পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : জঙ্গি বিরোধী সাঁড়াশি অভিযানে জঙ্গি নয়, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হচ্ছে। এদের মধ্যে খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষও রয়েছেন। এ অভিযোগ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের। গতকাল পুলিশ জানিয়েছে, দেশব্যাপী জঙ্গিবিরোধী সাঁড়াশি অভিযানের দ্বিতীয় দিনে গত ২৪ ঘণ্টায় ৩ হাজার ১৯২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এদের মধ্যে বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনের ৩৭ জঙ্গিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে গ্রেফতারের সংখ্যা আরো অনেক বলে জানা গেছে। জঙ্গিবিরোধী বিশেষ অভিযানে এদেরকে গ্রেপ্তার করা হলেও ওই বিপুলসংখ্যক লোক জঙ্গি তৎপরতায় জড়িত কিনা সে সম্পর্কে পুলিশের পক্ষ থেকে কোনো জবাব পাওয়া যায়নি। বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা বলছেন, গত দুইদিনে তাদের সাড়ে ৭ হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলা রয়েছে।
এ পর্যন্ত তিন হাজারেরও বেশি ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার বা আটক করা হয়েছে বলে পুলিশ দাবি করলেও গ্রেফতারের সংখ্যা আরো অনেক বেশি বলে দাবি করেছে বিভিন্ন রাজনৈতিক ও মানবাধিকার সংগঠন। জঙ্গি বিরোধী অভিযান হলেও এদের মধ্যে বেশিরভাগই বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মী বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রত্যন্ত গ্রামের খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষসহ অনেক অরাজনৈতিক লোকও এই তালিকায় রয়েছেন। অভিযোগ ওঠেছে, বিএনপি-জামায়াতসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের দুই লাখ নেতাকর্মীকে গ্রেফতারে মিশন নিয়ে অভিযান শুরু হয়েছে। ছাত্রলীগ ও যুবলীগের সহযোগিতায় গত কয়েক মাসে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা তাদের নাম তালিকা তৈরি করে এ সাঁড়াশি অভিযান চালিয়েছে।
এদিকে জঙ্গি বিরোধী অভিযানের নামে হয়রানির উদ্দেশ্যে বেছে বেছে বিএনপি ও বিরোধী দলের নেতাকর্মীদেরকেই গ্রেপ্তার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি। দলটি বলছে, “এই অভিযানে মাদকসেবীদের মতো কিছু সামাজিক অপরাধীরা থাকলেও ব্যাপকহারে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে সাধারণ মানুষ ও বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদেরকে। সম্প্রতি উচ্চ আদালতে ৫৪ ধারাবিষয়ক যে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে সেটিকেও উপেক্ষা করা হচ্ছে। এটি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর আদালতের প্রতি অবমাননা ও চরম ধৃষ্টতার শামিল।” বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এসব অভিযোগ করেছেন।
পুলিশ বলছে, গ্রেফতারি পরোয়ানা তামিল, নিয়মিত মামলা এবং অবৈধ অস্ত্র ও মাদক উদ্ধার মামলায় মোট ৩১৫৫ জন আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃত আসামিদের মধ্যে গ্রেফতারি পরোয়ানা মূলে ১৮৬১ জন, নিয়মিত মামলায় ৯১৭ জন, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার মামলায় ১৯ জন এবং মাদক উদ্ধার মামলায় ৩৫৮ জন। এছাড়া ৩৭ জঙ্গির মধ্যে ২৭ জন জেএমবি, ৭ জন জেএমজেবি এবং বাকি ৩ জন অন্যান্য জঙ্গি সংগঠনের সদস্য। শুক্রবার সকাল ৮টা থেকে শনিবার সকাল ৮টার মধ্যে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
পুলিশ সদর দপ্তর আরো জানায়, ঢাকা রেঞ্জের গাজীপুর জেলা ১ জন জেএমবি, ময়মনসিংহ রেঞ্জের ময়মনসিংহ জেলা ১ জন জেএমবি, শেরপুর জেলা ১ জন জেএমবি, রাজশাহী রেঞ্জের রাজশাহী জেলা ৭ জন জেএমবি, ২ জন জেএমবি, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা ৩ জন জেএমবি, সিরাজগঞ্জ জেলা ১ জন জেএমবি, বগুড়া জেলা ১১ জন জেএমবি, খুলনা রেঞ্জের নড়াইল জেলা ১ জন জেএমবি, রংপুর রেঞ্জের দিনাজপুর জেলা ২ জন জেএমবি, গাইবান্ধা জেলা ১ জন জেএমবি, কুড়িগ্রাম জেলা ২ জন জেএমবি, ডিএমপি, ঢাকা ৩ জন এবং আরএমপি, রাজশাহী ১ জন জেএমবি সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃত জঙ্গিদের কাছ থেকে ১টি শুটারগান, ১ রাউন্ড গুলি, ৫০০ গ্রাম গান পাউডার, ১৫টি ককটেল, ২১টি জেহাদী বই এবং ১৫টি ব্যক্তিগত ডায়েরি উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় ৭৫৭টি মোটর সাইকেল আটক করা হয়েছে।
এদিকে অভিযোগ ওঠেছে, জঙ্গি ও সন্ত্রাসী ধরার সাঁড়াশি অভিযানের ঘোষণার পর থেকেই মারমুখী হয়ে উঠেছে পুলিশ সদস্যরা। কিন্তু টার্গেট কিলিংয়ের সাথে জড়িত কেউ কি ধরা পড়েছে? এমন প্রশ্ন এখন বিশ্লেষকদের। তারা বলছেন, বিষয়টি বড়ই উদ্বেগজনক। গ্রেফতার বাণিজ্য ও রাজনৈতিক বিরোধীদের দমনের হাতিয়ার হিসেবে এ অভিযানকে ব্যবহার করা হচ্ছে।
গত রোববার চট্টগ্রামে খোদ একজন পুলিশ সুপারের স্ত্রী দিনে-দুপুরে একই কায়দায় খুন হবার পর সমালোচনা শুরু হয় দেশজুড়ে। এমন অবস্থায় বৃহস্পতিবার পুলিশ সদর দপ্তর ঘোষণা দেয় শুক্রবার থেকে জঙ্গি ও সন্ত্রাসীদের ধরতে ৭ দিনের সাঁড়াশি অভিযানের। সেই সাথে পুলিশ সুপারের স্ত্রীর হত্যার ঘটনা বর্বরোচিত ও খুনিদের কাপুরুষ হিসেবে বর্ণনা করা হয়। আইজিপির এ ঘোষণার পর থেকেই ব্যাপক অভিযানে নামে র্যাব-পুলিশ।
সংবিধান বিশেষজ্ঞ ড. শাহদীন মালিক বলেন, দেশ পরিচালনায় দিন দিন সরকারের ব্যর্থতা বাড়ছে। এভাবে চলতে থাকলে দেশে সহিংসতা আরো বাড়বে। ড. শাহদীন মালিক বলেন, দেশে গুম, খুন, অপহরণ, ক্রসফায়ার পুলিশের বল প্রয়োগ সব দিক থেকে বেড়েছে। গত সাতদিনে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে তথাকথিত বন্ধুকযুদ্ধে ১০ জন নিহত হয়েছে, যা গত ৩০ বছরে হয়নি।
পুলিশ বাহিনীর কড়া সমালোচনা করে ড. শাহদীন মালিক বলেন, পুলিশের প্রধান কাজ হলো জনগণের সেবা করা। কিন্তু তারা তা না করে সরকারের আনুগত হয়ে জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, পুলিশের ভাবমর্যাদা রক্ষায় বাহিনীকে আরো ঢেলে সাজানো দরকার। শুধু অর্থনৈতিক উন্নয়নে দেশের স্থিতিশীলতা রক্ষা করা সম্ভব নয়। তিনি চলমান সহিংসতায় উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, কয়েক দিন যাবৎ যেভাবে দেশে টার্গেট কিলিং হচ্ছে, তা বিশ্বের সকল গণমাধ্যমে ফলাও করে প্রচার করা হয়েছে। আর এ কারণে এসব বিষয় নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে উদ্বেগ বাড়ছে।
সরকার সাঁড়াশি অভিযানের নামে বিরোধী মতের নেতাকর্মীদের ঢালাওভাবে গণগ্রেফতার করছে বলে মন্তব্য করে ন্যাশনাল ল’ ইয়ার্স কাউন্সিল। এ অভিযানের বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে সংগঠনটি। ন্যাশনাল ল’ ইয়ার্স কাউন্সিলের ২০১ জন আইনজীবীর পক্ষে এ বিষয়ে গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে অ্যাডভোকেট এস.এম জুলফিকার আলী জুনু বলেন, শীর্ষ সন্ত্রাসী ও জঙ্গি দমনের নামে এ ধরনের অভিযান চালিয়ে বিরোধীদলের নেতাকর্মীদেরকে অন্যায়ভাবে হয়রানি করা হচ্ছে। এটি মানবাধিকারের চরম লংঘন বলেও মন্তব্য করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবীদের এ সংগঠনটি। বিবৃতিতে তিনি বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষদের গুপ্তহত্যায় জড়িতদেরকে গ্রেফতার করতে না পেরে পুলিশ এ ধরনের অভিযান চালাচ্ছে। গুপ্ত হত্যায় সরকারের ব্যর্থতা রয়েছে বলেও মনে করেন ন্যাশনাল ল’ ইয়ার্স কাউন্সিলের নেতারা।
চট্টগ্রামে আটক ৩৭৬
চট্টগ্রাম ব্যুরো জানায়, চট্টগ্রাম জেলা ও নগরীতে ‘জঙ্গিবিরোধী’ সাঁড়াশি অভিযানে ৩৭৬ জনকে আটক করেছে পুলিশ। আটককৃত ৩৭৬ জনের মধ্যে ৩৫ জন জামায়াত-শিবিরের কর্মী বলে পুলিশ জানিয়েছে। চট্টগ্রামের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জানান, জেলার ১৬ থানায় রাতভর অভিযান চালিয়ে ২৭৬ জনকে আটক করা হয়েছে। এদের মধ্যে ১৬ জন শিবির ও ১২ জন জামায়াতের কর্মী রয়েছে। একই অভিযানে ২টি রাইফেল, ২টি এলজি ও ৮ রাউন্ড কার্তুজ উদ্ধার করা হয়েছে।
সিএমপি সূত্রে জানা যায়, নগরীর ১৬ থানায় একযোগে অভিযান চালিয়ে ১শ’ জনকে আটক করা হয়েছে। এদের মধ্যে ২ জন জামায়াত এবং ৫ জন শিবিরের কর্মী রয়েছে।
নগরকান্দায় বিএনপির ৩ নেতা গ্রেফতার
ফরিদপুর জেলা সংবাদদাতা জানান, ফরিদপুরের নগরকান্দা থানা পুলিশ শুক্রবার সন্ধ্যায় বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের ৩ নেতাকে গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতারকৃতরা হলেন নগরকান্দা পৌর যুবদলের সভাপতি হেলালউদ্দীন হেলাল, নগরকান্দা উপজেলা শ্রমিকদলের সভাপতি মাসুদুর রহমান মাসুদ এবং নগরকান্দা উপজেলা বিএনপির সহ প্রচার সম্পাদক এস এম ওমর আলী।
সিলেটে ৪৩ জন গ্রেফতার
সিলেট অফিস জানায়, সিলেটে পুলিশের বিশেষ অভিযানে ৪৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর মধ্যে ১০ জন জামায়াত-শিবির কর্মী রয়েছেন। গত শুক্রবার দিবাগত রাত থেকে শনিবার ভোর পর্যন্ত সিলেট মহানগর ও জেলা পুলিশ অভিযান চালিয়ে এদেরকে গ্রেফতার করে।
সিলেট মহানগর পুলিশের আওতাধীন ৬ থানা পুলিশ ১৭ জনকে গ্রেফতার করে। এর মধ্যে কোতোয়ালী থানা ৫ জন, জালালাবাদ থানা ৪ জন, এয়ারপোর্ট থানা ৪ জন, দক্ষিণ সুরমা থানা ৩ জন এবং মোগলাবাজার ও শাহপরাণ থানা ১ জন করে গ্রেফতার করে। দক্ষিণ সুরমা থানায় গ্রেফতারকৃত ৩ জনের মধ্যে ২ শিবির কর্মী রয়েছেন।
যশোরে ১০১ জন আটক
যশোর ব্যুরো জানায়, পুলিশের বিশেষ অভিযানের দ্বিতীয় দিনে যশোরের ৮ থানা এলাকা থেকে মোট ১শ’ ১ জনকে আটক করা হয়েছে। এর মধ্যে জামায়াত-বিএনপির ২৩ নেতাকর্মী রয়েছেন। পুলিশ কন্ট্রোল রুম সূত্রে জানা গেছে, আটকৃতদের মধ্যে জাময়াতের ১৮ জন ও বিএনপির ৫ নেতাকর্মী রয়েছেন। তাদের বিরুদ্ধে নাশকতা সৃষ্টিসহ বিভিন্ন মামলা রয়েছে। অন্যরা বিভিন্ন মামলার আসামি।
রংপুরে ১২০ জন গ্রেফতার
রংপুর জেলা সংবাদদাতা জানান, দেশব্যাপি সন্ত্রাসবিরোধি অভিযানের অংশ হিসেবে রংপুরে পুলিশের বিশেষ অভিযানে ১শ’ ২০ জন গ্রেফতার হয়েছে। শুক্রবার দিবাগত রাত থেকে শনিবার সকাল পর্যন্ত পুলিশ রংপুরের ৮ উপজেলায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে হত্যা, ডাকাতি, ছিনতাই, নাশকতা মামলার চার্জসিটভুক্ত আসামিও রয়েছে। গ্রেফতারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আদালতের মাধ্যমে রংপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
বগুড়ায় ১১ জঙ্গিসহ ৯০জন গ্রেফতার
বগুড়া অফিস জানান, বগুড়ায় শুক্রবার রাতে পুলিশী অভিযানে ৯০জনকে গ্রেফতার করেছে। সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার গাজিউর রহমান (মিডিয়া) জানান, গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে বগুড়া সদর থানা পুলিশ ২৬ জন, শিবগঞ্জে ৭ জন, সোনাতালায় ৪ জন, গাবতলীতে ৫ জন, সারিয়াকান্দিতে ৪ জন, শেরপুরে ৮ জন, ধুনটে ২ জন, নন্দিগ্রামে ৭ জন, কাহালুতে ৭ জন, আদমদীঘিতে ৪জন, দুপচাঁচিয়ায় ৬ জন, শাজাহানপুরে ৭জন ও ডিবি পুলিশ ৩ জনকে গ্রেফতার করেছে।
সিরাজগঞ্জে আটক আরও ৩১
সিরাজগঞ্জ জেলা সংবাদদাতা জানান, দেশব্যাপী সাঁড়াশি অভিযানের অংশ হিসেবে সিরাজগঞ্জে আরও ৩১ বিএনপি-জামায়াত নেতাকর্মীসহ বিভিন্ন নিয়মিত মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামিকে আটক করেছে পুলিশ।
শুক্রবার রাত ৮টা থেকে শনিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে এদেরকে আটক করা হয়।
সাতক্ষীরায় আটক ৩৫ জন
সাতক্ষীরা জেলা সংবাদদাতা জানান, সন্ত্রাস ও জঙ্গি দমনের লক্ষ্যে সাতক্ষীরা জেলাব্যাপী পুলিশি অভিযানে ৩৫ জন আটক হয়েছে। শুক্রবার রাত থেকে শনিবার সকাল পর্যন্ত জেলার আটটি থানার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে এদেরকে আটক করা হয়।
আটককৃতদের মধ্যে সাতক্ষীরা থানা এলাকা থেকে ১০ জন, কলারোয়ায় ৩ জন, তালায় ২ জন, আশাশুনিতে ৪ জন, দেবহাটায় ২ জন, কালিগঞ্জে ৫ জন, শ্যামনগরে ৭ জন এবং পাটকেলঘাটা থানা এলাকা থেকে ২ জনকে আটক করা হয়েছে।
রাজশাহীতে আটক-২৬২
রাজশাহী ব্যুরো জানায়, জঙ্গি দমনে পুলিশের অভিযানের দ্বিতীয় দিনে রাজশাহীতে ২৬২ জনকে আটক করা হয়েছে। এর মধ্যে জেলা পুলিশ ২১৩ জন ও মহানগর পুলিশ ৪৯ জনকে আটক করেছে। শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে শনিবার ভোর ৬টা পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয় বলে পুলিশ জানিয়েছে। রাজশাহী জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল কালাম আজাদ বলেন, জেলার নয়টি থানাসহ গোয়েন্দা পুলিশ শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে শনিবার ভোর পর্যন্ত বিভিন্ন এলাকায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে ২১৩ জনকে আটক করে। এর মধ্যে কয়েকজন সন্দেহভাজন জেএমবি সদস্য রয়েছেন। তাদের বিষয়টি যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। যাচাই-বাছাইয়ের আগে তাদের নাম প্রকাশ করতে রাজি হননি এই পুলিশ কর্মকর্তা।
ঝিনাইদহে ৪৮ জন গ্রেফতার
ঝিনাইদহ জেলা সংবাদদাতা জানান, ঝিনাইদহ জেলার ৬ উপজেলা সাঁড়াশি অভিযানে জামায়াত-শিবিরের ১৫ নেতাকর্মীসহ বিভিন্ন মামলায় মোট ৪৮ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শুক্রবার মধ্যরাত থেকে শনিবার সকাল পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে এদের আটক করা হয়। আটককৃতদের মধ্যে সদর উপজেলায় ১২ জন, হরিণাকুন্ডু উপজেলায় ১১ জন, মহেশপুর উপজেলায় ৮ জন, কোটচাঁদপুর উপজেলায় ৭ জন, শৈলকুপায় উপজেলায় ৬ জন ও কালীগঞ্জ উপজেলায় ৪ জনকে আটক করা হয়েছে। আটকদের মধ্যে ঝিনাইদহ সদরের আব্দুল মমিন (২৮), সাইফুল ইসলাম (২৩) আশানুর রহমান (২২), আলমগীর হোসেন (২৫); কালিগঞ্জ উপজেলার তানভীর আহম্মেদ (২২), মকলেছুর রহমান (২৭) ও কোটচাঁদপুরের আমিরুল জোয়ার্দার (৫০) ও সোহেল রানার (২৫) নাম জানা গেছে।
নেত্রকোনায় আটক ১৫ জন
নেত্রকোনা জেলা সংবাদদাতা জানান, সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদ বিরোধী সাঁড়াশি অভিযানের ২য় দিনে নেত্রকোনা জেলা পুলিশ জেলার বিভিন্ন উপজেলায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে ১৫ জন জামায়াত-শিবির বিএনপি নেতাকর্মীকে আটক করেছে।
বই ও লিফলেটসহ তিন শিবিরকর্মী আটক
নোয়াখালী ব্যুরো জানায়, সোনাইমুড়ী থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে ইসলামী বই ও লিফলেটসহ তিন শিবির কর্মীকে আটক করেছে। শুক্রবার দিবাগত রাতে সোনাইমুড়ী বাজার থেকে তাদের আটক করা হয়। আটককৃতদের নাম পরিচয় জানা যায়নি। সোনাইমুড়ী থানার ওসি কাজী হানিফুল ইসলাম জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বাজারের একটি ওষুধ দোকানে অভিযান চালিয়ে ইসলামী জিহাদী বই ও দলীয় লিফলেটসহ ৩ শিবির কর্মীকে আটক করা হয়েছে।
হাটহাজারী থেকে ৭ জনকে গ্রেপ্তার
হাটহাজারী উপজেলা সংবাদদাতা জানান, পুলিশের ‘সাঁড়াশি অভিযান’ শুরুর পর গত ২৪ ঘণ্টায় হাটহাজারী উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে বিভিন্ন মামলার ৭ জন আসামি গ্রেপ্তার ও ফতেপুরের জোবরা থেকে একটি এলজিসহ ৮ লিটার মদ উদ্ধার করা হয়েছে।
শুক্রবার গভীর রাতে হাটহাজারীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করেন হাটহাজারী মডেল থানা পুলিশ। অভিযানে নেতৃত্ব দেন মডেল থানার ওসি মোঃ ইসমাইল, এসআই জিয়া ও এসআই মনজুরসহ পুলিশ অভিযান চালায়।
কাউখালীতে মাদ্রাসা সুপারসহ গ্রেফতার ৫
কাউখালী (পিরোজপুর) সংবাদদাতা জানান, পিরোজপুরের কাউখালী উপজেলার বিভিন্ন স্থানে বিশেষ অভিযানে গত দুইদিনে ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গত বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার শিয়ালকাঠি থেকে সাপলেজা জয়তুনিয়া মাদ্রাসার সুপার মাওলানা এবিএম রফিকুল ইসলাম জলিল, শিবির কর্মী আসাদুজ্জামান তুষারকে গ্রেফতার করে এবং গতকাল শুক্রবার রাতে শিয়ারকাঠীর জোলাগাতী থেকে শিবিরকর্মী আলআমিন (৩০), আশোয়া আমরাজুড়ী থেকে জামায়াত কর্মী মো: হেলাল উদ্দিন (৩২) এবং একই গ্রাম থেকে বিএনপি কর্মী মো: মাসুদ হোসেন (২৬) গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতারকৃতদের নিয়মিত মামলায় জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
পুঠিয়ায় ২ জেএমবিসহ আটক ১৬
পুঠিয়া (রাজশাহী) উপজেলা সংবাদদাতা : পুঠিয়ায় পুলিশের বিশেষ সাঁড়াশি অভিযানে ২ জন জেএমবি সদস্যসহ মোট ১৬ জনকে আটক করা হয়েছে। আটককৃত জেএমবি সদস্যরা হলেনÑ উপজেলার জাগিরপাড়া গ্রামের আইনাল হকের ছেলে সিরাজুল ইসলাম (৩৬) ও জামিরা এলাকার নূর হোসেন এর ছেলে মন্টু শেখ (৩৮)। পুঠিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি হাফিজুর রহমান জানান, শুক্রবার রাত থেকে শনিবার ভোর পর্যন্ত উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে জেএমবির ২ জন সদস্য এবং ৪ জন জামায়াত নেতাসহ মোট ১৬ জনকে আটক করা হয়েছে। সকালেই তাদের জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
নওগাঁয় ৮৪ জন গ্রেফতার
নওগাঁ জেলা সংবাদদাতা জানান, গত বৃহস্পতিবার মধ্য রাত থেকে জঙ্গি ও সন্ত্রাসী দমনে সারা দেশে শুরু হওয়া পুুলিশের ‘সাঁড়াশি অভিযানে’র ৩৬ ঘন্টায় (শনিবার দুপুর পর্যন্ত) নওগাঁয় ৮৪ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গতকাল শনিবার নওগাঁ পুলিশ সুপারের কার্যালয় থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে দাবি করা হয়, গ্রেফতার হওয়া সবাই উগ্রবাদী, সন্ত্রাসী ও জঙ্গি সংক্রান্ত মামলার আসামি।
না’গঞ্জ শহর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক হাসান গ্রেফতার
নারায়ণগঞ্জ থেকে স্টাফ রিপোর্টার জানান, শহর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক হাসান আহাম্মদকে গ্রেফতার করেছে সদর মডেল থানা পুলিশ। গতকাল শনিবার দুপুরে শহরের এক নং বাবুরাইল এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। এব্যাপারে সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল মালেক জানান, ওয়ারেন্ট নয়, গাড়ি ভাঙচুর নাশকতার মামলায় জড়িত থাকায় হাসান আহম্মেদকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।