Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

খুনি সন্দেহে যুবক গ্রেফতার

গুন্নুর রিমান্ড শুনানি আজ

প্রকাশের সময় : ১২ জুন, ২০১৬, ১২:০০ এএম

চট্টগ্রাম ব্যুরো : চট্টগ্রামে পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যার ৬ দিন পর খুনিচক্রের সদস্য সন্দেহে একজনকে আটক করল পুলিশ। সন্দেহভাজন মো. শাহজামান ওরফে রবিন (২৮) হত্যাকা-ে সরাসরি অংশ নিয়েছিল বলে ধারণা করছে পুলিশ। তবে গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত এ বিষয়ে নিশ্চিত হতে পারেনি পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। আটক রবিন কোনো জঙ্গি সংগঠনের সদস্য কিনা বা তার কোনো রাজনৈতিক পরিচয় আছে কিনা এ বিষয়েও কোনো ধারণা পাওয়া যায়নি পুলিশের কাছে।
গত রোববার সকালে নগরীর ব্যস্ততম জিইসি মোড়ের অদূরে ও আর নিজাম রোডে মিতুকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। হত্যাকা- শেষে একটি মোটরসাইকেলে করে পালিয়ে যায় তিন দুর্বৃত্ত। ভিডিও ফুটেজে হত্যাকা-ে সরাসরি তিনজন অংশ নেয়ার ছবি দেখা যায়। পুলিশের ধারণা, যে তিন দুর্বৃত্ত কিলিং মিশনে অংশ নিয়েছিল তাদের একজন রবিন। শুক্রবার গভীর রাতে নগরীর বায়েজিদ বোস্তামি থানার শীতলঝর্ণা আবাসিক এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়। গতকাল (শনিবার) দুপুরে সিএমপি কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ কমিশনার মো. ইকবাল বাহার জানান, ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, মিতুকে হত্যার সময় ঘটনাস্থলে মোবাইলে কথা বলতে বলতে এক যুবক রাস্তা পার হচ্ছিল। আমরা সন্দেহ করছি রবিনই সেই যুবক। তাকে আটক করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে এ ব্যাপারে তথ্য আদায়ের চেষ্টা করা হচ্ছে।
রবিন কুমিল্লার লাকসাম উপজেলার হাজীপুর গ্রামের ফকিরবাড়ির মো. শাহজাহান ও মমতাজ বেগমের ছেলে। রবিনের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য চেয়ে লাকসাম থানায় জিডি করেছেন পাঁচলাইশ থানার ওসি মহিউদ্দিন মাহমুদ। সংবাদ সম্মেলনে সিএমপি কমিশনার বলেন, রবিন অষ্টম শ্রেণি পাস। যদি ভিডিও ফুটেজের যুবক রবিন হয়, তাহলে হয়তো সে কোনো মতাদর্শে বিশ্বাসী অথবা ভাড়াটে হিসেবে সে খুন করেছে। আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করছি। যতক্ষণ একটা নির্দিষ্ট জায়গায় পৌঁছাতে পারব না ততক্ষণ পর্যন্ত সুনির্দিষ্টভাবে বলা সম্ভব নয় রবিনই মূল খুনি। তবে আমরা সন্দেহ করছি। হতে পাওে সে কারও পক্ষে কাজ করেছে। হয়তো আর্থিক লাভের জন্য করেছে। অথবা কেউ তাকে ভাড়া করে ঘটনাটি ঘটিয়েছে।
মিতু হত্যার ঘটনায় এ নিয়ে দু’জনকে আটক করা হলো। এর আগে হত্যাকা-ে জড়িত সন্দেহে মঙ্গলবার গভীর রাতে আবু নসর গুন্নুকে হাটহাজারীর ফরহাদাবাদ এলাকার মুসাবিয়ার মাজার থেকে আটক করে নগর গোয়েন্দা পুলিশ। তাকে এ ঘটনায় সরাসরি জড়িত না হলেও ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে খুনিদের সহযোগিতা করার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়। তাকে ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে হাজির করা হলে আদালত তাকে গ্রেফতারের কারণ জানতে চেয়ে প্রয়োজনীয় তথ্য-প্রমাণ উপস্থাপনের নির্দেশ দেন। আজ রোববার এ বিষয়ে আদালতে শুনানির দিন ধার্য রয়েছে। গুন্নুর পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়, হাটহাজারীর একটি মাজারের বিরোধকে কেন্দ্র করে একপক্ষ তাকে এ মামলায় ফাঁসিয়ে দিয়েছে।
৩০ লাখ টাকার বিনিময়ে গুন্নুকে আটক করে বাবুল আক্তারের স্ত্রী হত্যায় ফাঁসানোর অভিযোগ প্রসঙ্গে পুলিশ কমিশনার বলেন, আমি দৃঢ়কন্ঠে বলছি এ ধরনের কিছু হয়নি। আপনারা সাংবাদিক, কেউ টাকা নিয়েছে কিনা সেটা আপনারা তদন্ত কওে দেখুন। ৫ জুন সকালে ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার সময় নগরীর ও আর নিজাম রোডে দুর্বৃত্তদের উপর্যুপরি ধারালো অস্ত্রের কোপে ও গুলিতে নিহত হন পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু। হত্যাকা-ের পর থেকে এটি জঙ্গিদের কাজ এমন সন্দেহ করে তদন্ত শুরু করে পুলিশের ৫টি সংস্থা। তবে এখনও পর্যন্ত হত্যাকা-ের প্রকৃত রহস্য উদঘাটন ও খুনিচক্রের সদস্যদের চিহ্নিত করা যায়নি। আজ পুলিশের আইজি এ কে এক শহীদুল হক চট্টগ্রাম আসছেন। তিনি আলোচিত এ মামলা তদন্তের সার্বিক বিষয় নিয়ে কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠক করবেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: গুন্নুর রিমান্ড শুনানি আজ
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ