Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

চব্বিশ ঘণ্টায় ভর্তি ১১৭৯ ডেঙ্গু রোগী

দু’জনের মৃত্যু

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৫ আগস্ট, ২০১৯, ১২:০১ এএম | আপডেট : ১২:১৩ এএম, ২৫ আগস্ট, ২০১৯

কিছুটা কমেছে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। শুক্রবার (২৩ আগস্ট) সকাল ৮টা থেকে শনিবার (২৪ আগস্ট) সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৬৪ জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে ১ হাজার ১৭৯ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী ভর্তি হয়েছেন। চলতি বছরে এ পর্যন্ত ৬২ হাজার ২১৭ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। এর মধ্যে ৫৫ হাজার ৯৩৮ জন রোগী সুস্থ হয়ে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন। বর্তমানে চিকিৎসাধীন ৬ হাজার ২৭৯ জন রোগী। গত শুক্রবার এই সংখ্যা ছিল ৬ হাজার ৩৫ জন। ডেঙ্গু রোগ নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের দৈনিক প্রতিবেদনে গতকাল শনিবার এ তথ্য জানানো হয়। রিপোর্টটিতে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে সর্বমোট মৃত্যুর সংখ্যা বলা হয়েছে ৪৭ জন। রোগতত্ত¡, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) ৮০ টি সম্ভাব্য মৃত্যু পর্যালোচনা করে এই ৪৭ জনের ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ার তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে গতকালও ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে দু’জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। হাসপাতালের উপ-পরিচালক চিকিৎসক লক্ষীনারায়ণ মজুমদার জানান, শনিবার ভোর ৬টার দিকে জারিফ হোসেন নামে এই শিশুর মৃত্যু হয়। অপরদিকে রাজধানী ঢাকার ইবনে সিনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন অজয় দাস (২৫) নামে এক তরুণ। গতকাল শনিবার ইবনে সিনা হাসপাতালের গ্রাহক সেবা বিভাগের কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

নিহত তরুণ চাঁদপুরের মতলব থানার সুজাতপুর গ্রামের গৌতম দাসের ছেলে। তিনি আশুলিয়া এলাকায় পরিবারের সঙ্গে থাকতেন। নিহতের বাবা বলেন, গত ২০ আগস্ট তার ছেলে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হলে প্রথমে সাভারের স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে সেখান থেকে ঢাকার শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে অবস্থার অবনতি হওয়ায় শুক্রবার দুপুরে ইবনে সিনা হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করা হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার সকালে মৃত্যু হয় তার।

দেশের বিভিন্ন স্থানে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে রোগীরা ভর্তি হয়েছেন হাসপাতালে। আমাদের সংবাদদাতাদের পাঠানো তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদন :
যশোর ব্যুরো জানায় : যশোর জেলায় প্রায় প্রতিদিনই কমবেশি ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হচ্ছে। গতকাল শনিবার নতুন করে আরো ২২জন আক্রান্ত হয়েছে। এ পর্যন্ত জেলায় এ নিয়ে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা দাঁড়ালো ৯শ’৪ জন।
হাসপাতালের সুপার ডা. আবুল কালাম আজাদ জানান, চিকিৎসায় কোন ত্রুটি হচ্ছে না। আমরা পর্যাপ্ত কিটস হাতে পেয়েছি। পরীক্ষা নিরীক্ষা করে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। মোট ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা বাড়লেও চিকিৎসা নিয়ে প্রতিদিনই হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরছেন রোগীরা। ছাড়পত্র নেয়া রোগির সংখ্যাও কম নয়। মোট আক্রান্তের মধ্যে শনিবার পর্যন্ত ২৫০ বেড হাসপতালে চিকিৎসাধীন রোগীর সংখ্যা ১শ’২৫, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৪১ ও অন্যান্যস্থানে ১৮জন সর্বমোট ১শ’৮৪জন।

পাবনা থেকে স্টাফ রির্পোটার জানায় : পাবনা জেনারেল হাসপাতালে গত ২৪ ঘন্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত ৯ জন নতুন রোগী ভর্তি হয়েছেন। চিকিৎসাধীন আছেন ২৫ জন, ১১ জনকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। গতকাল শনিবার বিকাল সোয়া ৫টায় পাবনা জেনারেল হাসপাতালের আর এম.ও ডা: আল আকসাদ মাসুর আনান এই তথ্য জানিয়েছেন। পাবনা সিভিল সার্জন ডা: মেহেদী ইকবাল এই তথ্য নিশ্চিত করে বলেছেন, পাবনায় ডেঙ্গু রোগ বর্তমানে স্থিতিশীল অবস্থায় রয়েছে।

মির্জাপুর (টাঙ্গাইল) উপজেলা সংবাদদাতা জানান: কুমুদিনী হাসপাতালে ২৯ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ভর্তি রয়েছে বলে জানা গেছে। এছাড়া গত ২৪ ঘন্টায় ৬ জন ডেঙ্গুআক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছে ও ৫ জন চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছে বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন।
সূত্র জানান, কুমুদিনী হাসপাতালে গত এক মাসে ২১৬ জন ডেঙ্গু আক্রান্তকে চিকিৎসা সেবা দেয়া হয়েছে। এদের মধ্যে উপজেলার খৈলসিন্দুর গ্রামের আরিফ হোসেন কাজল নামে এক কলেজ ছাত্র চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন।

কুমুদিনী হাসপাতালের পরিচালক ডা. প্রদীপ কুমার রায়, জানান, ডেঙ্গুর প্রার্দুভাব দেখার দেয়ার পর থেকে কুমুদিনী হাসপাতালে নারী পুরুষের জন্য পৃথক ওয়ার্ড খোলে চিকিৎসা সেবা দেয়া হচ্ছে। তবে অল্প কিছুদিনের মধ্যে ডেঙ্গুর প্রকোপ কমে আসবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

ঝিনাইদহ জেলা সংবাদদাতা জানান: ঝিনাইদহে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা দুই’শ ছাড়িয়েছে। শনিবার দুপুর পর্যন্ত নতুন রোগী ভর্তি হয়েছে ৩১ জন। ১২ জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। শনিবার বিকালে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের পরিসংখ্যানবিদ আব্দুল কাদের এই তথ্য জানান। তিনি বলেন ৪৯ দিনে সারা জেলায় দুই’শ রোগী আক্রান্ত হয়েছে। প্রতিদিন গড়ে ৪ জন করে রোগী ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হচ্ছেন। আক্রান্তদের মধ্যে শিশু, পুলিশ, প্রকৌশলী, ব্যাবসায়ী ও সদর হাসপাতালের স্বাস্থ্যকর্মীরাও রয়েছেন। হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, গত ৬ জুলাই ঝিনাইদহে জেলায় প্রথম ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়। তবে মৃত্যুর কোন রেকর্ড নেই। ১৫৭ জন রোগী সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন বলে জানান হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. অপুর্ব কুমার। এদিকে ডেঙ্গু প্রতিরোধ নিয়ে কিছুদিন প্রশাসন, পৌরসভাসহ বিভিন্ন সংস্থার দৌড়ঝাপ লক্ষ্য করা গেলেও এখন শহরে দৃশ্যত কোন কর্মসুচি নেই। মশক নিধনের জন্য কোন ওষুধও ছিটানো হচ্ছে না। ফলে জেলায় ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রনে আশার কোন আলো দেখতে পাচ্ছে না ভুক্তভোগীরা। প্রতিদিন ডেঙ্গু আক্রান্তর যে পরিসংখ্যান ছিল তা কমছে না।



 

Show all comments
  • Mohammed Kowaj Ali khan ২৬ আগস্ট, ২০১৯, ৩:৪৪ এএম says : 0
    একমাত্র পথ আর মত ইসলাম । সবাই চেহেল কাফ শিক্ষা করেন আর চেহেল কাফের মাধ্যমে তদবির করেন । ইনশাআল্লাহ। এই কঠিন রুগ হইতে মুক্ত থাকিতে পারিবেন। ইনশাআল্লাহ।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ডেঙ্গু

২৭ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ