Inqilab Logo

সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

বিশ্বব্যাংকের পূর্বাভাস জিডিপি প্রবৃদ্ধি হবে ৬.৩

প্রকাশের সময় : ১০ জুন, ২০১৬, ১২:০০ এএম

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ঃ চলতি অর্থবছর শেষে বাংলাদেশের মোট দেশজ আয়ের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি দাঁড়াবে ৬ দশমিক ৩ শতাংশে। যদিও সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, চলতি বছরে ৭ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন সম্ভব হবে। গতকাল বুধবার বিশ্বব্যাংকের সদর দফতর ওয়াশিংটন থেকে সর্বশেষ প্রকাশিত বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সম্ভাবনা প্রতিবেদনে এসব বিষয় উঠে এসেছে। এতে বিশ্বব্যাপী জিডিপি প্রবৃদ্ধি কমে আসবে বলেও আশঙ্কা করা হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জিডিপি নিয়ে সরকারের ঘোষণাকৃত প্রবৃদ্ধির সঙ্গে বাস্তবতার সঙ্গে মিল নেই। যে কয়টি সূচক দিয়ে জিডিপি প্রবৃদ্ধি হিসাব করা হয়, তার বেশিরভাগই নেতিবাচক।
এ অবস্থায় সরকারের ঘোষণার বাস্তবতা নিয়ে প্রশ্ন তোলাটা অমূলক নয়।
বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি অর্থবছর ৬ দশমিক ৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হলেও আগামী অর্থবছর তা বেড়ে দাঁড়াবে ৬ দশমিক ৮ শতাংশে। অবশ্য জাতীয় সংসদে উপস্থাপিত বাজেট প্রস্তাবে আগামী অর্থবছর ৭ দশমিক ২ শতাংশ  প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ঘোষণা করেছেন অর্থমন্ত্রী। ২০১৭-১৮ অর্থবছর প্রবৃদ্ধির হার আবার ছয় শতাংশে নেমে আসবে বলেও প্রতিবেদনে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে বিশ্বব্যাংক। চলতি বছর বিশ্বব্যাপী উৎপাদন প্রত্যাশার চাইতে কমে আসবে বলে আশঙ্কা করা হয়েছে প্রতিবেদনে। এতে বলা হয়েছে, এবার বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধি হতে পারে ২ দশমিক ৪ শতাংশ। এর আগে ২ দশমিক ৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হবে বলে বছরের শুরুর দিকে ধারণা দিয়েছিল সংস্থাটি। এর কারণ হিসেবে উন্নত দেশগুলোর অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে ধীরগতিকে দায়ী করা হয়েছে প্রতিবেদনে।
এতে বলা হয়েছে, বিশ্বব্যাপী দ্রব্যমূল্য কমে আসছে। বিশ্ববাণিজ্যের পরিধিও কমছে। কমে আসছে মূলধনের গতিশীলতাও। এছাড়া চীনের প্রবৃদ্ধি চলতি বছর ৬ দশমিক ৭ শতাংশে নেমে আসবে। বছরের শুরুতে চীনে ৬ দশমিক ৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধির ধারণা দেয়া হয়েছিল। তবে ভারতের প্রবৃদ্ধি ৭ দশমিক ৬ শতাংশে উন্নীত হতে পারে। ব্রাজিল ও রাশিয়ার অর্থনীতির মন্দাভাব আরো ত্বরান্বিত হতে পারে বলে আশঙ্কা বিশ্বব্যাংকের।
বড় উদীয়মান বাজারগুলো বন্ধ হয়ে গেলে বিশ্বঅর্থনীতি বড় ধরনের বিপর্যয়ে পড়বে বলেও প্রতিবেদনে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ায় চলতি বছর ৭ দশমিক ১ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হতে পারে বলে মনে করে বিশ্বব্যাংক। ২০১৮ সালের মধ্যে এ প্রবৃদ্ধির হার বেড়ে দাঁড়াবে ৭ দশমিক ৩ শতাংশে। মূলত বড় অর্থনীতির দেশ ভারতে বড় প্রবৃদ্ধির সুবাদে বাড়বে এ এলাকার গড় প্রবৃদ্ধি। বিশ্বব্যাপী ধারণার চেয়ে অর্থনৈতিক মন্দা বেশি হওয়ায় এ অঞ্চলের রফতানিতে মন্দা বিরাজ করবে। তবে অভ্যন্তরীণ চাহিদায় প্রবৃদ্ধি অর্থনীতির গতি ধরে রাখবে।
বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দেখা যায়, দক্ষিণ এশিয়ায় বড় প্রবৃদ্ধির বিবেচনায় ভারতের পরেই রয়েছে ভূটানের অবস্থান। চলতি অর্থবছর দেশটির প্রবৃদ্ধি ৬ দশমিক ৮ শতাংশে দাঁড়াতে পারে। এর বাইরে পাকিস্তানে ৪ দশমিক ৫ শতাংশ ও নেপালে মাত্র শূন্য দশমিক ৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হবে বলে মনে করে সংস্থাটি।
উল্লেখ্য, চলতি অর্থবছর জিডিপিতে ৭ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হবে বলে প্রাথমিক ধারণা দিয়েছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)। সম্প্রতি বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ কার্যালয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রবৃদ্ধির সম্ভাব্য এ হার নিয়ে সংশয় প্রকাশ করা হয়। সংস্থার পক্ষ থেকে বলা হয়, এ বছর শুধু রফতানি ও ব্যক্তিখাতে ঋণপ্রবাহ বৃদ্ধি ছাড়া অন্য কোনো সূচকেই গত অর্থবছরের চেয়ে প্রবৃদ্ধি বাড়েনি। তবে যে সংখ্যাই হোক না কেন এ প্রবৃদ্ধি পৃথিবীর অন্যতম সেরা প্রবৃদ্ধির একটি বলা যায়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বিশ্বব্যাংকের পূর্বাভাস জিডিপি প্রবৃদ্ধি হবে ৬.৩
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ