পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সারাদেশে বিভিন্ন হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে গতকাল শুক্রবার ভর্তি হয়েছেন এক হাজার ৪৪৬ জন রোগী। এর মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় ঢাকা মহানগরীতে ৬৮৯ জন ও ঢাকার বাইরের হাসপাতালে ৭৫৭ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। এছাড়া চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ৬১ হাজারেরও বেশি রোগী ভর্তি হয়েছে দেশের বিভিন্ন হাতপাতালে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের অধীনে হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।
সংস্থাটির জরিপ বিশ্লেষণে আরও জানা যায়, বর্তমানে সারাদেশে হাসপাতালে মোট ৬ হাজার ৩৫ জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসাধীন আছেন। তাদের মধ্যে রাজধানীতে তিন হাজার ৪১১ জন এবং ঢাকার বাইরের দুই হাজার ৬২৪ জন রোগী ভর্তি রয়েছেন। ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে এখন পর্যন্ত বাড়ি ফিরেছেন ৫৪ হাজার ৯৫৬ জন। এর মধ্যে রাজধানীতে ৩২ হাজার ৯৭৯ জন এবং ঢাকার বাইরে ২১ হাজার ৯৭৭ জন।
সরকারি প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা ৪৭। যদিও বেসরকারি হিসেবে এই সংখ্যা দেড়শ ছাড়িয়েছে। ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে প্রতিদিনই বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। সবশেষ প্রাপ্ত রিপোর্ট অনুযায়ী গতকালও তিনজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
এদিকে স্বাস্থ্য অধিদফতরের ভাষ্য মতে, সরকারের রোগতত্ত¡, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটে (আইইডিসিআর) ডেঙ্গুতে ৮০ জনের মৃত্যুর তথ্য এসেছে। তবে তারা বলেছেন, পর্যালোচনা করে এ পর্যন্ত ৪৭ জন ডেঙ্গুতে মারা গেছেন। এখনও পর্যালোচনা চলমান রয়েছে। সব পর্যালোচনার পর দেশে ডেঙ্গুতে এ বছর কতজন মানুষ মারা গেছেন তার সঠিক পরিসংখ্যান জানা যাবে। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত রাজধানীসহ সারাদেশে সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত ভর্তি রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬১ হাজার ৩৮ জন। এর মধ্যে শুধুমাত্র চলতি আগস্ট মাসের ২৩ দিনেই ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ৪২ হাজার ৫৭৭ জন। গত জুলাই মাসে ১৬ হাজার ২৫৩ জন। তবে আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা কয়েকগুণ বেশি হবে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
চলতি বছর রাজধানীসহ সারাদেশের সরকারি, বেসরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত হাসপাতালে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা কমে আসছে। চলতি বছরের পহেলা জানুয়ারি থেকে গতকাল ২৩ আগস্ট পর্যন্ত মোট ৬১ হাজার ৩৮ জন ভর্তি হলেও বর্তমানে সারাদেশের হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন ৬ হাজার ৩৫ জন ডেঙ্গু রোগী। শতকরা হিসেবে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে যাওয়া রোগীর হার ৯০ শতাংশ।
গত ২৪ ঘন্টায় সারাদেশের হাসপাতালে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছেন মোট ১ হাজার ৪৪৬ জন। তাদের মধ্যে রাজধানী ঢাকার ৪১টি সরকারি, বেসরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত হাসপাতালে ৬৮৯ জন ও বিভাগীয় হাসপাতালে ৭৫৭ জন ভর্তি হয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছে সূত্র।
স্বাস্থ্য অধিদফতর জানায়, গত বুধবার রাজধানীতে ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন ৭১১ জন। তার বিপরীতে ছাড়প্রাপ্ত হয়েছেন ৭৬৪ জন। গত বৃহস্পতিবার ভর্তি হওয়া রোগীর সংখ্যা ৭৬১ জন হলেও ছাড়া পেয়েছেন ৭৮৯ জন রোগী। গতকাল শুক্রবার ভর্তি হওয়া ৬১০ জন রোগীর বিপরীতে ছাড়প্রাপ্ত রোগীর সংখ্যা ৬১০ জন। এই তিনদিনে ঢাকার বাইরে রোগী ভর্তির সংখ্যা যথাক্রমে ৯১৫, ৮৩৬ ও ৭৫৭ জন। একই সঙ্গে এই তিনদিনে ছাড়প্রাপ্ত রোগীর সংখ্যা এক হাজার ৫৪, ৯৩৯ ও ৯৪৮ জন।
ডেঙ্গু রোগ সম্পর্কে জনগনের সচেতনতা বৃদ্ধি, মশা নিধন কার্যক্রম ও চিকিৎসকদের আন্তরিকতার ফলে রোগীর সংখ্যা কমে এসেছে বলে মনে করেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ডেঙ্গু রোগ সম্পর্কে জনসচেতনতা আগের চেয়ে বহুলাংশে বেড়েছে। সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান সম্মিলিত প্রচেষ্টায় মশা নিধন কার্যক্রম পরিচালনার পাশাপাশি হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসক-নার্সসহ সংশ্লিষ্টদের আন্তরিক প্রচেষ্টার কারণে ডেঙ্গু রোগী সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরছেন। সার্বিকভাবে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা কমে এসেছে।
সাতক্ষীরা : সাতক্ষীরায় জাহানারা খাতুন (৩৭) নামের এক গৃহবধূ ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১ টার দিকে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতাল থেকে খুলনায় নেওয়ার পথে ডুমুরিয়া নামক এলাকায় তার মৃত্যু হয়। এনিয়ে গত ২৪ ঘন্টায় সাতক্ষীরায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে দুই জনের মৃত্যু হলো। জাহানারা খাতুন সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ছয়ঘরিয়া গ্রামের খলিলুর রহমানের স্ত্রী।
গতকাল সকালে সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন ডা. আবু শাহীন জানান, গত ১৮ আগস্ট ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে জাহানারা খাতুন ভর্তি হন। তার অবস্থার অবনতি হলে বৃহস্পতিবার রাত ১১ টার দিকে তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রিফার্ড করা হয়। খুলনায় নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়েছে।
এদিকে, গত বৃহস্পতিবার বিকালে সাড়ে ৫ টায় ডেঙ্গু আক্রন্ত সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার শ্রীকলস গ্রামের সিরাজুল ইসলামের মাদ্রাসা পড়–য়া ছেলে আলমগীর হোসেন গাজী (১৪) সাতক্ষীরা থেকে খুলনায় নিয়ে যাওয়ার পথে মারা যায়।
বড়াইগ্রাম (নাটোর) : নাটোরের বড়াইগ্রামে ডেঙ্গু জ¦রে আক্রান্ত হয়ে ফরিদা বেগম (৪৮) নামে এক গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার রাতে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। নিহত ফরিদা বেগম বড়াইগ্রাম পৌরসভার বড়াইগ্রাম মহল্লার মৃত মাঙ্গন খাঁ’র মেয়ে ও জোনাইল চড়ইকোল গ্রামের জালালউদ্দিনের স্ত্রী। স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর রফিকুল ইসলাম বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, গত শনিবার ফরিদা বেগম ডেঙ্গু জ¦রে আক্রান্ত হন। প্রথমে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দিয়েও অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় মঙ্গলবার তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে তিনি মারা যান।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।