের কাছে বিষয়টি উত্থাপন করতে চায়, তাহলে আমরা কথা বলব। এতে কোন ক্ষতি নেই’। সূত্র : পিটিআই
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।