Inqilab Logo

শুক্রবার ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

পুলিশ জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে

মৌলিক অধিকার সুরক্ষার আলোচনা সভা

প্রকাশের সময় : ১২ জুন, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : মৌলিক অধিকার সুরক্ষা কমিটির আলোচনা সভায় বক্তারা বলেছেন, পুলিশ জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। পুলিশ বাহিনীর সমালোচনা করে তারা বলেন, পুলিশের দায়িত্ব হলো জনগণের সেবক হিসেবে কাজ করা কিন্তু তারা সেটি না করে সরকারের অনুগত হয়ে জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে।
তারা আরো বলেছেন, শুধু অর্থনৈতিক উন্নয়ন দিয়ে একটি দেশের স্থিতিশীলতা রক্ষা করা সম্ভব নয়। এর উৎকৃষ্ট উদাহরণ লিবিয়া। চলমান সহিংসতা বন্ধের জন্য দল মত নির্বিশেষে জাতীয় সংলাপ প্রয়োজন বলে মত দেন তারা। বর্তমান সরকারের ব্যর্থতা দিন দিন বাড়ছেই। এভাবে দেশ চলতে থাকলে চলমান সহিংসতা আরো বাড়বে। গতকাল শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে কনফারেন্স রুমে এক মতবিনিময় সভায় বক্তারা এইসব কথা বলেন। মৌলিক অধিকার সুরক্ষা কমিটির উদ্যোগে ‘কল্পনা চাকমা অপহরণ ও পরবর্তী ২০ বছর’ শীর্ষক এ মতবিনিময় সভা আয়োজন করা হয়। সভায় আলোচনায় অংশ নেন সংবিধান বিশেষজ্ঞ ড. শাহ্দীন মালিক, আইন ও সালিশ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী পরিচালক নূর খাঁন লিটন, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, ব্যারিস্টার সারাহ হোসেন প্রমুখ।
সংবিধান বিশেষজ্ঞ ড. শাহ্দীন মালিক বলেন, পুলিশ জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। পুলিশের দায়িত্ব হলো জনগণের সেবক হিসেবে কাজ করা কিন্তু তারা সেটি না করে সরকারের অনুগত হয়ে জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। শাহদীন মালিক বলেন, পুলিশের বেআইনি কাজের জন্য আমি আদালতকে দোষারোপ করবো। আদালতও পুলিশের আইন অমান্যের পক্ষে ভূমিকা রাখছে। পুলিশ আদালতের কাছে রিমান্ড চাইলে গত ১ বছরে পুলিশের এই রিমান্ড নামঞ্জুর করেননি আদালত। এতে করে আদালতের উপর জনগণের আস্থা কমছে, বাড়ছে না। তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের ব্যর্থতা দিন দিন বাড়ছেই। এভাবে দেশ চলতে থাকলে চলমান সহিংসতা আরো বাড়বে। তিনি বলেন, দেশে গুম, খুন, অপহরণ, ক্রসফায়ার, পুলিশের বল প্রয়োগ সব দিক থেকে বেড়েছে। গত সাত দিনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে তথাকথিত বন্দুযুদ্ধে ১০ জন নিহত হয়েছে, যা গত ৩০ বছরে হয়নি। দেশে চলমান সহিংতায় উদ্বেগ প্রকাশ করে শাহদীন মালিক বলেন, গত কয়েক দিনে যেভাবে মানুষকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে এবং সেগুলো বিবিসি, সিএনএন, আলজাজিরার মত সংবাদ মাধ্যমে যেভাবে প্রচার হয়েছে তাতে আর্ন্তজাতিক মহলের উদ্বেগ বাড়ছে।
নূর খান লিটন বলেন, এ ধরনের অপরাধের বিচার বিভিন্ন দেশে হয়েছে। কাজেই এটা ভাবার কোনো অবকাশ নেই যে অপরাধীরা পার পেয়ে যাবে। যারা গুম, অপহরণ, বিচার বহির্ভূত হত্যাকা-ের শিকার হচ্ছেন তাদের আত্মীয়-স্বজন বিচার পাওয়ার জন্য বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের দারস্ত হচ্ছেন। কিন্তু তাদের পক্ষে এটা চালিয়ে যাওয়া কষ্টকর। কেউ কেউ এরইমধ্যে হত্যাকা-ের শিকার হয়েছেন। কাজেই ব্যক্তি উদ্যোগের পাশাপাশি সামাজিকভাবে আমাদের কণ্ঠকে জোরদার করতে হবে। ব্যারিস্টার সারাহ হোসেন বলেন, কল্পনাকে অপহরণের পরে একটি বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কিন্তু কোনো চূড়ান্ত রিপোর্ট এখনো পাওয়া যায়নি। এরপর পাঁচ বছর আগে আবারো একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এই কমিটির একটি শুনানি আদালতে আগামী জুলাই মাসে হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আশাকরি এ অপহরণের সত্যতা এবং দায়ী ব্যক্তির ব্যাপারে অচিরেই জানতে পারব। তিনি বলেন, আমাদের তদন্ত ব্যবস্থা ত্রুটিপূর্ণ। ত্রুটিপূর্ণ তদন্ত ব্যবস্থার জন্য সুষ্ঠু তদন্তে কোনো ফলাফল আসছে না। অপহরণ, গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যার ব্যাপারে একটি বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করে তদন্তের দাবি জানান তিনি।
শিরিন হক বলেন, স্বাধীনতার পর কল্পনার অপহরণ ছিল একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা। পরবর্তী সময়ে অপরহরণ, গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যা একটি নিয়মিত ঘটনা হিসেবে দাঁড়িয়েছে। কাজেই আমাদের সোচ্চার হওয়া ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। মৌলিক অধিকার সুরক্ষা কমিটির কার্যক্রম তুলে ধরে তিনি বলেন, আজকের দিনে কথা বলা খুব কঠিন হয়ে যাচ্ছে। কল্পনা চাকমা ২০ বছর আগে অপহৃত হলেও এখনো বিচার পাওয়া যায়নি। আমরা আজ অপহরণের ২০ বছর পূর্তিতে এই আলোচনা সভার আয়োজন করেছি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পুলিশ জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ