Inqilab Logo

রোববার, ০৭ জুলাই ২০২৪, ২৩ আষাঢ় ১৪৩১, ৩০ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

বন ছেড়ে লোকালয়ে নেমে আসছে অজগর-হরিণ!

বাসস্থান ও খাদ্য সংকটই নেপথ্য কারণ

প্রকাশের সময় : ১২ জুন, ২০১৬, ১২:০০ এএম

সৌমিত্র চক্রবর্তী, সীতাকু- থেকে : সীতাকু-ে খাদ্যের সন্ধানে বারবার লোকালয়ে নেমে আসছে অজগর সাপ, চিত্রা হরিণসহ বিভিন্ন বণ্যপ্রাণীরা। ক্রমাগত পাহাড় কাটা, বৃক্ষ নিধন ও জীববৈচিত্র্য ধ্বংসের কারণে চাহিদামত খাদ্য না পেয়ে অজগর, হরিণসহ নানা জন্তু খাদ্যের সন্ধানে লোকালয়ে হানা দিচ্ছে বলে স্থানীয়দের অভিমত। শুধু গত এক সপ্তাহেই উপজেলায় দু’টি অজগর ধরা পড়েছে। ধরা পড়েছে বেশ কয়েকটি হরিণও। পরে সেগুলো অবমুক্ত করা হলেও অজগর ও হরিণের বারবার লোকালয়ে নেমে আসার ঘটনায় এলাকায় কৌতূহলের সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সীতাকু-ের পূর্ব অংশে রয়েছে সুবিশাল পাহাড় ও পশ্চিমে সমুদ্র উপকূলে আছে বিশাল বনভূমি। এই পাহাড়ে প্রকৃতিগতভাবেই বহু রকম বন্য প্রাণীর বসবাস। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো বানর, হরিণ, বনমোরগ, শূকর, অজগরসহ অসংখ্য রকম সাপ, ময়না, টিয়াসহ রকমারি পাখ-পাখালি ও জীবযন্তু। সুদীর্ঘকাল ধরে পাহাড় ও উপকূলীয় বনে এ ধরনের জীবযন্তু বসবাসের কারণে এক সময় মাঝে-মধ্যে এসব প্রাণী লোকালয়ে নেমে আসত। সে সময় হঠাৎ বনের প্রাণী লোকালয়ে দেখে এলাকাবাসী ব্যাপক আনন্দ উপভোগ করত এবং সেটি হতো অনেকের কাছেই একটি দুর্লভ ঘটনা। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে হচ্ছে এর উল্টোটা। এখন আর বন্য প্রাণীরা কালে-ভদ্রে আসে না। প্রায়ই লোকালয়ে নেমে আসছে হরিণ, অজগর, বন মোরগ, বানরসহ নানান প্রাণী। বিগত কয়েক বছর ধরে সময় যত যাচ্ছে বন্যপ্রাণীদের লোকালয়ে নেমে আসার ঘটনা বাড়ছে ততই। বন ছেড়ে বারবার লোকালয়ে নেমে আসা প্রাণীদের মধ্যে চিত্রা হরিণ ও অজগর এগিয়ে। এলাকাবাসী জানায়, প্রায়ই শোনা যায় উপকূলীয় বিভিন্ন গ্রামে চিত্রা হরিণ ধরা পড়েছে। পাল্লা দিয়ে শোনা যাচ্ছে অজগরের কথাও। গত এক সপ্তাহেই সীতাকু-ের ভাটিয়ারী মিলিটারী একাডেমি ও ফৌজদারহাটের একটি দোকানে ধরা পড়েছে দু’টি অজগর সাপ। মিলিটারি একাডেমি এলাকায় লোকালয়ে এসে একটি হরিণ শিকারের চেষ্টাকালে ধরা পড়া অজগরটি আর্মি সদস্যরা আটক করে বন বিভাগে হস্তান্তর করেছেন। তবে ফৌজদারহাট আব্দুল্লারঘাটা এলাকার ফার্নিচার হাউস নামক দোকানে আটক সাপটি দীর্ঘসময় ওই দোকানে জালে আটকা পড়েছিলো। ঐ এলাকার ব্যবসায়ী মোঃ আলাউদ্দিন জানান, ফার্নিচার হাউসের মালিক অজগরটি নিয়ে বেশ বেকায়দায় পড়েছিলেন। কারণ, তার কাছে বনবিভাগের কারো মোবাইল নম্বর ছিল না। সাপটি কি করবেন, কার কাছে হস্তান্তর করবেন এ নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েন তিনি। পরে বিষয়টি সাংবাদিকদের জানালে তারা বনবিভাগের সাথে যোগাযোগের নম্বর দেন। এর আগেও বারআউলিয়া এলাকার একটি গৃহস্থবাড়িতে পোল্ট্রি মুরগির খামারে আটক হয় একটি অজগর সাপ। অজগর ধরা পড়ার কথা শোনা গেছে আরো কয়েকটি স্থানে। একইভাবে বারবার লোকালয়ে নেমে আসছে উপকূলীয় চিত্রা হরিণ, বন মোরগ, শূকর, বানর।
ক্রমাগত পাহাড় কাটা, বৃক্ষ নিধন ও জীববৈচিত্র্য ধ্বংস করায় খাদ্য ও আবাস সংকটে এসব প্রাণীরা লোকালয়ে নেমে আসছে বলে সংশ্লিষ্টদের ধারণা। বাঁশবাড়ীয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ শওকত আলী জাহাঙ্গীর প্রতিবেদককে বলেন, প্রায়ই উপকূলীয় বন থেকে লোকালয়ে নেমে আসছে হরিণগুলো। গত মাসে একই সাথে বাঁশবাড়ীয়া ও কুমিরা ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে ৪টি হরিণ ধরা পড়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বন ছেড়ে লোকালয়ে নেমে আসছে অজগর-হরিণ!
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ