পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা আড়াই হাজার। এ পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ছয়। কিন্তু চিকিৎসক সঙ্কটে উদ্ভূত পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে হাসপাতালগুলোকে। শুধু ডেঙ্গু নয় চিকিৎসক সঙ্কটে ব্যাহত হচ্ছে সব ধরনের চিকিৎসা সেবা। চরম দুর্ভোগে পড়েছেন চিকিৎসা প্রত্যাশীরা। প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম মঞ্জুরিকৃত পদেরও ৬৪ শতাংশ চিকিৎসকের পদ শূন্য থাকায় এ অঞ্চলে সরকারি চিকিৎসা সেবা মুখ থুবড়ে পড়ছে। এমন চিত্র জেলা সদর থেকে উপজেলা পর্যন্ত।
জানা গেছে, সঙ্কটের কারণে সিভিল সার্জন থেকে শুরু করে উপজেলা চিকিৎসকদের পক্ষে সাধারণ রোগীদের সেবা দেয়া দুরূহ হয়ে পড়েছে। সেখানে মড়ার ওপর খাড়ার ঘা হয়ে দাঁড়িয়েছে ডেঙ্গু রোগী। যা ইতোমধ্যে চিকিৎসা সেবায় মারাত্মক সঙ্কট সৃষ্টি করেছে।
সূত্র মতে, বরিশাল বিভাগের ৬টি জেলা ও ৪২টি উপজেলায় চিকিৎসকের মঞ্জুরিকৃত পদ ১ হাজার ১৩১টি হলেও কর্মরত আছেন ৪১১জন। যা শতকরা হিসেবে মাত্র ৩৬। দীর্ঘদিন ধরে এ পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলেও তা থেকে উত্তরণে কার্যকর কোন সরকারি উদ্যোগ নেই। প্রতিটি বিসিএস-এর পরে বেশ কিছু চিকিৎসককে বরিশাল বিভাগে নিয়োগ দেয়া হলেও খুব অল্প সময়ের মধ্যে বেশিরভাগই নানা ফন্দি ফিকির করে ঢাকা ও এর আসেপাশের এলাকায় বদলি হয়ে যাচ্ছে। এমনকি সদ্য নিয়োগ দেয়া অনেক চিকিৎসককে প্রেষণে বা ওএসডি করেও ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক তদবিরের প্রভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত চিকিৎসকদের একটি বড় অংশই ঢাকা ও এর আসেপাশের চলে যাচ্ছে।
এদিকে পটুয়াখালী, ভোলা, পিরোজপুর, বরগুনা ও ঝালকাঠি জেলা সদরের হাসপাতালগুলো ১শ’ থেকে ২৫০ শয্যায় উন্নীতকরণের সরকারি ঘোষণা দেয়া হয়েছে। সেই লক্ষ্যে অবকাঠামোও নির্মাণ করা হয়েছে। কিন্তু চিকিৎসকসহ প্রয়োজনীয় জনবল মঞ্জুরি হচ্ছে না। ফলে এসব হাসপাতাল চলছে পূর্বের মঞ্জুরিকৃত জনবলের অর্ধেক চিকিৎসক দিয়ে। হাসপাতালগুলোর শয্যা বৃদ্ধির পরেও পুরনো জনবল মঞ্জুরিরও প্রায় ৬৫ শতাংশ শূন্য।
সবচেয়ে ভয়াবহ পরিস্থিতি বরগুনা জেলায়। এ জেলা সদরসহ ৫টি উপজেলায় মঞ্জুরিকৃত ১৬৫টি চিকিৎসক পদে কর্মরত আছেন মাত্র ৪১জন। ৭৬ শতাংশ পদ শূন্য। যা সম্ভবত সারা দেশের সর্বনিম্ন। বরগুনায় ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যাও অনেক। ইতোমধ্যে দুজনের মৃত্যুও হয়েছে। এ জেলা সদর থেকে বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের দূরত্ব ১শ’ কিলোমিটার। চিকিৎসক সঙ্কটে অবহেলিত এ জেলায় সরকারি চিকিৎসা সেবা বলতে এখন আর তেমন কিছু অবশিষ্ট নেই।
এছাড়া পটুয়াখালী সদরসহ ৭টি উপজেলা হাসপাতালে ২২৩ পদের বিপরীতে চিকিৎসক আছেন ৮৪ জন। শূন্য পদ ৬৩ শতাংশ। জেলা সদরের বাইরে ৬টি উপজেলা হাসপাতালেরও করূণ দশা। কুয়াকাটায় মাত্র দুজন চিকিৎসক আছেন। দ্বীপজেলা ভোলায় ২০৯ পদের বিপরীতে কর্মরত আছেন মাত্র ৭২ জন চিকিৎসক। জেলায় শূন্য ৬৬ শতাংশ পদ।
পিরোজপুর জেলার ১৭২টি চিকিৎসক পদের মধ্যে কর্মরত আছেন মাত্র ৬১ জন। জেলায় ৬৫শতাংশ পদ শূন্য। ঝালকাঠি জেলা সদরসহ ৪টি উপজেলায় চিকিৎসকের মঞ্জুরিকৃত পদের সংখ্যা ১০৪ হলেও কর্মরত আছেন মাত্র ৪০ জন। এ জেলায়ও ৬২ শতাংশ চিকিৎসকের পদ শূন্য। শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল বাদে বরিশালে জেলা সদরের জেনারেল হাসপাতাল এবং ১০টি উপজেলায় চিকিৎসকের পদের সংখ্যা ২৫৮ হলেও কর্মরত আছেন মাত্র ১১৩ জন। বিভাগীয় সদরের এ জেলায় ৫৭ শতাংশ পদে ডাক্তার নেই। সদর হাসপাতালের ৩২টি চিকিৎসক পদের বিপরীতে কর্মরত আছেন ২৫জন। এছাড়া বরিশালের চাখার, ঝালকাঠির কির্তিপাশা ও ভোলার চরআইচা হাসপাতালগুলোও চলছে ২৫ থেকে ৩০শতাংশ চিকিৎসক দিয়ে।
অপরদিকে, ৬টি জেলার ৪২টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতেও একই অবস্থা। উপজেলা পর্যায়ের ৩১ শয্যার হেলথ কমপ্লেক্সগুলো ৫০ শয্যার হাসপাতালে উন্নীত করার ঘোষণা দেয়া হলেও জনবল মঞ্জুরি রয়েছে পুরনো হিসেবে। কোথাও মঞ্জুরিকৃত পদেরও অর্ধেকের বেশি শূন্য। কোনো কোনো উপজেলায় ১০ জনের স্থলে মাত্র দুজন ডাক্তার কর্মরত আছেন।
অবহেলিত দক্ষিণের জনপদে সরকারি চিকিৎসা পরিসেবা ক্রমশ জনগনের অধরা হয়ে উঠছে বলে অভিযোগ করেছেন সাধারণ মানুষ। তবে বরিশালে বিভাগীয় স্বাস্থ্য প্রশাসনের দায়িত্বশীল সূত্র থেকে ‘চিকিৎসক সঙ্কটের বিষয়টি উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে নিয়মিতভাবে অবহিত করার কথা জানানো হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।