Inqilab Logo

রোববার, ১৬ জুন ২০২৪, ০২ আষাঢ় ১৪৩১, ০৯ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

প্রধানমন্ত্রীর বিমান দেরিতে নামার ব্যাখা দাবি

প্রকাশের সময় : ১০ জুন, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বহনকারী বিমান শাহজালাল (র.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের রানওয়ের ক্লিয়ারেন্স না পাওয়ায় আকাশে চক্কর দেয়ার ঘটনায় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীকে সংসদে সুস্পষ্ট ব্যাখা দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য রুস্তম আলী ফরাজী।
বৃহস্পতিবার সকালে জাতীয় সংসদের একাদশতম অধিবেশনে পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে তিনি এই দাবি করেন। কিন্তু এসময় অধিবেশন কক্ষে উপস্থিত ছিলেন না বেসামারিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন। তবে উপস্থিত ছিলেন সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং বিরোধী দলীয় নেত্রী রওশন এরশাদ।
তার আগে গত মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাতে সাতটার সউদী আরব সফর শেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিমানের বিজি (০৩৬) ফ্লাইটে ঢাকার আকাশে পৌঁছেন। সেদিন শাহজালাল (র.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের রানওয়ের ক্লিয়ারেন্স না পাওয়ায় ৩১ মিনিট আকাশে চক্কর দিতে হয়েছিল প্রধানমন্ত্রীকে বহনকারী বিমানটিকে। কারণ নিয়ম অনুযায়ী এ ধরনের ফ্লাইট উড্ডয়ন-অবতরণের আগে এসএসএফ বিমানবন্দরের সার্বিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে থাকেন। রানওয়ে পর্যবেক্ষণ করতে গিয়ে এসএসএফ সদস্যরা দেখতে পান সেখানে বেশ কিছু মেটালিক বস্তু পড়ে আছে। এসব বস্তু দেখে তারা আঁতকে ওঠেন। পরে এসএসএফ সদস্যদের তত্ত্বাবধানে এসব মেটালিক বস্তু সরিয়ে নেয়ার পর ফ্লাইটটিকে অবতরণের সংকেত বার্তা পাঠান ককপিটে। তারপর রাত আটটার দিকে সেটা নিরাপদে অবতরণ করে বিমানটি।এমন খবরে প্রধানমন্ত্রীকে অভ্যর্থনা জানাতে বিমানবন্দরে হাজির হওয়া মন্ত্রী ও ভিআইপিরাও এ খবর জেনে আঁতকে ওঠেন।
সেই ঘটনার প্রেক্ষিতে রুস্তম আলী ফরাজী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সিকিউরিটি ফোর্স থাকে। তাদের এটা আগে দেখা উচিত ছিল। সিকিউরিটি ফোর্স থাকে তারা কি করে? বিমান কর্তৃপক্ষ কি করেছে? বিমান মন্ত্রী এখানে আছেন কি না, আমি জানি না। তাঁকে এ ব্যাপারে সুস্পষ্টভাবে বলতে হবে। এই ধরনের ঘটনা ঘটার পর কি ধরনের পরিবেশ তৈরি হয়েছিল? এটা তাঁকে বলতে হবে। আল্লাহ না করুক সেখানে তো একটা দুর্ঘটনা ঘটতে পারত। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ওমরাহ করে এসছেন। তাঁর উপর আল্লাহর রহমত আছে বলেই হয়ত কোন ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে নাই।
তিনি বলেন, আজকে এটা কার জন্য ঘটেছে? অন্য বিমানে যারা চড়বে তাদের জন্য কি হবে? সেখানে তো কোন ধরনের নিরাপত্তা থাকবে না।
আমাদের দেশে এই ধরনের অবস্থা কেন? বিদেশের কোন দেশে এই ধরনের একটি ঘটনা ঘটলে সাথে সাথে ২৪ ঘণ্টার ভিতর তা তদন্ত হয়ে রিপোর্ট হয়ে অ্যাকশন হত। কিন্তু আমাদের দেশে আজকে তিন দিন হয়ে গেল তার ব্যাপারে আমরা কিছু জানি না। আমরা জানতে চাই। এধরনের ঘটনা কেন ঘটেছে।
কারা সেখানে মেটাল রেখেছিল কি ধরনের বস্তু রেখেছিল এবং তার জন্য কারা দায়ী। দায়ীদের বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে এমন ঘটনা ঘটবে না, সে বিষয়ে আমরা মন্ত্রীর কাছে জানতে চাই।
রাজাকার-আলবদরদের ক্ষমতায়িত করেছিলেন জিয়া
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যার পর রাজনীতিতে সব চেয়ে বড় সুবিধাভোগী ছিলেন জিয়াউর রহমান। তিনি রাজনীতি কঠিন করে তুলেছিলেন। আর বহুদলীয় গণতন্ত্রের নামে রাজাকার আলবদরদের ক্ষমতায়িত করেছিলেন।  
বৃহস্পতিবার ২০১৬-১৭ অর্থ বছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য আমাতুল কিবরিয়া কেয়া চৌধুরী।
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের সমালোচনা করে কেয়া চৌধুরী বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর ৭৫ পরবর্তী সবচাইতে সুবিধাভোগী লোক ছিলেন জিয়াউর রহমান। তিনি নিজেকে প্রেসিডেন্ট ঘোষণা করে একটি অনুষ্ঠানে গিয়ে বললেন, আমি জিয়া বাংলাদেশে রাজনীতিবিদদের জন্য রাজনীতি কঠিন করে তুলবো। হ্যাঁ তিনি সফলভাবেই কাজটি করেছিলেন। ৭৫ পরবর্তী রাজনীবিদদের জন্য তিনি রাজনীতিকে কঠিন করেই তুলেছিলেন। তখন নীতিবান আর আদর্শ রাজনীতিবিদদের তিনি জেলে ঢুকিয়ে ছিলেন।
আর তিনি (জিয়া) যে রাজনীতিতে বিশ্বাস করতেন তা হলো অর্থ আর পেশীশক্তি। এগুলো দিয়েই তিনি ৭৫ পরবর্তী রাজনীতির বলয় তৈরি করেছিলেন। বহুদলীয় গণতন্ত্রের নামে রাজাকার আলবদরদের ক্ষমতায় নিয়ে এসেছিলেন। এই দুঃখ-বেদনা জাতি হিসেবে সারা জীবন আমাদের বহন করতে হবে। ওই সময় আওয়ামী লীগের যারা নিবেদিত প্রাণ ছিলেন তাদেরকে জেলহাজতে ঢুকিয়ে ছিলেন জিয়া। এরকম একটি দুর্দশাগ্রস্ত পরিবারের সন্তান আমি। আমার বাবাকে জেলহাজতে নেয়া হয়েছিল শুধুমাত্র বঙ্গবন্ধুর আদর্শে রাজনীতি করার জন্য। এখনো অনেক সদস্য গভীরভাবে প্রত্যক্ষ করেছেন সেই দুঃসময়ে কথা।
কেয়া চৌধুরী বলেন, উন্নয়নের মহাসড়কে দাঁড়িয়ে আমাদের চ্যালেঞ্জ রয়েছে। আমাদের চ্যালেঞ্জ বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে সমুন্নত রাখতে হবে। অতীতেও আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হয়েছে। এখন ষড়যন্ত্র হচ্ছে যারা বঙ্গবন্ধুর উত্তরসূরি বেঁচে আছেন, তাদের ওপর বিভিন্ন ধরনের প্রপাগান্ডা ছড়ানো হচ্ছে। বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্র ‘জয়’ এর বিরুদ্ধে বিএনপির মাধ্যমে সারা বিশ্বে মিথ্যা প্রপাগান্ডা প্রচার করারের চেষ্টা করেছিল, তা ব্যর্থ হয়েছে। কারণ মিথ্যা দিয়ে বেশি দূর যাওয়া যায় না।
নারী ও তরুণ উদ্যেক্তাদের জন্য পৃথক দু’টি ব্যাংক প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, বর্তমানে ৪৯ শতাংশ মানুষ ২৪ বছরের নিচে। তরুণ এবং নারী উদ্যেক্তাদের জন্য পৃথক ব্যাংক দরকরা এজন্য তিনি অর্থমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। একই সঙ্গে মোবাইল ফোন ব্যবহারের ওপর কর আরোপ পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানান।
আলোচনায় অংশ নিয়ে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট জিলুল হাকিম পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া রুটে দ্বিতীয় পদ্মা সেতুর করার আহ্বান জানান। একই সঙ্গে পদ্মার ভাঙন রোধে পানি সম্পদ মন্ত্রীর দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
গতকাল বাজেটের ওপর আরো আলোচনা করেন সোহরাব উদ্দিন, মীর মোশতাক আহমেদ রবি, ড. শামসুল হক ভূইয়া, মঞ্জুরুল ইসলাম লিটন, অ্যাডভোকেট সানজিদা খানম, উম্মে কুলসুম স্মৃতি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: প্রধানমন্ত্রীর বিমান দেরিতে নামার ব্যাখা দাবি
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ